কোন এক শুক্রবার।।
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
আজ থেকে বছর পাঁচ আগেও বই পড়ার প্রতি তেমন কোন আগ্রহ আমার ছিল না। কিন্তু এখন একটা আগ্রহ আছে। তবে এখন সময় খুব একটা পাই না। তারপরও চেষ্টা করি নিয়মিত বই পড়ার। এরই ধারাবাহিকতায় ফেসবুকে বেশ কিছু বইয়ের গ্রুপের সাথে যুক্ত আছি আমি। অনেক সময় ওখানে অনেকেই বই নিয়ে অনেক পোস্ট করে। অনেকেই কবিতা শেয়ার করে। নতুন কোন বই আসলে তার রিভিউ পাওয়া যায়। ফেসবুকে এইরকম কয়েকটি গ্রুপে আমি যুক্ত আছি। গতদিন কিছুটা সময় ফেসবুকে ছিলাম। তখন ফেসবুকের নিউজফিডে একটা বইয়ের গ্রুপের পোস্ট আসে। সেখানে বাংলাদেশের বিখ্যাত একজন কবি আল মাহমুদ এর একটা কবিতার কয়েকটা লাইন দেওয়া ছিল। ঐ লাইনগুলো মূহূর্তের মধ্যে আমার ভালো লেগে যায়।
আল মাহমুদের স্মৃতির মেঘলা ভোর কবিতার উল্লেখযোগ্য কয়েকটা লাইন। যেখানে কবি আল মাহমুদ বলেছেন
কোনো এক ভোরবেলা, রাত্রিশেষে শুভ শুক্রবারে
মৃত্যুর ফেরেস্তা এসে যদি দেয় যাওয়ার তাকিদ;
অপ্রস্তুত এলোমেলো এ গৃহের আলো অন্ধকারে
ভালোমন্দ যা ঘটুক মেনে নেবো এ আমার ঈদ।
কবি এখানে কোন এক শুক্রবার ভোরে মৃত্যুর আশা করেছেন। অর্থাৎ তিনি চেয়েছেন কোন এক শুক্রবার ভোরে মৃত্যুর দূত এসে তাকে মৃত্যুর তাকিদ দেবে। এবং সেই দিনটা তার কাছে হবে ঈদের মতো। অর্থাৎ সেই দিনটা তিনি ঈদের মতো গ্রহণ করবেন। আপনাদের বলে রাখি আমাদের মুসলমানদের কাছে শুক্রবার দিনটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি এতোটুকু পযর্ন্ত হতো তাহলে সবকিছুই ঠিক ছিল। কিন্তু একটু ঘাটাঘাটি করতে গিয়ে আমি নিজেও চমকে গিয়েছিলাম।
কবি আল মাহমুদ তার স্মৃতির মেঘলা ভোর কবিতায় কোন এক শুক্রবার ভোরে তার মৃত্যু কামনা করেছেন। কাকতলীয় ভাবে হলেও সৃষ্টিকর্তা যেন তার সেই ইচ্ছা পূরণ করেছেন। অর্থাৎ সৃষ্টিকর্তা তার সেই প্রার্থনা রেখেছেন। কবি আল মাহমুদ ২০১৯ সালের ১৫ ই ফেব্রুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন। এবং দিনটা ছিল শুক্রবার। এটা দেখে আমি বেশ হতবিহ্বল হয়ে গিয়েছিলাম। কিছু কিছু মানুষের ইচ্ছা সৃষ্টিকর্তা পুরোপুরি পূরণ করে দেয়। কবি আল মাহমুদের কবিতার সেই ইচ্ছা অনুযায়ী কোন এক শুক্রবার ভোরেই তার মৃত্যু হয়। এবং তিনি হয়তো সেই মৃত্যু অনেক আনন্দের সাথেই গ্রহণ করেছিলেন। শেষ সময়ে এসে পূরণ হয়েছে কবির ইচ্ছা। তার কাঙ্ক্ষিত সেই দিনেই তার মৃত্যু হয়েছে।
মৃত্যুর মতো এমন করুন সত্য পৃথিবীতে নেই। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় এই সত্যি টা বরাবরই আমরা এড়িয়ে চলি। আমরা এমনভাবে চলাফেরা করি মনে হয় আমাদের জীবনের অবসান কখনও হবে না। আমাদের কখনও মৃত্যু হবে না। নিজের জীবন কে যত সহজভাবে পরিচালনা করা যাবে মৃত্যু টাও ততটাই সহজভাবে আসবে। কবি আল মাহমুদ এর কবিতা সেরকম পড়া হয় নাই। তবে উনার আরেকটা কবিতা আমার বেশ পছন্দের। এবং ঐ কবিতা টা বাংলা সাহিত্যে বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটা অংশ নিয়ে রয়েছে। হ্যা বলছি উনার সেই বিখ্যাত কবিতা সোনালী কাবিন এর কথা। কবির এই কবিতা টা আমার কাছে অনেক পছন্দের। সত্যি হয়তো কবি তার পছন্দের নারীকেও সোনার দিনারের বদলে দেনমোহরে কাবিন বিহীন হাত দুটি দিয়েছিল।
সোনার দিনার নেই, দেনমোহর চেয়ো না হরিনী
যদি নাও, দিতে পারি কাবিনবিহীন হাত দু’টি,
আত্মবিক্রয়ের স্বর্ণ কোনকালে সঞ্চয় করিনি
আহত বিক্ষত করে চারদিকে চতুর ভ্রুকুটি;
ভালোবাসা দাও যদি আমি দেব আমার চুম্ব্ন,
ছলনা জানিনা বলে আর কোন ব্যবসা শিখিনি;
দেহ দিলে দেহ পাবে, দেহের অধিক মূলধন
আমার তো নেই সখি, যেই পণ্যে অলঙ্কার কিনি
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.