রেজাল্ট কখনো ভাগ্য নির্ধারণ করে না!

in আমার বাংলা ব্লগlast month

15-08-25

৩১ শ্রাবণ , ১৪৩২ বঙ্গাব্দ


🌼আসসালামুআলাইকুম সবাইকে🌼


success-4222903_1280.webp

copyright free image from pixabay

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো ও সুস্থ্য আছেন। তো সুস্থ্য থাকাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ! কারণ আপনি সুস্থ্য না থাকলে কোনো কিছুই আপনার কাছে ভালো লাগবে না। তো চারদিন আগে ডুয়েট এডমিশন পরীক্ষা হয়েছিল। আপনাদের সাথে কিছু কথা শেয়ার করেছিলাম। ডুয়েট এডমিশনে অনেক ছোট ভাই, শুভাকাঙ্ক্ষীরা পরীক্ষা দিয়েছিল। অনেকের ফলাফল তাদের আশানুরূপ হয়নি। এই নিয়ে অনেকের মন খারাপ। আবার কয়েকজনের ডুয়েটে চান্স হয়েছে। এটা জেনে অবশ্য বেশ ভালো লাগছিল। আসলে জীবনে রেজাল্টের দুটো দিক থাকে। হয় খারাপ নয়তো ভালো! তবে রেজাল্ট দিয়ে সবাইকে পরিমাপ করা ঠিক না! কিন্তু আজকের সমাজে সার্টিফিকেট কে বেশি ভেল্যু, যার বড় বড় সার্টিফিকেট রয়েছে তার ভেল্যু আজকের সমাজে বেশি! যাদের রেজাল্ট ভালো, ভালো জায়গায় চান্স পেয়েছে তারা চান্স পায়নি তাদের থেকে ভালো। সমাজের মানুষের ধারণা এমনি আসলে। তবে সমাজের মানুষ কখনো জানতে আসেনি তার রেজাল্ট খারাপ হওয়ার পিছনের গল্প।

হতে পারে পরীক্ষার সময়টা তার অনুকূলে ছিল না। যেভাবে সে প্রিপারেশন নিয়েছিল সেভাবে সে সবকিছুর উত্তর দিতে পারে না। সিলেবাসের বাইরে থেকে কিছু টপিক এসে গিয়েছিল। অথবা এমনও হতে পারে পরীক্ষার সময় কোনো একটা ঘটনা ঘটে গেল। পরিবারের কেউ মারাত্মকভাবে অসুস্থ হয়ে গেল অথবা সে নিজেই অসুস্থ হয়ে গেল! স্বাভাবিকভাবেই তার পরীক্ষা খারাপ হবে, রেজাল্টটাও আশানুরূপ আসবে না। এটাই তো নরমাল বিষয়। কাউকে রেজাল্ট দিয়ে পরিমাপ করা আমার মনে হয় সবচেয়ে বড় বোকামি। যার রেজাল্ট ভালো সে হয়তোবা প্র্যাকটিক্যাল জ্ঞান কম। আবার যার রেজাল্ট কম সে আবার প্র্যাকটিক্যাল কাজে দক্ষ! বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনায় কে এগিয়ে থাকবে বলেন তো? সিম্পল উত্তর! যে প্র্যাকটিক্যাল কাজে দক্ষ! প্র্যাকটিক্যাল কাজে যে দক্ষ সে ঐ বিষয়টাতে সর্বোচ্চটা দিতে পারে। কোনো একটি প্রতিষ্ঠান এমন লোককেই খুজঁবে।

রেজাল্ট কখনোই কারো ভাগ্য নির্ধারণ করে না! যে ছেলেটা পরীক্ষায় সবচেয়ে খারাপ রেজাল্ট করেছে। ভেঙে না গিয়ে আবার উঠে দাঁড়িয়েছে এবং সবশেষে সে সফল হয়েছে সে ছেলেটা আমার চোখে সেরা! কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হয় কি রেজাল্ট খারাপ হলে আমরা একেবারে ভেঙে পরি! মনে হয় জীবন বোধহয় এখানেই শেষ! আর চেষ্টা করার প্রয়োজন মনে করি না। অথচ বিখ্যাত ব্যক্তিদের দিকে তাকালেই দেখা যায় তারা জীবনে কতবার ব্যর্থ হয়েছিল। এবং ব্যর্থতার পরেই সাফল্যের দেখা পেয়েছিল। ডুয়েট ভর্তি পরীক্ষায় আমার কাছের এক ছোট ভাই চান্স পায়নি! তার কান্না যেন থামছেই না। সে পরিশ্রম করেছিল। তবে ভাগ্য সহায় হয়নি। তবে এ পরিশ্রম কিন্তু বৃথা যাবে না। এখন ব্যর্থ হয়েছে আর এখান থেকে যদি শিক্ষা না নিয়ে এগিয়ে না যায় তাহলে জীবনে সাফল্যের দেখা পাওয়া যাবে না! জীবন প্রতিবার আপনাকে সম্ভাবনার সুযোগ দিবে, উঠে দাড়ানোর সুযোগ দিবে। তবে আমরা সে সুযোগটাই কাজে লাগাতে পারি না! যে কাজে লাগাতে পারে সে সফল হয়।

ব্যর্থতার পরেই সাফল্য আসে সেটা আমাদের মনেপ্রাণে বিশ্বাস রাখতে হবে। আর এটার মাইন্ডসেট আমাদের করে নিতে হবে। আমি পারবো এ মাইন্ডসেটটা থাকতে হবে। কখনো দূর্বল হওয়া যাবে না! যত প্রতিকূলতা আসুক না কেন, আমি পারবো! এ ধরনের চিন্তা যার মাথায় থাকবে সে দ্রুত সাফল্যের দেখা পাবে। রেজাল্ট আসলে কেবল একটি অধ্যায়ের সমাপ্তি মাত্র, তবে সেটা পুরো বইয়ের নয়! তোমার রেজাল্ট কখনো তোমাকে ডিফাইন করবে না, তুমি কি করতে পেরেছো, কিভাবে জীবন সফল হয়েছো সেটাই দেখবে মানুষজন! এজন্য জীবনের প্রতিটি ব্যর্থতা থেকে তোমাকে শিখতে হবে। অভিজ্ঞতা অর্জন করে আরও শক্ত হয়ে উঠে দাঁড়াবে। যারা ডুয়েট যুদ্ধে ব্যর্থ হয়েছে তাদের জন্য আরও একটি সুযোগ রয়েছে নিজেকে প্রমাণ করার। ব্যর্থতার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আবারো নতুন করে জেগে উঠতে হবে। তবেই যেকোন যুদ্ধে সফল হওয়া সম্ভব, সেটা হোক ডুয়েট যুদ্ধ অথবা জীবনের যেকোন যুদ্ধ।

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNzq2MSXKSji21JRspt4nqpkXPR5ea7deLzvmJtuzVBwdLJUpBqtgAZ5gHtHPbayD2jR3CWqjkJ.png

ধন্যবাদ সবাইকে



WhatsApp Image 2021-12-23 at 19.46.54.jpeg

আমি কে?

IMG_4442.JPG

আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। বর্তমানে ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর উপর বিএসসি করছি ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যলয় (ডুয়েট) থেকে । পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত চার বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,কবিতা লেখা,গল্প লেখা ,রিভিউ,ডাই এবং আর্ট করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।

Sort:  
 last month 

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.