লাইফস্টাইল: হাসপাতালে রোগীর শয্যার পাশে কিছুসময়।
সবাইকে শুভেচ্ছা।
অনেক আগে এক বড়ভাই বলেছিলেন, মানুষের অসহায়ত্ব দেখতে চাইলে হাসপাতাল ও কোর্টে যাও। কথাটি আসলে সত্য। যেখানে টাকার বাহাদুরি খাটেনা। আইন যেমন সবার জন্য সমান তেমনি অসুস্থতাও ধনী- গরীব দেখে আসে না। অসুস্থার ক্ষেত্রে ধনীরা দামী হাসপাতাল বা দেশের বাইরে যেতে পারে উন্নত চিকিৎসার জন্য কিন্তু রোগ সমান। কত প্রকার অসহায় মানুষ আছে হাসপাতালে বা কোর্টে গেলে অগনিত মানুষের মুখ গুলোর দিকে তাকালেই বোঝা যায়। এই জায়গায় গেলে অম্ল-মধুর বিচিত্র অভিজ্ঞতা হয়। বন্ধুরা, আজ হাসপাতালে রোগী দেখতে যাওয়া নিয়ে আমার আজকের লাইফস্টাইল পোস্ট।
আজ মধ্য দুপুরে একটি ফোন পেলাম। ফোন রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে বন্ধু জানালো, তার এক নিকটতম আত্মীয় জরুরি চিকিৎসার জন্য ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। বন্ধু বলল, যদি সম্ভব হয় আমি যেন একটু খোঁজ খবর নেই এবং সময় করে একরার দেখে আসি। বন্ধুর কাছ থেকে হাসপাতালের ঠিকানা ও রোগীর বিস্তারিত জেনে তাকে আস্বস্ত করলাম আজ সন্ধ্যায় রোগীকে দেখতে যাব। রোগী সরকারি একটি হাসপাতালে ভর্তি আছেন। সরকারি হাসপাতাল গুলোর অভিজ্ঞতা আমাদের কমবেশি জানা আছে। এর মধ্যে দু'একটি ব্যতিক্রম হাসপাতাল তার মধ্যে অন্যতম ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস ও হাসপাতাল। সরকারি হাসপাতাল হলেও সেবার মান ও পরিস্কার পরিচ্ছন্নতায় এক অনন্য হাসপাতাল। আর হ্যাঁ অন্য হাসপাতালের মত দালানের দৌরাত্ব নেই। নিয়ম মেনেই সব কিছু হয়।
সন্ধ্যা ৬টার পরপরেই হাসপাতালে হাজির হয়ে রোগীর সাথে দেখা করি। রোগীর এটেন্ডেন্ট এর সাথে কথা বলি। প্রায় ১০ মিনিট রোগীর শয্যার পাশে অবস্থান করে চলে আসি। বের হয়ে রোগীর এটেনডেন্ট এর সাথে আরো কিছু সময় কাটিয়ে প্রয়োজনে ফোন দেয়ার কথা বলে চলে আসি। রোগীর যে অবস্থা তাতে মনে হচ্ছে, আরো বেশ কয়েকদিন থাকতে হবে হাসপাতালে তাদের। ঢাকায় বসবাসের কারনে প্রায় হাসপাতাল গুলোতে রোগী দেখতে যেতে হয়। কেউ কারো অসুস্থতার খবর আমাকে জানালে, চেষ্টা করি সেই রোগীকে একবার হলেও দেখতে যেতে। শুরুতেই বলেছি অসহায় মানুষ দেখতে চাইলে হাসপাতালে যান। হাসপাতালের বেডে শুয়ে থাকে রোগী আর রোগীর স্বজনরা কত অসহায় রোগী দেখতে না গেলে বা নিজের কেউ অসুস্থ না হলে বোঝা যায়না।
আমার মনে হয় হাসপাতালে রোগী দেখতে গেলে রোগীর স্বজনরা সাহস পায়-শক্তি পায়। আপনি ভাবেন, আপনার আপনজনকে নিয়ে আপনি ঢাকায় চিকিৎসার জন্য এসেছেন। এই দূরে কিছু সময়ের জন্য একজন আত্মীয় বা পরিচিত মানুষ আপনাকে সঙ্গ দিচ্ছে -খোঁজ খবর নিচ্ছে! কেমন লাগবে? নিশ্চয়ই ভালো লাগবে। রোগী দেখতে যাওয়া একটি ভালো কাজ। রোগী ও রোগীর স্বজনরা তাতে শক্তি পায়। একা ফিল করে না! ঢাকার মানুষ ব্যস্ত! যানজটের কারণে তাদের আরো ব্যস্ত করে তুলেছে। সময় হয়না বলে অনেক কিছুই এড়িয়ে যায়। তবে এই একটি বিষয়ে আমি এড়িয়ে চলিনা। অসুস্থ রোগীর পাশে যেতে ও রোগীর স্বজনদের পাঁশে দাঁড়াতে। আজকে যে রোগীকে দেখতে গেলাম, সেই রোগীর দ্রুত সুস্থতা কামনা করে আজকের মত এখানেই শেষ করছি।
ধন্যবাদ।
ঢাকা-বাংলাদেশ।