চাষযোগ্য জমি পরিতক্ত ভাবে পড়ে থাকা দ্রব্যমূল্যর উর্ধগতির অন্যতম একটি কারণ।।
বাংলা ভাষার কমিউনিটি
হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো এবং সুস্থ আছেন।
বাংলাদেশ একটি কৃষি প্রধান দেশ। স্বাধীনতার পর থেকে আজ অবধি কৃষি বাংলাদেশের অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও জীবনযাত্রার মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করছে। দেশের প্রায় অর্ধেকের বেশি মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কৃষির সঙ্গে যুক্ত। আমাদের মাটি উর্বর, আবহাওয়া অনুকূল এবং নদীমাতৃক ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য কৃষিকে করেছে বহুমুখী সম্ভাবনার খাত। তবুও দুঃখজনকভাবে দেখা যাচ্ছে, মানুষ কৃষির প্রতি ধীরে ধীরে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে এবং অনেক ক্ষেত্রেই চাষযোগ্য জমি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকছে।
বাংলাদেশে ধান, গম, ভুট্টা, ডাল, সবজি, ফলমূল এবং বিভিন্ন নগদ ফসল উৎপাদনে দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য রয়েছে। বিশেষ করে ধান আমাদের প্রধান খাদ্যশস্য, যা দেশের মোট কৃষি উৎপাদনের বড় একটি অংশ জুড়ে আছে। এছাড়া আমাদের মাটি সবজি ও ফল উৎপাদনের জন্যও অত্যন্ত উপযোগী। কৃষির মাধ্যমেই বাংলাদেশ একসময় খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছিল। কিন্তু ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা, নগরায়ণ এবং কৃষির প্রতি অনাগ্রহের কারণে আজ সেই অর্জন বারবার ঝুঁকির মুখে পড়ছে।
বর্তমান যুগে কৃষিকে আরও সহজ ও লাভজনক করার জন্য আধুনিক প্রযুক্তি যেমন- পাওয়ার টিলার, হারভেস্টার, ড্রিপ ইরিগেশন, জৈব ও উন্নত সার ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশের অনেক কৃষক এখনো সেই প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন না। অন্যদিকে অনেকেই কৃষি ছেড়ে বিকল্প পেশায় ঝুঁকছেন। ফলে জমি চাষহীন থেকে যাচ্ছে এবং খাদ্য উৎপাদনে ঘাটতি তৈরি হচ্ছে।
সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো দেশের বড় বড় ব্যবসায়ী গোষ্ঠী যেমন সিটি গ্রুপ, বসুন্ধরা গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপ, ফকির গ্রুপ ইত্যাদি শত শত একর জমি কিনে পরিত্যক্ত অবস্থায় ফেলে রাখছে। এগুলো কৃষিযোগ্য জমি হওয়া সত্ত্বেও চাষাবাদ করা হয় না এবং অন্যকেও চাষ করতে দেওয়া হয় না। এতে শুধু জমির অপচয়ই হচ্ছে না, বরং দেশের খাদ্য উৎপাদনেও বড় ধরনের প্রভাব পড়ছে। যখন জমি চাষ হয় না, তখন খাদ্য ঘাটতি দেখা দেয় এবং তার সরাসরি প্রভাব পড়ে দ্রব্যমূল্যের ওপর। আজকে বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণও এটি।
বাংলাদেশকে টেকসই উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিতে হলে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা বজায় রাখা অত্যাবশ্যক। এজন্য সরকারের উচিত আইন করে ঘোষণা দেওয়া যে চাষযোগ্য জমি অব্যবহৃত রাখা যাবে না। যদি কোনো জমি পরপর দুই বা তিন বছর চাষ ছাড়া ফেলে রাখা হয়, তবে তা সরকার বাজেয়াপ্ত করে কৃষিকাজে ব্যবহার করবে। একইসঙ্গে কৃষকদের প্রযুক্তি ব্যবহারে উৎসাহিত করা, কৃষি ঋণ প্রাপ্তি সহজ করা এবং বাজারে ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করাও জরুরি।
আজকের কিশোর-যুবকদের কৃষির প্রতি গুরুত্ব দেওয়া উচিত। তাদের বোঝাতে হবে যে কৃষি শুধু চাকরি বা ব্যবসার বিকল্প নয়, বরং জাতীয় নিরাপত্তার একটি মৌলিক অংশ। নিজেদের খাবার নিজেদের উৎপাদন করার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারলেই আমরা বিদেশ থেকে অপ্রয়োজনীয় খাদ্য আমদানি বন্ধ করতে পারব।
বাংলাদেশের অর্থনীতির ভিত হলো কৃষি। আমাদের মাটি উর্বর, আমাদের মানুষ পরিশ্রমী। শুধু সঠিক নীতি গ্রহণ, জমির সদ্ব্যবহার এবং আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারলে বাংলাদেশে আর কখনো খাদ্য সংকট দেখা দেবে না। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ হবে এবং কৃষিই হবে টেকসই উন্নয়নের পথপ্রদর্শক। তাই এখনই সময় কৃষিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে একটি স্বনির্ভর ও খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ বাংলাদেশ গড়ে তোলার।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
ভাই বর্তমান বাজারের যে অবস্থা তাতে সবদিকেই কঠিন পরিস্থিতি বিরাজ করছে। রাসায়নিক সার সহ কীটনাশক জিনিসপাতের যেভাবে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে তাতে কৃষকদের জমি ফেলে রাখা ছাড়া কোন উপায় নেই। তবে সঠিক বলেছেন যে চাষযোগ্য জমিগুলো যথাসম্ভব চাষাবাদ করতে হবে তা না হলে দ্রব্যমূল্য আরও ঊর্ধ্বগতির দিকে যাবে।