আখের রস || by @kazi-raihan
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@kazi-raihan বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ - ২৫শে কার্তিক | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | শনিবার | হেমন্তকাল|
আমি কাজী রায়হান,আমার ইউজার নাম @kazi-raihan।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে অভিনন্দন।
এখন শীত অনেকটাই শুরু হয়ে গিয়েছে সকালবেলা ঘুম থেকে উঠলে চারিদিকে কুয়াশা দেখা যায় আর শিশির তো ঘাস একদম ঘিরে থাকে। চারিদিকে আখের গুড় উৎপাদন শুরু হয়েছে। আমাদের কুষ্টিয়া এলাকায় প্রচুর আখ চাষ করা হয়। শীতের শুরু থেকেই আখ সংগ্রহ করে গুড় তৈরি শুরু হয়ে যায়। কৃষকেরা সকাল সকাল জমি থেকে আখ নিয়ে সেগুলাকে পরিষ্কার করে আখ মাড়াই করে রস সংগ্রহ করে আর সেই রস জ্বালিয়ে গুড় তৈরি করে। শীতের শুরু থেকে শীতের শেষ পর্যন্ত একটানা পর্যায়ক্রমে আখ থেকে গুড় উৎপাদনের ধারাবাহিকতা চলতেই থাকবে। কৃষকেরা পর্যায়ক্রমে তাদের জমি থেকে আখ গুলো সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করতে থাকে। গুড় গুলো তৈরি করা শেষে মাটির পাত্রে সংগ্রহ করা হয় আর আমাদের এলাকায় সেই মাটির পাত্রকে আঞ্চলিক ভাষায় কুলা বলা হয়। আব্বুর মুখে গল্প শুনেছি একসময় আমাদের নাকি ঘরে ১০০ কুলা গুড় আসতো সে সময় নাকি দাদা সবকিছু দেখাশোনা করত। দাদা স্কুল শেষ করে এসে মাঠের জমিগুলোকে পুনরায় দেখতো। যাই হোক এখন আর সেই জমিগুলোকে আমরা চাষ করি না বিভিন্ন লোকজনের কাছে জমিগুলোকে লিজ দিয়ে রাখা হয়েছে। সেই জমিগুলোর কিছু অংশে আখ চাষ করা হয় আর যারা আখ চাষ করে তারা আমাদেরকে প্রতিনিয়তই সেখানে গিয়ে গরম আখের গুড় আখের রস এবং আখ আনতে বলে। কালকে রাত্রে আব্বুর কাছে একজন ফোন দিয়েছিল আর লোকেশন দিয়ে বললো সেখানে গিয়ে যেন আখের রস খেয়ে আসি আর বাড়ির জন্য নিয়ে আসি।
ইদানিং সকালে উঠে কাজ করা শুরু করেছি তাই নিজের হাতের কাজ কমপ্লিট করে সকালের নাস্তা করলাম যদিও আম্মু বলেছিল সকালের দিকে সেখানে গিয়ে ঠান্ডা আখের রস খাওয়ার কথা তবে কাজ বাদ দিয়ে রস খেতে যাওয়াটা আমার মোটেও পছন্দ হয়নি। সকালে কাজ কমপ্লিট করে তখন ঘড়ির কাঁটায় সময় আটটা বাজে আমি আমার চাচাতো ভাইকে ফোন করে বললাম সেখানে রস খেতে যাওয়ার কথা সে অবশ্য প্রথমেই রাজি হয়ে গেল। আমার চাচাতো ভাই ও ঠিক একই কথা বলল যে রস খেতে হলে তো ভোরবেলায় যেতে হয় চারিদিকে কুয়াশা থাকবে প্রচন্ড ঠান্ডা থাকবে আর ঠান্ডা আখের রস অন্যরকম একটা অনুভূতি তবে কি আর করার কাজের ব্যস্ততার জন্য আর যাওয়া হলো না। তবে অন্য কোনদিন আবার এরকম সময় করে ভোর বেলায় যাবে যাইহোক তার ব্যাংক শুক্রবারে বন্ধ থাকায় দুই ভাই বাসা থেকে রওনা হলাম সেখানে রস খেতে। রাস্তার পাশে বাইক রেখে মাঠের মধ্যে গিয়ে যেখানে আখ মাড়াই করা হয় সেখানে উপস্থিত হলাম আর দেখলাম আমাদের সেই মামা সেখানেই কাজ করছে আর আমরা যাওয়ার পরে সে আমাদেরকে আলাদা ভালবাসা উপহার দিল। তার কথা গুলো শুনে অনেক ভালো লাগলো।
সেখানে যাওয়ার পরেই মামা আমাদেরকে বলল তোমাদের সকালে আসতে বলেছিলাম তখন আসলে রস খেয়ে মজা পেতে। যাইহোক আমরা যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি ভালো কিছু আখ আমাদের জন্য রেডি করে দিলেন আর আখ মাড়াই করা মেশিন পুনরায় স্টার্ট করে আখের রস খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিলেন। আসলে সেখানে যাওয়ার পরে সে আমাদেরকে এতটা রেসপেক্ট করে আখের রস খাওয়ার জন্য আপ্যায়ন করবে সেটা কখনো চিন্তা করিনি। যাইহোক আঁখ গুলো মেশিনের মধ্য দিয়ে দিচ্ছিল আর রস বেরিয়ে আসছিল সেই রস আমি আবার আলাদা একটি বড় মগের মধ্যে সংগ্রহ করতে ছিলাম। আখের রসে যখন বড় মগ ভরে গেল তখন আমি মামাকে বললাম মগ ভরে গিয়েছে এখন আপনি মেশিন বন্ধ করে দিতে পারেন। পরবর্তীতে মামা মেশিন বন্ধ করে দিল আর আমি সেই আখের রস ভর্তি মগ হাতে নিয়ে ছবি তুললাম।
আমরা মগ ভর্তি রস নিয়ে সেখানেই বসলাম আর মামা বলল আপনারা এখানে অপেক্ষা করুন আমি বাড়ি গিয়ে গ্লাস নিয়ে আসি আর রস গুলো পরিষ্কার ভাবে ছেঁকে দেওয়ার জন্য বাড়ি থেকে পরিষ্কার গামছা নিয়ে আসি। যদিও তাদের বাড়ি একদম পাশেই তাই খুব একটা সময় লাগবে না কিছু সময় অপেক্ষা করি যাই হোক সেখানে বসে কিছু সময় অপেক্ষা করতে লাগলাম। ফোন হাতে থাকলে আমার কেমন জানি ছবি তুলতে ইচ্ছে করে তাই ভাবলাম সেখানকার আরো কিছু ছবি তোলা দরকার তাই ফোন নিয়ে এদিক সেদিক এলোমেলো কিছু ছবি তুলেছিলাম যার কিছু ছবি উপরে আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি। তাছাড়া আখের রস কিভাবে বড় পাত্রের মধ্যে রেখে বড় চুলার উপর তাপ দিয়ে গুড় তৈরি করা হয় তার একটি দৃশ্য কিন্তু শেয়ার করেছি। যারা গ্রামে বাস করে তারা এই বিষয়টা ভালোভাবে অবগত আছে। যাই হোক কিছু সময়ের মধ্যেই মামা চলে আসলো আর বাড়ি থেকে রস খাওয়ার জন্য কাঁচের গ্লাস নিয়ে এসেছে আর রস ছেঁকে পরিষ্কার করার জন্য গামছা নিয়ে এসেছে। মামা বললো আপনারা রস খেতে থাকুন আমি আপনাদের জন্য কিছু আখ বেছে নিয়ে আসি যেটা বাসায় নিয়ে যাবেন।
আখের রস কাঁচের গ্লাসে নেওয়ার পরে আমি তো দুই গ্লাস খেয়ে নিলাম যদিও আমার চাচাতো ভাই মাত্র এক গ্লাস খেয়েছিল আর বাকিটা বাসার জন্য বোতলে করে নিয়ে এসেছিলাম। রস খাওয়ার সময় ছবিও তুলেছিলাম তার কিছু ছবি উপরে শেয়ার করেছি। যাইহোক আখের রস খাওয়ার শেষে আখের রস আর টাটকা আখ নিয়ে সোজা বাসায় ফিরে আসলাম।
⬇️📥 | ⬇️📥 |
---|---|
ডিভাইস | Samsung galaxy A52 |
ফটোগ্রাফার | @kazi-raihan |
লোকেশন | |
সময় | নভেম্বর,২০২৩ |
এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।
সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan
আমার পরিচয়
আমি কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ছবি আঁকতে, ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও মাঝে মাঝে গুন গুন করে গান গাইতে খুবই ভালোবাসি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।


VOTE @bangla.witness as witness

OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |

Poste
আখের রস খাওয়ার অনুভূতিটা অন্যরকম। প্রচন্ড শীতে কাঁপতে কাঁপতে আখের রস খেতে অন্যরকম একটা অনুভূতি কাজ করে। রস খাওয়ার পরে শীত আরো বেড়ে যায়। যদিও আমি বাড়ি নেই এমতা অবস্থায় আপনারা রস খেয়ে আসলেন। দেখেই খেতে ইচ্ছে করছে। সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
ডিসেম্বরের কড়া শীতে আবার একদিন আখের রস খাবো।
নস্টালজিক হয়ে গেলাম ভাই। আমাদের এদিকে আখ মারাই করার জায়গা কে বলে গাছ। ছোট বেলায় এই গাছের কাছে কত ঘুর ঘুর করতাম আখ,আখের রস, গরম গুড় খাওয়ার জন্য।এখন শহরে থাকার কারনে আর চোখেই পড়ে না এগুলো। আপনার পোস্ট ছোট বেলার সেই দিন গুলো মনে করিয়ে দিল।ধন্যবাদ ভাইয়া পোস্টটির জন্য।
আমাদের এলাকায় আখের রস খাওয়ার দাওয়াত নেন দাদা ভাই।
আসলে দাদা আঞ্চলিক ভাষায় বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন নামে পরিচিত।
আখের রস তৈরি করার দৃশ্য স্বচক্ষে আমি এখনো দেখিনি। বেশ ভালো লাগলো আপনি ফটোগ্রাফির মাধ্যমে খুব সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে উপস্থিত করেছেন দেখে। আর এই থেকে ধারনা পেয়ে গেলাম কিভাবে আখের রস তৈরি করে। তবে আখের রস তৈরি করা মেশিনটা আমি স্বচক্ষে দেখেছি ইতো পূর্বে।
তাহলে আমাদের এলাকায় চলে আসুন আর বিষয়গুলো স্বচক্ষে দেখে যান।
আমাদের এদিকে এখনো কুয়াশা দেখা পাইনি। আখের রস তৈরি করার দৃশ্য সামনাসামনি কখনো দেখা হয়নি। আপনার আজকের পোষ্টের মাধ্যমে পদ্ধতি গুলো দেখতে পারলাম। সবগুলো ফটোগ্রাফি দেখে খুব ভালো লেগেছে। আমাদের জন্যও নিয়ে আসতে পারতেন....
খালার বাড়ি আসলেই তো সবকিছু স্বচক্ষে দেখা যায় আবার সকাল বেলায় ঠান্ডা আখের রস খাওয়া যায় হি হি হি।
বর্তমান শীতের মৌসুম আর এই শীতের মৌসুমে আখের রস খেতে আসলেই অনেক বেশি সুস্বাদু লাগে। যদিও আপনি আখের রস খেয়েছেন তবে, ভোরবেলা যদি খেতে তাহলে আরও বেশি স্বাদ পেতেন। ভোরবেলা আখের রস খাওয়ার মাঝে অন্যরকম এক ফিলিংস কাজ করে চারিদিকে কুয়াশা আর সেই কুয়াশার মাঝে বসে আখের রস উফফ জিভে জল এসে যাচ্ছে। যাইহোক চাচাতো ভাইয়ের সঙ্গে এগিয়ে আখের রস খেয়েছেন জেনে ভালো লাগলো। সুন্দর এই মুহূর্তটা ক্যামেরা বন্দি করে আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ।
হ্যাঁ শীত একটু বেশি হলে তখন ভোর বেলায় যাব।
আখের রস অনেক সকালে খেতে বেশি মজা লাগে। যখন রস খাবো শীতে গা কাপাকাপি শুরু হয়ে যাবে। তবে সকাল আটটা তো ওই সময় ওর রস খেয়ে মোটামুটি একটু মজা পাওয়া গেছে। বন্ধু এখন চলে আসো রস খেয়ে আসি মাঠে গিয়ে।
আজকে না কালকে সকালে তোমাকে ফোন দিব।
আজকে আমি একটু কুষ্টিয়া যাব।
জি ভাইয়া এখন শীত অনেকটাই শুরু হয়ে গিয়েছে এবং সকালবেলা ঘুম থেকে উঠলেই চারিদিকে কুয়াশা দেখা যায়। ঠিক বলেছেন শীতের শুরু থেকে শীতের শেষ পর্যন্ত একটানা পর্যায়ে কর্মে আখ থেকে গুড় উৎপাদনে ধারাবাহিকতা চলতেই থাকবে। আমিও মাঠে যেতাম এবং আখের রস খেতে।ওখান থেকে খেতে যে এতটা দারুন লাগতো কিন্তু একটু পরিষ্কার করতে কষ্ট হয়। পরিষ্কার করে নিতে হয়।শীতকাল আসলে আমাদের খুব জনপ্রিয় হয়ে আখ।ছবিগুলি অনেক সুন্দর ভাবে আপনি তুলে ধরেছেন। আমাদের মাঝে ভীষণ ভালো লাগলো ভাইয়া । জি ভাইয়া রস খেতে হলে ভোর বেলায় যেতে হয় এবং ভোরবেলার অনুভূতিটা অনেক সুন্দর লাগে। চারিদিকে কুয়াশা হালকা ঠান্ডা । আপনি যে এত ছবি দিয়েছেন ভাইয়া খুবই ভালো লাগলো। যাক অনেক সুন্দর একটি মুহূর্ত উদযাপন করেছেন ভাইয়া
আসলেই সুন্দর একটি মুহূর্ত উদযাপন করেছিলাম। মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
জি ভাইয়া গতদিন আপনার আখের রস থেকে গুড় তৈরি দেখেছিলাম। যদিও এই প্রথম দেখেছি তাও বেশ ভালো লেগেছিল। তাছাড়া আমার কাছে মনে হয় আখের রস করে খাওয়ার থেকে বেশি ভালো লাগে আখ খেতে। লোকটি ভাল কাজ করেছে বাড়ি গিয়ে মগ এবং আখ ছাকার জন্য জিনিস নিয়ে এসেছে । তা না হলে পরিষ্কার রস খাওয়া বেশ কষ্টকর হয়ে যেত। ভালো লাগলো ভাইয়া আপনাদের মুহূর্তগুলো দেখে।
ঢাকা থেকে সোজা ছোট ভাইয়ের বাড়িতে চলে আসুন তাহলে সবকিছু সরাসরি দেখতে পারবেন সেই সাথে আখের রস এবং গরম গুড় খেতে পারবেন।
ভাইয়া যে সুন্দর করে আখের রস খাওয়া, তৈরি করা আর আখরসের সমস্ত বর্ণনা আমাদের মাঝে তুলে ধরলেন তাতে তো দৌড় দিয়ে যেয়ে আমারও একগ্লাস খেয়ে আসতে মনে চাইছে। হুম ঢাকার রাস্তা ঘাটে চলতে গেলে হাজারও আখের রস পাওয়া যায়। কিন্তু সেগুলোতো আপনাদের মত এমন খাটি নয়। আপনার হাতে থাকা আখের রসের রং টাও কিন্তু দেখতে দারুন। সব মিলিয়ে শুধু লোভই লাগলো। খাওয়া আর হলো না।
দাওয়াত রইল চলে আসুন তাহলে খাওয়া হয়ে যাবে।