রংপুরে ছড়াচ্ছে অ্যানথ্রাক্স, আতঙ্ক নয় চাই সচেতনতা
আমি @riyadx2 বাংলাদেশ থেকে
শনিবার, ০৪ ই অক্টোবর ২০২৫ ইং
সম্প্রতি রংপুর জেলাসহ আশপাশের কিছু এলাকায় অ্যানথ্রাক্স সংক্রমণের খবর ছড়িয়ে পড়েছে। এতে অনেকের মনে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। কিন্তু অ্যানথ্রাক্স এমন কোনো নতুন রোগ নয়, এটি বহু পুরনো একটি সংক্রমণ যা মূলত গবাদি পশুর শরীর থেকে মানুষের মধ্যে ছড়ায়। আতঙ্কের কিছু নেই, তবে সচেতনতা ও সতর্কতা অত্যন্ত জরুরি। কারণ এই রোগ প্রতিরোধযোগ্য, শুধু প্রয়োজন সঠিক তথ্য জানা এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।অ্যানথ্রাক্সের জীবাণু মূলত মাটি, পশুর লোম, চামড়া বা রক্তের মাধ্যমে ছড়ায়।
আক্রান্ত গরু, ছাগল, ভেড়া বা মহিষের সংস্পর্শে এলে মানুষও সংক্রমিত হতে পারে। অনেক সময় অসুস্থ পশু জবাই করার সময় বা মৃত পশুর মাংস ও চামড়া স্পর্শ করার মাধ্যমেও অ্যানথ্রাক্স ছড়ায়। বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায়, যেখানে পশুপালনই জীবিকার একটি প্রধান উৎস, সেখানে এই সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বেশি।রোগটি সাধারণত তিনভাবে মানুষের শরীরে প্রবেশ করতে পারে ত্বকের মাধ্যমে, খাবারের মাধ্যমে এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে।
এর মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ হলো ত্বকজনিত অ্যানথ্রাক্স। আক্রান্ত স্থানে প্রথমে লাল ফুসকুড়ির মতো দাগ হয়, পরে তা ফুলে ওঠে এবং ক্ষত সৃষ্টি করে। শুরুতেই চিকিৎসা না নিলে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। তবে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করলে এই রোগ পুরোপুরি সেরে যায়।রংপুর অঞ্চলে যেসব এলাকায় অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত হয়েছে, সেখানে মূলত গবাদি পশুর সংস্পর্শে আসা মানুষরাই আক্রান্ত হচ্ছেন। অনেকেই জানেন না যে অসুস্থ পশু জবাই করা বা মাংস বিক্রি করা কতটা বিপজ্জনক হতে পারে।
তাই প্রথমে যা করতে হবে তা হলো অসুস্থ বা মৃত পশু জবাই থেকে বিরত থাকা। এমন কোনো পশু মারা গেলে সেটি দ্রুত মাটিচাপা দিয়ে ফেলতে হবে এবং চারপাশে জীবাণুনাশক ছিটিয়ে দিতে হবে।অ্যানথ্রাক্স প্রতিরোধের অন্যতম কার্যকর উপায় হলো গবাদি পশুর টিকা দেওয়া। সরকার প্রতি বছর নির্দিষ্ট সময়ে অ্যানথ্রাক্স প্রতিরোধে পশু টিকাদান কর্মসূচি চালু করে থাকে। অনেক সময় পশুপালকরা অবহেলা করে টিকা না দেওয়ায় রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই এই বিষয়ে স্থানীয় কৃষি ও প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা এবং নিয়মিত টিকা দেওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন।
মানুষের মধ্যে যদি অ্যানথ্রাক্সের লক্ষণ দেখা দেয়, যেমন—চামড়ায় কালচে দাগ, জ্বর, দুর্বলতা, ক্ষতস্থানে পুঁজ বা ব্যথা—তাহলে দ্রুত নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেতে হবে। এই রোগে ভয় পাওয়ার কিছু নেই, কারণ অ্যান্টিবায়োটিকের মাধ্যমে এটি নিরাময়যোগ্য। তবে দেরি করলে জটিলতা তৈরি হতে পারে।সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, অ্যানথ্রাক্স নিয়ে আতঙ্ক নয়, সচেতনতা দরকার। ভুল ধারণা বা গুজব ছড়িয়ে মানুষকে ভয় দেখানো নয়, বরং সঠিক তথ্য প্রচার করাই এখন জরুরি।
মিডিয়া, প্রশাসন, স্বাস্থ্যকর্মী এবং সাধারণ জনগণ সবাই মিলে যদি সতর্কভাবে কাজ করে, তবে অ্যানথ্রাক্সের সংক্রমণ দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।
Device | iPhone 11 |
---|---|
Camera | 11+11 MP |
County | Bangladesh |
Location | Rangpur, Bangladesh |
Vote@bangla.witness as witness