"আমার বাংলা ব্লগ" প্রতিযোগিতা - ৪৩ || আমার প্রথম অনলাইন ইনকামের অভিজ্ঞতা।
হ্যালো বন্ধুরা,
আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। প্রতিদিনের মত আজকেও আপনাদের সামনে এসে হাজির হলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আজকে আপনাদের সাথে নিজের অনলাইনের প্রথম ইনকাম নিয়ে লিখব। আসলে আমাদের সবারই কিন্তু এই বিষয়টা নিয়ে কিছু না কিছু রয়েছে। সেটা কিন্তু আমাদের সবারই পড়তে ইচ্ছে করে। তাই জন্য এবারের প্রতিযোগিতার বিষয়টা দেখে আমার কাছে ভালো লেগেছে। তাছাড়া সবাই দেখলাম তাদের সম্পর্কে পোস্ট করল। সবার প্রথম ইনকাম গুলো জানতে পেরে সত্যি খুবই ভালো লেগেছে। তাই বসে পড়লাম নিজের সম্পর্কে কিছু কথা আপনাদেরকে জানাতে।
সত্যি বলতে আমি সব সময় নিজের কিছু না কিছু করতে পছন্দ করতাম। বিয়ের আগে বাবা মায়ের থেকে নিয়ে চলা এবং বিয়ের পরে হাজব্যান্ড থেকে নিয়ে চলা এই বিষয়টা আমার কাছে খুব একটা ভালো লাগে না। আমি আসলে বিয়ের আগেই নিজের খরচের জন্য কিছু না কিছু করতে পছন্দ করতাম। আসলে এমন নয় যে আমার বাবা-মায়ের সামর্থ্য নেই আমাকে চালানোর। কিন্তু তারপরেও কাজ করতে খুবই পছন্দ করি। সেক্ষেত্রে আমি বাড়িতে বসে কিছু হাতের কাজ করতাম। আবার তখন কিছু টিউশনিও করতাম।
তখনও কিন্তু আমি ঘরে বসে বলতে গেলে ইনকাম করতাম। সেগুলো কিন্তু অনলাইন ভিত্তিক ছিল না। কিন্তু প্রথম প্রথম অনেক বেশি শুনতাম অনেকেই অনলাইনে ইনকাম করে। আবার অনেক সময় এটাও শুনতাম অনলাইন ইনকাম গুলো সব ভুয়া। আসলে নিজের হাতে কখনো দেখিনি কিংবা নিজের চোখের সামনেও দেখিনি। তবে আমারও ইচ্ছে করত অনলাইনে ইনকাম করার। আমি আমার বিয়ের পরেও নিজের কিছু কাজ করা চালিয়ে গেলাম। পরবর্তীতে আমার হাজব্যান্ড, তার ব্যবসা ছিল। কিন্তু করানোর সময় বন্ধ থাকতে থাকতে একেবারে বন্ধ হওয়ার অবস্থা হয়ে গেল।
তখন আমাদের পরিবারে অনেক বেশি দখল যাচ্ছিল। তখন কিন্তু আমাদের প্রিয় নিভলু ভাইয়া ওমানে ছিল। সে সময় উনার সাথে আমার হাজবেন্ডের প্রতিনিয়তই যোগাযোগ হতো। আমি শুনেছি ভাইয়া নাকি ওনাকে একটা প্ল্যাটফর্মে কাজ করার জন্য বলেছিল। যেখানে ফটোগ্রাফি শেয়ার করা যায়। আসলে আগে থেকেই আমার হাজবেন্ডের ফটোগ্রাফি করার প্রতি একটা দুর্বলতা ছিল। ভাইয়াকেও অনেক ফটোগ্রাফি পাঠাতো, যখন নিজের ফটোগ্রাফি করতো। কিন্তু ও আসলে তখনও বিষয়টার প্রতি মনোযোগ দেয়নি। যখন নিভলু ভাইয়া বাড়িতে আসলো, তখন ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাস।
আমার মেয়ের ১৭ দিন বয়সে ভাইয়া বাড়িতে এসেছিল। এরপর কিছুদিন ভাইয়ার সাথে চলাফেরা করতে করতে আবারো, ভাইয়া আমার হাজব্যান্ডকে এই প্ল্যাটফর্ম সম্পর্কে সবকিছু দেখায়, আর তখন একটা অ্যাকাউন্ট ক্রিয়েট করে দেয়। আর ভাইয়া ওকে যেটা দেখায়, আমাকে এসে সবকিছু দেখায়। তখন ও মোটামুটি কিছুদিন কাজ করতে শুরু করেছে। ওর কাছ থেকে আমার নিজেরও খুবই আগ্রহ জেগেছে কাজ করার জন্য। পরবর্তীতে ২০২১ সালের শুরুর দিকে আমিও নিজের একটা একাউন্ট খুলি। তখন আমি নিউকামার্স কমিউনিটিতে নিজের একটা পরিচিতি পোস্ট করি।
পরবর্তীতে দেখলাম সেখানে আমার চার ডলারের একটা ভোট আসে। এটা দেখে আমি অনেক বেশি খুশি হয়েছিলাম। সত্যি বলতে প্রথম পোস্টে ভোট পাওয়া এটা অনেক বেশি আনন্দের। আসলে আমরা কিন্তু অনেক সহজেই ভোট পেয়ে গেছিলাম। শুনেছি নিভলু ভাইয়া প্রথম থেকে অনেক বেশি কষ্ট করেছে। আসলে তখন তো ওনাকে দেখিয়ে দেওয়ার মত কেউ ছিল না। পরবর্তীতে এই ভাবেই আমি বিভিন্ন কমিউনিটিতে কাজ করতে শুরু করি। আসলে আমি কয়েকদিন টাকা উঠানোর কথা চিন্তা করিনি। এরপর আমার একটা প্রয়োজন সামনে চলে আসলো।
আসলে যখন আমাদের বাবু থাকে, তার জন্য কিন্তু আমাদের অনেক কিছুই প্রয়োজন পড়ে। তেমনি তখন অনেক গরম পড়ছিল আর তার সাথে সাথে লোডশেডিং। তাই জন্য আমি ভাবলাম এখান থেকে টাকা তুলে, আমার মেয়ের জন্য একটা চার্জার ফ্যান কিনব। এরপর আমি কিছুদিন কাজ করার পর একদিন নিভলু, ভাইয়ার মাধ্যমে ৪০০০ টাকা উঠালাম। আসলে প্রথম প্রথম আমরা কিন্তু স্টিম উঠানোর কথা চিন্তা করিনি, তখন মূলত আমরা এসবিডি বিক্রি করেছিলাম। আমি যখন বিক্রি করেছিলাম তখন এস বি ডি এর মূল্য বাংলাদেশি টাকায় ৬০০+ ছিল। আমি কিন্তু আমার সঠিক মূল্যটাই পেয়েছিলাম।
আসলে ভাইয়া কিন্তু আমাদের কাছ থেকে কোন কিছুই লুকায় নাই। আর অন্যদের মতো আমি কিন্তু ঠকার মত কোন অবস্থায় পড়িনি। কারণ অনেকেরই পোস্ট পড়ে জানতে পেরেছিলাম তারা সঠিক মূল্যের তুলনায় অনেক কম টাকা পেয়েছে। আমি বলব আমাদের সাথে নিভলু ভাইয়ার মত একজন সঠিক মানুষ ছিল বলেই, আমরা এত সুন্দর একটা প্লাটফর্ম পেয়েছি। এজন্য তার প্রতি অনেক বেশি কৃতজ্ঞ থাকবো সারা জীবন। আসলে আমি আমার প্রথম ইনকাম দিয়ে নিজের মেয়ের জন্য একটা চার্জার ফ্যান কিনেছিলাম। ফ্যানটা অবশ্য এখনো আছে। আর প্রথম টাকাটা উত্তোলন করে অনেক বেশি আনন্দ পেয়েছিলাম। এটাই ছিল মূলত আমার অনলাইনের প্রথম ইনকাম। আর এখনো পর্যন্ত এই প্লাটফর্মে অনেক সুন্দর ভাবে কাজ করে যাচ্ছি এমনকি প্রতিনিয়ত ইনকাম করে যাচ্ছি। আজকে এ পর্যন্তই। পরবর্তীতে আবার ও আসবো নতুন কিছু নিয়ে। এ পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন।
আমার পরিচয়
আমার নাম তাসলিমা আক্তার সনিয়া। আমি বাংলাদেশী। বাংলা ভাষা আমাদের মাতৃভাষা বলে আমি অনেক গর্বিত। আমি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অনার্স ফাইনাল ইয়ারের একজন ছাত্রী। আমি ছবি আঁকতে ভালোবাসি। বিশেষ করে যে কোন ধরনের পেইন্টিং করতে পছন্দ করি। যখনই অবসর সময় পায় আমি ছবি আঁকতে বসে পড়ি। এছাড়াও আমি ভ্রমণ করতে পছন্দ করি। কিছুদিন পর পর বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করার চেষ্টা করি। এছাড়াও আমি বিভিন্ন ধরনের কারুকাজ করতে পছন্দ করি। রান্না করতেও আমার খুব ভালো লাগে। আমি বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করতে পছন্দ করি। আমি যখনই সময় পাই আমার পরিবারের সবাইকে বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করে খাওয়াই। আমি সব সময় নতুন নতুন কিছু করার চেষ্টা করি।
🎀 ধন্যবাদ সবাইকে 🎀 |
---|
তাহলে নিভলু ভাইয়ের মাধ্যমে আপনি প্রথম অনলাইনে ইনকাম সম্পর্কে অবগত হয়েছিলেন আর প্রথম ইনকামের টাকা দিয়ে আপনার বাবুর জন্য ফ্যান কিনেছিলেন। বেশ ভালো লাগলো, এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে আপনার অনলাইন ইনকামের গল্পটি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপু।
হ্যাঁ ওনার মাধ্যমে সব হয়েছিল।
https://twitter.com/TASonya5/status/1698889945581314071?s=20
স্বনির্ভরশীল হলে ব্যক্তিগত স্বাধীনতা থাকে।
কিছু টাকার জন্য বা কোন জিনিসের জন্য অন্যের দিকে তাকিয়ে থাকা আসলে কেমন হয়ে যায়।
নিবে টাকা উপার্জন করে নিজের প্রয়োজন মেটানোর মধ্যে অনেক ভালোলাগা কাজ করে।
আপনার প্রথম ইনকাম এর টাকার গল্প করে খুবই ভালো লাগলো।
হ্যাঁ সত্যি অনেক ভালো লাগা কাজ করে।
আপনার প্রথম অনলাইন ইনকামের কথাগুলো শুনে ভীষণ ভালো লাগলো। আপনার ভেতরে কিছু করার মন মানসিকতা থেকেই আপনি কাজ শিখেছেন এবং এগিয়ে গিয়েছেন। যে মানুষটি বিপদের সময় এগিয়ে আসে সেই প্রকৃত বন্ধু, যাইহোক নিভলু ভাই আপনাদের সঠিক প্লাটফর্মে এনেছেন এবং এগিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছেন। আপনার উপার্জন দিয়ে সন্তানের জন্য চার্জার ফ্যান কিনতে পেরেছেন এর থেকে বড় আনন্দ আর কি আছে বলুন।
আসলেই এর থেকে বড় আনন্দ আর কিছুতেই নেই।
আপনার এই পোস্টের মাধ্যমে আপনার প্রথম অনলাইন ইনকামের সাথে স্টিমিট জার্নির শুরুটাও জেনে ভালো লাগলো। নেভলু ভাই সম্পর্কে অনেকের থেকেই খুব ভালো ভালো কথা শুনেছি। উনি ভীষণ পরোপকারী মানুষ। এমন একজন অভিজ্ঞ মানুষের গাইডলাইন পেয়ে ঠকতে হয় নি। আর প্রথম অনলাইন ইনকাম দিয়ে কেনা চার্জার ফ্যানটি এখনো চলছে জেনে আরোও ভালো লাগলো। আপনার জন্য শুভকামনা।
আসলে তিনি সত্যি একজন পরোপকারী মানুষ।
আপু এর আগেও আপনার এবং ভাইয়ার অনেক পোস্টে আপনাদের এই প্লাটফর্মে আসার ঘটনা জেনেছিলাম। আসলে সমাজে নিভলু ভাইয়াদের মত মানুষ আছেই বলে সমাজটি এখনও টিকে আছে। বেশ খুশি হলাম যে আপনি আপনার প্রথম ইনকামের টাকা দিয়ে বাবুর জন্য একটি চার্জার ফ্যান কিনেছেন। শুভ কামনা রইল আপনার প্রতি।
আমি মনে করি এরকম মানুষ গুলো সব সময় সব জায়গায় থাকা উচিত। ধন্যবাদ আপু।
প্রথমে আপনাকে ধন্যবাদ জানাই এই কনটেস্টে অংশগ্রহণ করার জন্য। আসলে আপু অনেকে অনেক জায়গায় কাজ করেছে এবং বেশিরভাগ মানুষ ঠকেছে। কিন্তু এই প্লাটফর্মে এসে সবাই সঠিকভাবে কাজ করেছে এবং তার পারিশ্রমিকও পেয়েছে। আর আমি সব থেকে বেশি ধন্যবাদ জানাই নিভলু ভাইকে। তিনি অত্যন্ত সৎ এবং ভালো মানুষ। ধন্যবাদ আপু আপনার ইনকামের অভিজ্ঞতা আমাদের মাঝে মাঝে শেয়ার করার জন্য
সত্যি বলেছেন তিনি অত্যন্ত সৎ এবং ভালো মানুষ।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপু নিভলু ভাই মানুষটা সত্যিই খুব উদার প্রকৃতির। তা আপনাদের অনেকের পোস্ট পড়েই জেনেছি। তার মত এমন সহানুভূতিশীল ব্যবহার অনেকের মাঝেই থাকে না। তবে আপু এটা কোথাও ঠিক আপনার মাঝেও কাজের স্পৃহা ছিল অনেক বেশি। যার কারনে আপনি অনলাইন জগতে এসে কাজ করতে সক্ষম হয়েছেন। যাইহোক আপু, আপনি ও রকি ভাই দুজনে মিলে খুব স্বাচ্ছন্দে আমার বাংলা ব্লগে প্রতিনিয়ত কাজ করে চলেছেন এটা দেখে আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। আর আপনার প্রথম অনলাইন ইনকামের টাকা দিয়ে আপনার বাবুকে একটি ফ্যানও কিনে দিয়েছেন জেনে ভালো লাগলো। অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু, আপনার প্রথম অনলাইন ইনকামের অভিজ্ঞতাটুকু আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আমার সম্পূর্ণ পোস্ট পড়ে সুন্দর একটা মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
আপু আপনার প্রথম অনলাইনে ইনকামের কথা শুনে অনেক ভালো লাগলো। মানুষের মধ্যে ইচ্ছা থাকলে মানুষ জীবনে অনেক কিছুই করতে পারে। একটা কথা আজকেও প্রমাণিত হলো বিপদের বন্ধু প্রকৃত বন্ধু। সুন্দর একটি অভিজ্ঞতা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
আমার অনলাইন ইনকামের কথা আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম।