কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা AI, এক প্রযুক্তিগত বিপ্লব।।
বাংলা ভাষার কমিউনিটি
হ্যালো বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই, আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভাল আছেন। কয়েকদিন আগে দুপুরে লাঞ্চ করার সময় আমার ওয়াইফ আমার কাছে AI সম্পর্কে জানতে চাইলো। আমি তাকে পাল্টা প্রশ্ন করলাম হঠাৎ করে AI সম্পর্কে জানার আগ্রহ হলো কেন...?
সে জানলো তার ছোট বোন না কি তার কাছে AI সম্পর্কে জানতে চেয়েছে। তার ছোট বোন মাদ্রাসার স্টুডেন্ট, AI সম্পর্কে তাদের কোন সাবজেক্ট নেই। আর বাংলাদেশের কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই এখন পর্যন্ত AI নিয়ে কোন সাবজেক্ট অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে আমিই গুগল, ইউটিউবে সার্চ করে AI সম্পর্কে জানার চেষ্টা করলাম। কয়েকদিন যাবৎ বিভিন্ন মাধ্যমে AI সম্পর্কে যা জ্ঞান অর্জন করলাম, সে গুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। ভুল হলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।
আজ আমি এমন এক প্রযুক্তির কথা বলব, যা ইতিমধ্যেই আমাদের জীবনে গভীরভাবে প্রভাব ফেলেছে, এবং ভবিষ্যতে আরও বেশি পরিবর্তন আনবে। আর সেটা হলো AI( Artificial Intelligence) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। আমরা প্রতিনিয়ত যেসব আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত হচ্ছি, তার পেছনে মূল চালিকা শক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে এই AI। চলুন তাহলে জেনে নেই, AI আসলে কী, কে প্রথম তৈরি করেছেন, এটি কিভাবে কাজ করে, এর সুবিধা-অসুবিধা এবং ভবিষ্যতের পৃথিবীতে এর সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে বিস্তারিত....
AI কী?
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা AI হলো এমন একটি প্রযুক্তি, যার মাধ্যমে কম্পিউটার বা যন্ত্রপাতি মানুষের মতো চিন্তা করতে পারে, শেখে, সিদ্ধান্ত নেয় এবং নিজে থেকেই কাজ করতে পারে। সহজভাবে বললে AI মানে হলো মেশিনকে এমনভাবে তৈরি করা, যাতে সেটি মানুষের বুদ্ধিমত্তার অনুকরণ করে কাজ করতে পারে। যেমন-মুখ চিনে ফেলা, ভয়েস কমান্ড বুঝে কাজ করা, বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেওয়া, ড্রাইভারবিহীন গাড়ি চালানো,রোগ নির্ণয় করা, খাবার পরিবেশ করা এইসবই AI-এর দৃষ্টান্ত। মোটামুটি সব কিছুই এখন AI দিয়ে করার চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রতিদিন এটি আপডেট করার চেষ্টা চলছে।
AI এর উদ্ভব ও ইতিহাস
AI-এর ধারণা প্রথম উঠে আসে ১৯৫৬ সালে আমেরিকার ডার্টমাউথ কলেজে আয়োজিত একটি সম্মেলনে। সেই সম্মেলনে কম্পিউটার বিজ্ঞানী John Mc- Carthy- Artificial Intelligence শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন। তিনিই AI-এর জনক হিসেবে পরিচিত।
AI কিভাবে কাজ করে?
AI-এর মূল শক্তি হলো ডেটা বা তথ্য। এটি কয়েকভাবে কাজ করে ডেটা সংগ্রহ করা,ডেটা বিশ্লেষণ করে শেখা, ডেটার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ, ফিডব্যাক দেওয়া ইত্যাদি।
AI-এর সুবিধা
AI আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অসংখ্য সুবিধা এনে দিয়েছে। এটি দ্রুত ও নির্ভুল সিদ্ধান্ত নিতে পারে, যা ব্যবসা, চিকিৎসা, শিক্ষা এবং নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটিয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, AI প্রযুক্তি রোগ নির্ণয়ে ডাক্তারকে সহায়তা করছে, শিক্ষার্থীদের জন্য কাস্টমাইজড লার্নিং তৈরি করছে, ব্যবসার ক্ষেত্রে কাস্টমার বিহেভিয়ার বিশ্লেষণ করে সেলস বাড়াচ্ছে এবং নিরাপত্তার জন্য মুখ চিনে পরিচয় শনাক্ত করছে। সিকিউরিটির কাজ করছে।
AI-এর অসুবিধা
যদিও AI অনেক উপকারে আসছে, তবুও এর কিছু বড় অসুবিধাও রয়েছে। সবচেয়ে বড় শঙ্কা হলো চাকরি হারানোর ভয়। অনেক কাজ AI দ্বারা অটোমেটেড হওয়ায় মানুষের প্রয়োজন কমে যাচ্ছে। আবার AI যদি ভুল ডেটা থেকে সংগ্রহ করে, তাহলে ভুল সিদ্ধান্ত নিতে পারে। গোপনীয়তা লঙ্ঘন, পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ এবং AI-এর নিয়ন্ত্রণ হারানোর আশঙ্কাও রয়েছে। তাই প্রযুক্তির ব্যবহারের পাশাপাশি এর নৈতিক দিকেও নজর দেওয়া জরুরি। চোখ বন্ধ করে শুধু AI এর উপর বিশ্বাস করা যাবে না। কারন তথ্য ভুল হলে AI এর সিধান্তও ভুল হবে।
ভবিষ্যতে AI-এর প্রভাব
আগামী দিনে AI পৃথিবীর অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রভাব বিস্তার করবে। এটি মানুষের সঙ্গে মেশিনের সহযোগিতাকে আরও গভীর করবে। অফিসে, হাসপাতালে, স্কুলে, ট্রান্সপোর্টে, সব জায়গায় AI ব্যবহারের হার বাড়বে। তবে প্রয়োজনীয় আইনি কাঠামো ও নীতিমালা প্রণয়ন করে এই প্রযুক্তিকে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে হবে।
AI নিঃসন্দেহে আমাদের সময়ের অন্যতম বড় আবিষ্কার। এটি আমাদের জীবনকে সহজ, গতিশীল ও বুদ্ধিদীপ্ত করতে পারে। তবে এই প্রযুক্তিকে শুধুমাত্র লাভের জন্য নয়, মানবতার কল্যাণে ব্যবহারের জন্য সচেষ্ট হতে হবে। সঠিকভাবে ব্যবহৃত হলে AI হতে পারে মানবজাতির অন্যতম শ্রেষ্ঠ বন্ধু। আর অপব্যবহার হলে তা ভয়ংকর রূপ নিতে পারে। তাই প্রযুক্তির বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের দায়িত্বশীলতাও যেন বাড়ে সে দিকেও নজর দিতে হবে। AI প্রযুক্তি নিয়ে সচেতন হওয়া সময়ের দাবি। এটি যেন আমাদের নিয়ন্ত্রণ না করে, বরং আমরা যেন এটিকে নিয়ন্ত্রণ করে মানবতার কল্যাণে কাজে লাগাতে পারি সেই চেষ্টাই হওয়া উচিত প্রতিটি প্রযুক্তিপ্রেমী মানুষের।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
https://x.com/RamimHa74448648/status/1937097279791665333?t=g6pwPOXtPFlRlR8RdggBVw&s=19
https://x.com/RamimHa74448648/status/1937116738996285639?t=ynh2Hm7oKt_VkN_GsSbX-w&s=19