জীবনের প্রথম মোবাইল ফোন হাতে পাওয়ার অনুভূতিঃ
Copyright free image source:Pixabay
২০০৫ সাল অক্টোবর মাসে আমি প্রথম চাকুরী নিয়ে চট্টগ্রামে যাই। তো ২০০৫ সালে কিন্তু আমাদের দেশে ঐ ভাবে মোবাইলের ব্যবহার খুব একটা প্রচলন ছিলো না।
তো আমার নিজের মোবাইল না থাকার কারণে আমার বাড়িতে কথা বলতে অনেক সমস্যা হচ্ছিল। এদিকে বাড়িতেও কোন মোবাইল ছিল না যার কারণে পাশের বাড়িতে গিয়ে অনেক খোঁজাখুঁজি করে মোবাইলে কথা বলতে হতো। আমি চিন্তা করতেছিলাম যে আমার নিজের একটা মোবাইল হলে খুব ভালো হতো। কিন্তু সবে মাত্র চাকরীতে জয়েন করেছি এবং বেতনের খুব বেশি একটা না তাই আমার পক্ষে সাথে সাথে মোবাইল কেনা সম্ভব হলো না।
এভাবে কয়েক মাস খুব কষ্ট করে বাড়িতে কথা চালিয়ে গেলাম। কিন্তু দিন যত যেতে লাগল আমার মোবাইলের চাহিদা কিংবা প্রয়োজনীয়তা আমার ততই বেড়ে যেতে লাগলো। চাকরি নেওয়ার ছয় মাস পর অর্থাৎ এপ্রিল মাসে মনে হল যে আমার একটি মোবাইল এখন অবশ্যই প্রয়োজন। আমি চিন্তা করতে লাগলাম যে কিভাবে একটি মোবাইল কেনা যায়। তখন হয়তো মোবাইলের দাম খুব একটা বেশি না কিন্তু আমি যে সেলারি পেতাম আমার পক্ষে সেটাই অনেক বেশি হয়ে যেত, তাছাড়া একটি সিম ও কিনতে হবে। তো আমি আমার পরিচিতজন এবং আমার রুমমেটদের সাথে আলাপ করলাম যে আমার একটি মোবাইল ফোন খুবই জরুরী।
আমার কথা শুনে আমার রুমমেট বলল যে আমার ফোনটা আমি বিক্রি করে দেবো তুমি চাইলে কিনতে পারো। আমি সাথে সাথে আমার রুমমেট কে কিছু বললাম না। বরং আমি আরো কয়েক জায়গায় খোঁজাখুঁজি করলাম দেখি ভালো এবং কম দামে মোবাইল পাওয়া যায় কিনা। কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও আমি কম দামে একটা মোবাইল কিনতে পারলাম না।
অনেক চিন্তা ভাবনা করে শেষমেষ আমার রুমমেটের মোবাইল ফোনটাই কিনে নিলাম। সিম সহ মোবাইলটা কিনতে আমার খরচ হয়েছে সর্বমোট তিন হাজার সাতশত টাকা। আমি খুব খুশি হয়েছিলাম মোবাইলটা কিনে কারণ আমি চিন্তা করছিলাম যে সিম সহ টাকা।
মোবাইলটা হাতে পাওয়ার পর আমার মনে হচ্ছিল যে আমি আকাশের চাঁদ হাতে পেয়েছি। এরপর আমি যতটুকু সময় পেয়েছি সবসময় মোবাইলটা নিয়ে থাকতাম। বেশিরভাগ সময় সাফের গেমস এবং বক্স মিলানো গেমস টা খেলতাম। কখনো রিংটোন বাজাতাম, রিংটোন চেঞ্জ করতা, কখনো সেটিং-এ যেতাম, কখন ও কল লিস্ট দেখতাম, কখনো টর্চ জ্বালাতাম কখনো অন্যকে মিস কলও দিতাম, কখনো রিসিভ কল গুলো দেখতাম, কখনো থিম চেঞ্জ, করতাম কখনো মেসেজ দেখতাম, কখনো মোবাইলের কভার চেঞ্জ করতাম, বিশেষ করে সে সময় প্লাস্টিকের এক ধরনের সচ্ছ কভার ব্যবহার করা হতো, কয়েকদিন পরপরই আমি ওই কভার গুলো চেঞ্জ করে অনেক পুরনো কভার গুলো চেঞ্জ করে নতুন কভার লাগাতাম, যাতে করে আমার মোবাইল ফোনটি নতুন দেখায়। একবার আমি রাতে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলাম রাত প্রায় বারোটার সময় গাড়িতে উঠেছিলাম তখন পাশের একটা লোক মনে হচ্ছিল যে আমার মোবাইলের দিকে তাকিয়ে আছে আমি তখন মোবাইলটা এমন এক জায়গায় রেখেছিলাম যাতে করে জীবনেও কেউ খুঁজে না পায় আমি আমার জীবন দিয়ে দেবো কিন্তু আমার মোবাইল যাতে কেউ নিতে না পারে।
আসলে জীবনের প্রথমে যে কোনো জিনিস পাওয়ার অনুভূতিটা অন্য রকম থাকে আর মোবাইলত অন্যরকম ব্যতিক্রম একটা জিনিস। জীবনে প্রথম মোবাইল পাওয়ার অনুভূতি বা আনন্দটা আসলে লিখে বা বলে বোঝানো যাবে না।
ভালো লাগলো আপনার প্রথম হাতে মোবাইল পাওয়ার অনুভূতি টুকু পড়ে। সত্যি প্রথম পাওয়ার কি করবো বুঝে উঠতে পারিনা, আমার তো তাই হয়েছিল। ধন্যবাদ আপনার সুন্দর অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আপনি আপনার পোস্টে বেনিফিসিয়ারী দেননি। আপনি হয়তো জানেন বেনেফিশিয়ারি ছাড়া আপনাকে সাপোর্ট করা আমাদের পক্ষে কোনভাবেই সম্ভব নয়। পরবর্তী পোস্টে অবশ্যই বিষয়টি লক্ষ্য রাখবেন।
ভাইয়া আমি কি Edit করে দিয়ে দিব, তাছাড়া ভাইয়া লিখেছেল যে, এই পোস্টে নির্দিষ্ট পরিমাণ স্টিম পুরস্কার হিসেবে দিবে তাই আমি ভাবছি হয়তো বেনিফিশিয়ারি না দিলেও হবে।
এডিট করে বেনিফিসিয়ারী চেঞ্জ করা যায় না। এই পোস্টটিতে ভোট পড়েছে এবং কমেন্ট পরেছে, তাই এটি আর এডিট করার দরকার নাই। আপনি পরবর্তী পোস্ট থেকে অবশ্যই এই বিষয়টি লক্ষ্য রাখবেন।
ঠিক আছে ভাইয়া।