সময়ের সাথে পরিবর্তন....

in আমার বাংলা ব্লগlast year

হ্যাল্লো বন্ধুরা

প্রিয় আমার বাংলা ব্লগবাসী, সবাইকে আমার নমষ্কার /আদাব। কেমন আছেন আপনারা সবাই? আশা করছি আপনারা সকলে ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমিও মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় পরিবার সহ বেশ ভালো আছি। আজকের আবারো আপনাদের মাঝে হাজির হলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আজ সকালের কিছু এলোমেলো চিন্তাভাবনা ই শেয়ার করবো আজ আপনাদের সাথে। আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে। এবং পোস্ট টি পড়ে আপনারা আপনাদের মূল্যবান মতামত শেয়ার করবেন।

IMG20240702130030.jpg


ছোট বেলা থেকে বিয়ের আগ পর্যন্ত বাসায় মা কে দেখতাম মাঝে মাঝেই নানা ধরনের ভিন্ন রকমের পদ রান্না করতেন, যেগুলো আসলে অনেক সময় সাপেক্ষ। তার মাঝে অন্যতম ছিলো -কলার মোচা! এই কলার মোচা রান্না করলে খেতে তো ভীষণ মজাই লাগে... কিন্তু এই গোটা কলার মোচা বেছে, কেটে রান্নার উপযোগী করতে অনেক বেশি সময় সাপেক্ষ বিষয়! আগে তো মা যেদিন এই কলার মোচা পরিষ্কার করতেন, আমি ও বাবা দুই জন ই সঙ্গ দিতাম, যতটুকু পারি সাহায্য করতাম পরিষ্কার করায়। একে তো সময় লাগে, তার উপর ওর কষ হাতে লেগে হাত এর অবস্থা এমন কালো হয়ে যায় দেখলে মনে হয় যেন এই মাত্র ক্ষেতে কাজ করে এসেছি !! তাতে মাঝে মাঝে বিরক্ত হয়ে যেতাম আমি যে এত ঝামেলার জিনিস খাওয়ার কি দরকার!

IMG20240624121346.jpg


IMG20240624121841.jpg


বিয়ের পর থেকে যখন আমাদের টোনাটুনির আলাদা সংসার শুরু হলো, তখন দুই জনই চাকরি করি। সপ্তাহে এক দিন মাত্র ছুটি, তাতে নানা ধরনের কাজ করতে হয়! তাই এমন বাড়তি ঝামেলার কিছু খাবার বিশেষত এই কলার মোচার তরকারি খেতে ইচ্ছে করলেও, সে সময়ে নিজের বাসায় রান্না করা মাথায় ই আনতাম না কখনো। কিন্তু চাকরি ছেড়ে দেয়ার পর, এখন যখন বাসায় অফুরন্ত সময়, তাই সাহস করে একদিন বলেই বসলাম বাজার থেকে কলার মোচা আনার কথা! নিয়েও এলো খুশি মনে- কারণ কলার মোচা কাটা-বাছা ঝামেলার হলেও এটি আসলে নানা পুষ্টিগুণে ভরপুর! ফাইবার থেকে শুরু করে আয়রন, ভিটামিন-ই, প্রোটিন, ম্যাগনেশিয়াম ভরপুর আছে এতে।যা ডায়াবেটিস, রক্তশূন্যতা, অবসাদ এবং নারীদের বেশ কিছু হরমোনাল সমস্যার জন্য অতি উপকারী একটি খাবার।

IMG20240624125111.jpg


IMG20240805160119.jpg


প্রথম বারের মতোন নিজে নিজে পুরোটা কলার মোচা কেটে- বেছে পরিষ্কার করতে গিয়ে ৩ ঘন্টা কাটিয়ে দিয়েছি!! তখন নিজের উপর রাগ ও লাগছিলো! কেন যে বলেছিলাম আনতে! তবে রান্নার পর খেয়ে দেয়ে মনে হচ্ছিলো, এই খাবার টা আসলে সময় ডিজার্ভ ও করে। খেতে যেটা একটু বেশিই ভালো, আবার খাদ্যগুণেও ভরপুর, তার জন্য একটু কষ্ট করা যায়ই... তখন বুঝেছি, আসলে কেন মাও মাঝে মাঝে এই ভেজালের জিনিস এনে রান্না করতো আগ্রহের সাথে!! সময়ের ব্যবধানে অনেক কিছুই করে মানুষ। যা আগে কখনো ভাবেও নি, সেটাও করে বসে কৌতুহলী হয়ে, কিংবা আগে যা বোঝার বাহিরে ছিলো, সেটাও হয়তো সময়ের রকম ফের এ নিজে নিজেই উপলব্ধি করতে পারে..... এসব উপলব্ধি কিংবা পরিবর্তন সময়ের ব্যাপার মাত্র...

এতক্ষণ সময় নিয়ে আমার পোষ্টটি পড়ার জন্য আপনাকে
🌼 ধন্যবাদ 🌼

VOTE @bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png OR
@rme as your proxy
witness_vote.png

photo_2021-06-30_13-14-56.jpg

IMG_20211205_182705.jpg

আমি- তিথী রানী বকসী, স্টিমিট আইডি @tithyrani। জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। পেশায় একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার। বিবাহিতা এবং বর্তমানে রাজধানী ঢাকায় বসবাস করছি।২০২৩ সালের জুন মাসের ১৯ তারিখে স্টিমিটে জয়েন করেছি।
ভ্রমণ করা, বাগান করা, গান শোনা, বই পড়া, কবিতাবৃত্তি করা আমার শখ। পাশাপাশি প্রতিদিন চেষ্টা করি নতুন নতুন কিছু না কিছু শিখতে, ভাবতে। যেখানেই কোন কিছু শেখার সুযোগ পাই, আমি সে সুযোগ লুফে নিতে চাই৷ সর্বদা চেষ্টা থাকে নিজেকে ধাপে ধাপে উন্নত করার।



Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last year 

ঠিকই বলেছেন দিদি, মোচা ছাড়াতে যা কষ্ট! উফ ভাবলেই খাবার ইচ্ছে চলে যায়৷ এদিকে থোড় মোচা সবই আমার অত্যন্ত প্রিয় খাবার৷ তবে আমি আবার যেদিন ছাড়াই সেদিন রান্না করি না৷ সময়ই কুলোয় না৷

কি রান্না করলেন দিদি মোচার? ডাল?

 last year 

আসলেই, একদিনে করা সময়সাপেক্ষ বিষয়! আমিও একই দিনে করি নি। আতপ চাল আর আলু দিয়ে ঘন্ট করেছি আবার বড়াও করেছি এই মোচা দিয়ে... দুটোই অসাধারণ হয়েছে 😋

 last year 

কলার মোচা দিয়ে তরকারি রান্না করা সত্যিই অনেক কষ্টসাধ্য বিষয় এবং আমার মা এখনও মাঝে মাঝে এই রেসিপি রান্না করে তবে আমি খুব একটা বেশি এ ধরনের রেসিপি রান্না করি না। এতে প্রচুর পরিমাণে সময় অতিবাহিত হয় তারপরও আপনার রান্নাটি দেখেই তো জিভে জল চলে আসলো। আশা করছি একদিন বাসার রান্না করে সবাইকে খাওয়াবো।

 last year 

অনেক কষ্টের বিষয় আপু কলার মোচা পরিষ্কার করা, সময় সাপেক্ষ। আমার ঘন্টা তিনেক লেগেছে... তবে খেতে ভীষণ মজা.. 😋😋

 last year 

কলার মোচা! বাহ, চমৎকার একটি খাবারের বা তরকারির আইটেম বেছে বেছে রান্নার জন্য প্রস্তুত করেছেন। ৩ ঘন্টা ধৈর্য্য ধরে তা তৈরি করা সবার দ্বারা সম্ভব নয়।

আমি ভাবছি এই মোচা দিয়ে কাঁচা অবস্থায় ভর্তা করে খাওয়ার যে ব্যপারটা। ছোটবেলায় অনেক খেয়েছি, বড়বেলায় যে খাইনি তা নয়। তবে কলাগাছ থেকে অনেকটা দূরে বিধায়, তা বছরে দু একবার আস্বাদন করা হয়।

যা হোক, রেসিপি আইটেমটি বেশ ভালোই লেগেছে। রন্ধনপ্রনালী সম্পর্কে জানলে আরো ভালো লাগবে। ধন্যবাদ।

 last year 

কলার মোচা কাঁচা ভর্তা আবার আমি কখনো খাই নি! আপনার থেকে শুনে এখন লোভ লাগছে। আর অবশ্যই এই রেসিপি আপনাদের সাথে শেয়ার করার ইচ্ছে আছে।

 last year 

কলার মোচা রান্না করে কখনো খাওয়া হয়নি। আমরা এই কলার মোচাকে কাঁচা অবস্থাতেই বিভিন্ন রকমের আচার দিয়ে মেখে খাই। তিন ঘন্টা কাটিয়ে দিলেন এটার পেছনে। এই কাজগুলো করতে আসলেই সময় লাগে। তবে রান্না করার পর তৃপ্তি করে খেতে পারলে কষ্ট সার্থক হয়।

 last year 

তাই নাকি.. আমি অবশ্য কাঁচা অবস্থায় খাই নি কখনো। পরের বার ট্রায় করে দেখতে হবে! আর হ্যাঁ, আসলেই পরের তৃপ্তি টার কারণে ই কষ্ট টা গায়ে লাগে না।

 last year 

আসলে দিদি সময়ের সাথে সাথে সবকিছুই পরিবর্তন হয়। আমি নিজেও এক সময় কোন কাজ করতাম না। এখন আমাকে ঘরের অনেক কাজ করতে হয়। তাছাড়া অনেক মেয়েরা রয়েছে যারা বাবার বাড়ি থাকতে তেমন একটা রান্নাবান্না করে না, কিন্তু শ্বশুর বাড়ি এসে তাদের ঠিক রান্না করতে হয়। যাইহোক, দিদি কলার মোচা রান্না করা যদিও একটু কঠিন, তবে রান্নার পর খেতে কিন্তু বেশ ভালই লাগে। আপনার পুরো প্রসেস কমপ্লিট করতে যেহেতু তিন ঘন্টা লেগেছে, তার মানে অনেকটা সময় লেগেছে বলা যায়।

 last year 

জ্যা ভাই৷ একদম! সময়ের সাথে সাথে অনেক কিছুই পরিবর্তন হয়। লহুব সুন্দর উদাহরণ দিয়েছেন আপনি।