আদিলার জন্মদিনে ট্রিট দেওয়ার একটি মধুময় মুহূর্ত।

in আমার বাংলা ব্লগlast year

সবাই কেমন আছেন?


আমার বাংলা ব্লগ এর @amarbanglablog সকল ব্লগার ভাই ও বোনেরা আসসালামু আলাইকুম? আশা করি সবাই পড়ন্ত বিকেলে ক্লান্ত সময় কাটাচ্ছেন। যেহেতু অনেক গরম সারাদিন অফিস শেষ করে শেষ বিকেলে সবাই অনেক বেশি ক্লান্ত হয়ে যায়। তাই সবাই চেষ্টা করেন একটু বিশ্রাম নেওয়ার। যেহেতু বাইরে অনেক গরম। যারা সাধারন মানুষ আছেন তারাই অনেক বেশি কষ্টে আছেন। আর যারা অফিসে কাজ করেন হয়তো তারা একটু সুখে শান্তিতে থাকেন যেহেতু সব জায়গায় এখন এসির ব্যবস্থা রয়েছে। আর যারা রান্নাঘরে কাজ করেন তারা বুঝেরন রান্না করতে গরম কাকে বলে হি হি হি। আজ তো আমার বেশ খারাপ অবস্থা হয়ে গেছিল রান্না করতে গিয়ে। খেতেও ইচ্ছে করতেছে না আর রান্নাও করতে ইচ্ছে করতেছে না এত গরমের মধ্যে। যাক তারপরও যখন পেট আছে পেটের দায়ে খাওয়া-দাওয়া করতে হবে যেহেতু শরীরকে সচল রাখতে হবে। সবকিছু মিলিয়ে যাচ্ছে জীবন বেশ ব্যস্ততা এবং গরমের অস্থিরতার মধ্যে।

rr.jpg

শত কষ্টের মাঝেও শত অস্থিরতার মাঝেও চেষ্টা করি নিজের ধারাবাহিক কাজগুলো করে নিতে। তাই কাজের প্রতি কোন অবহেলা নেই সব গরম এক সাইডে রেখে দিয়ে কাজ গুলো আগে করে নিতে চেষ্টা করি। আজকে আমি উপস্থিত হয়েছি মেয়ের জন্মদিনের ট্রিট দেওয়ার একটি মুহূর্ত নিয়ে। আপনারা যারা আমার আগের পোস্ট পড়েছেন অবশ্যই অনেকেই জানেন জন্মদিনের সময় আমি বাচ্চাদের জন্য খতমে কোরআন তেলওয়াতের ব্যবস্থা করি। যেহেতু কেক কাটা সেটা একটি স্বাভাবিক বিষয় যে কোন সময় কেক কাটা যায় বাচ্চাদেরকে নিয়ে। ছোট বাচ্চা মানুষ তাই আনন্দ করে একটা কেক কাটে সেটা এত বেশি আহ্লাদি বিষয় নয়। আমি চিন্তা করি আধ্যাত্মিক কিছু কাজ করতে।

r.jpg

r1.jpg

যেটা আমি চিন্তা করেছিলাম প্রতি বছর মেয়ের জন্মদিনের সময় প্রথমে খতমে কোরআন এবং দোয়ার আয়োজন করার জন্য। সেটা অবশ্যই হয়ে থাকে এই বারেও আদিলার জন্মদিনে তা হয়েছিল। রাইদার জন্মদিনেও তাই করে থাকি না হয় মেয়ে মন খারাপ করবে। বেশ কিছুদিন হল বলতে পারেন নভেম্বরে দিকে মেয়ের জন্মদিন ছিল। সেই দিন আমরা হুজুরকে দাওয়াত করি বাসায়। তাদেরকে খাওয়া-দাওয়া করালাম এবং ভালোমতো বকশিশ দিয়ে তারা যখন বিদায় নিয়ে চলে যায় তখন আমরা প্ল্যান করলাম। বাইরে খাওয়া দাওয়া করবো মেয়েকে একটু খুশি রাখবো। যেহেতু আমি একা মানুষ মেহমানদেরকে ডেকে এনে কেক কাটা খাওয়া দাওয়া করা আমার জন্য খুবই কষ্ট হয়ে যায়।

r5.jpg

r8.jpg

আজকাল দেখবেন কাউকে যখন জন্মদিনে কিংবা কোন গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে ইনভাইট করতে কল দিবেন তখন এমন ভাব দেখায় যেন সেই আকাশ থেকে পড়ে গেছে নিচে সবে মাত্র। অমুক তমুক বেশ বাহানা। দরকারটা কি খেতে ডাকলে তাদের এত বাহানা ভালো লাগেনা। যাক সেই ভাব দেখানো নিয়ে আর কথা বলতেছি না। যদিও একা মানুষ মাঝে মধ্যে খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করি কেক কাটার ব্যবস্থা করি। কিন্তু এবারে সাদামাটা শুধু হুজুরদেরকে ডেকে খতমে কোরআনের আয়োজন করেছিলাম দোয়ার আয়োজন করেছিলাম। সেই সাথে তাদেরকে বেশ ভালো মতো খাওয়া দাওয়া করানো হলো।

r6.jpg

এরপরে আমরা চিন্তা করলাম বাইরে খাওয়া-দাওয়া করবো সেদিন। তাই আমরা সবাই চলে যাই সন্ধ্যা আটটার দিকে। যদিও সেই দিন ওয়েদার টা তেমন ভালো ছিল না। বাইরে বৃষ্টি ছিল এর আগে যেহেতু প্রচুর বৃষ্টি ছিল সেই দিন একটু কম ছিল। শীতের আগে আগে দিনটি ছিল। তখন আমরা কোন কিছু তোয়াক্কা না করে দুই বাচ্চাদেরকে নিয়ে চলে যাই। যেহেতু মেয়ের বাবা আগে থেকে মেয়েদে নিয়ে সেই রেস্টুরেন্টে হাজির। আমি একটু পরে গেছি রিকসা নিয়ে। অবশ্যই আমরা যে রেস্টুরেন্টে গিয়েছিলাম সেটা হচ্ছে কয়লা রেস্টুরেন্ট। আপনারা অনেকে নাম শুনে থাকবেন। রেস্টুরেন্ট একদম লাবনী পয়েন্টের মোড়ের মধ্যে অনেক নামকরা একটি রেস্টুরেন্ট কয়লা রেস্টুরেন্ট। সেখানে আবার আবাসিক হোটেলও রয়েছে।

r2.jpg

r3.jpg

তবে আমরা যে রেস্টুরেন্টে গেছি সেটা হচ্ছে কয়লা রেস্টুরেন্টের আর একটি নতুন শাখা। এই রেস্টুরেন্ট এ আমার কখনো যাওয়া হয়নি আগে এই প্রথম গিয়েছিলাম। যাওয়ার পরেই খাবারের মেনু দেখে আমরা খাবার অর্ডার করে দিলাম। যেহেতু আমরা ডিনার করবো না তাই বাচ্চারা চিকেন স্পাইসি খাবে। তাই চারজনের জন্য চিকেন স্পাইসি কাবাব অর্ডার করে দিলাম। সেই সাথে নান রুটি ছিল এবং কোল্ড্রিংস ছিল। তো আমরা বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলাম সেখানে। যেহেতু খাবার গুলো রেডি করে আনতে সময় হবে। খাবার রেডি করে আনতে আনতে আমি এদিক সেদিক হাঁটাহাঁটি করছিলাম জায়গাটি বেশ সুন্দর ছিল। বিশেষ করে ভিতরের ডেকোরেশন গুলো খুবই সুন্দর ছিল। তাছাড়া ঠান্ডা ওয়েদার ছিল বাইরে বৃষ্টি হচ্ছিল।

r7.jpg

r11.jpg

বেশ কিছুক্ষণ পরে খাবার এসে হাজির। আপনারা অবশ্যই খাবারের ফটোগ্রাফি গুলো দেখে বুঝতে পারছেন। বেশ বড় বড় সাইজের চিকেন কাবাব গুলো। তাছাড়াও চিকেনের সাথে তিনটি মসলার আইটেম দিয়েছিল। একটি হচ্ছে আচারের আইটেম। একটি হচ্ছে পুদিনার সাথে গ্রিন ঝাল সস। তাছাড়া ও ছিল পেঁয়াজের সাথে মিক্স সালাদ। ভিন্ন ধরনের খেতে খুবই সুস্বাদু ছিল সালাদ আইটেম টি। আমি তো সালাদ দুইবার এনেছিলাম তাদের বলে এতই ভালো লাগছিল খেতে। যেহেতু আমি রাতে খাবার খাব না আর তাই সালাদ দিয়ে পেট ভরাই নিয়েছিলাম। আর নান রুটি গুলো খুবই সুস্বাদু ছিল।

r9.jpg

r10.jpg

বাচ্চারা বেশ ভালোভাবে খাওয়া দাওয়া করলো। যেহেতু তারা চিকেন কাবাব পেয়েছিল তাই আর কোন কথাই বলছিল না। তাদের মনের মত খাবার হলেই কোন আওয়াজ থাকে না। কিছুক্ষণ বসলাম খাওয়া-দাওয়া শেষ করে। খাওয়া-দাওয়া শেষ করার পরে দেখলাম বেশ রাত হয়ে গেল রাত ১১ টা পার হয়ে গেল। যেহেতু বৃষ্টিময় একটি রাত ছিল তাই আমরা সোজা বাসায় চলে আসার জন্য চেষ্টা করছিলাম। বাইরে যেয়ে আরো কয়েকটি ফটোগ্রাফি নিলাম। রিক্সা ডেকে এনে আমরা রিকসাতে উঠে সোজা বাসায় চলে আসি।

r12.jpg

মুহূর্তটি খুব মধুর ছিল যদিও ফোনের গ্যালারিতেই ছবিগুলো পড়ে থাকছিল আমার মনেও ছিল। আজ যখন মোবাইল হাতে নিলাম কি পোস্ট করবো তখন সেই দৃশ্য গুলো আমার চোখে পড়ে। তাই আজকে আপনাদের সাথে সেই সুন্দর মুহূর্তটি শেয়ার করে নিলাম। আশা করি বন্ধুরা আমার আজকের সুন্দর একটি মুহূর্ত আপনাদের কাছে ভালোই লাগবে।

r4.jpg

24QmLBi2hi5sxeF4rfhXesN4Z3rEWTikWPFADtR6zyMx1Eh2qs4cCyucf3FD7ahStNw2cTHPk2QiaQacbQjJNEWnuhyjY1PXfUUMr27ifyD15nkQhFHksgx6bm9BxYLdCkQDMy8JhQrktZHYy6njdzRU4bQ9b1d2xjCdoVzCDDY85pLPq2s7FhKBwPjpuHdozHaReDxEaFH2aYse13zaqogf9utVshuSban6ex1saRA.png

ডিভাইসের নামWiko,T3
মডেলW-V770
Location কয়লা রেস্টুরেন্ট কক্স
ফটোগ্রাফার@samhunnahar
ক্যাটাগরিলাইফ স্টাইল


সবাইকে অনেক ধন্যবাদ সময় দিয়ে আমার ব্লগটি ভিজিট করার জন্য।

268712224_305654151337735_1271309276897107472_n.png

আমার পরিচয়


hira.jpeg

আমি সামশুন নাহার হিরা। আমার ইউজার আইডি @samhunnahar। আমি আমার বাংলা ব্লগে কাজ করছি বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে। আমি বাংলা ভাষায় লিখতে-পড়তে ভালবাসি। আমি রান্না করতে পছন্দ করি। ভ্রমণ আমার প্রিয় একটি নেশা। আমি বিভিন্ন ফটোগ্রাফি করতে পছন্দ করি। আমি আমার মনের ভাব বাংলায় প্রাকাশ করতে পেরে অনেক আনন্দিত। তার জন্য আমার প্রাণের কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"কে অনেক ভালবাসি।
D5zH9SyxCKd9GJ4T6rkBdeqZw1coQAaQyCUzUF4FozBvW7DiLvzq9baKkST8T1mkhiizFXSFVv2PXDydTeMWpnYK2gToiY733FT9uwSdBSXWz7RnGmzsa8Pr9pGoyYaQFsuS3p.png

New_Benner_ABB1.png

Sort:  
 last year 

অনেক সুন্দর একটি মুহূর্ত আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন আপনি। আপনার এই অসাধারণ মুহূর্তটা দেখে বেশ ভালো লাগলো আমার। ভালো খাবার পেলে শুধু বাচ্চারা কেন সবাই মুখ বন্ধ রেখে খাওয়ার চেষ্টা করে। তবে যাই হোক সুন্দর অনুভূতি পড়ে ভাল লাগল।

 last year 

হ্যাঁ আপু বাচ্চারা তাদের পছন্দ মতো খাবার পেলে একদম চুপ থাকে।

 last year 

সুন্দর একটি মুহূর্ত আপনি আমাদের মাঝে ব্যক্ত করেছেন। বেশ ভালো লাগলো আপনার আনন্দঘন এই মুহূর্তটা দেখে। রেস্টুরেন্ট এর নাম যে কয়লা রেস্টুরেন্ট হয় এটা কিন্তু আমার প্রথম জানা। তবে যাই হোক খুব সুন্দর বর্ণনার সাথে উপস্থাপন করেছেন পড়ে খুবই ভালো লাগলো।

 last year 

অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া সময় দিয়ে ব্লগটি দেখলেন এবং অনুপ্রাণিত করলেন আমাকে।

 last year 

আপনার মেয়ের জন্মদিনের ট্রিট দেওয়ার মুহূর্ত টা অনেক সুন্দর করে শেয়ার করেছেন। বাচ্চারা নিজেদের জন্মদিনে কেক কাটতে অনেক বেশি পছন্দ করে। আসলে এটা কিন্তু একেবারে ঠিক কথা, কাউকে খাওয়ার জন্য দাওয়াত দিলে অনেকেই রয়েছে অনেক বেশি দেমাক দেখায়। আর এই বিষয়টা আমার নিজের কাছেও একেবারে ভালো লাগেনা। হুজুর চলে যাওয়ার পর আপনারা রেস্টুরেন্টে খাওয়া দাওয়া করার বিষয়টা চিন্তা করেছিলেন, আর রাতের বেলায় চলে গিয়েছিলেন খাওয়া-দাওয়া করার জন্য। দেখেই বুঝতে পারছি খাবারের মান খুব ভালো ছিল। আর সবাই মজা করে খেয়েছিলেন।

 last year 

আজকাল আপু মানুষকে খেতে ডাকলেও সমস্যা আবার না ডাকলেও সমস্যা। কোন দিকেই বোঝার উপায় নেই মানুষের মতিগতি। অনেক ধন্যবাদ আপু।

 last year 

জন্মদিন প্রত্যেকটা মানুষের জীবনে বছরে একবার আসে। যদিও আপনার মেয়ের জন্মদিন অনেক আগেই চলে গিয়েছে, আর আপনি ট্রিটের মুহূর্তটা অনেক সুন্দর করে শেয়ার করেছেন। খাবারের মেনু তো দেখছি অনেক বেশি ভালো ছিল। বাচ্চাদের জন্মদিনে যদি ঘরের ভেতরে একটা কেক এনে উদযাপন করা হয়, তবুও তারা অনেক বেশি খুশি হয়। খাওয়া দাওয়া করার মুহূর্তটা ভালোভাবেই উপভোগ করলাম পুরো পোস্ট পড়ে। আপনাদের কাটানো মুহূর্তটা অনেক সুন্দর করে সবার মাঝে আপনি সবার মাঝে ভাগ করে নিয়েছেন।

 last year 

খাবারগুলো আমার কাছে বেশ ভালোই লাগছিল ভাইয়া অনেক ধন্যবাদ সময় দিয়ে দেখলেন।

 last year 

আপু আপনার উপরের কথা গুলো পড়ে বেশ হাসি পেলো। বেশ মজা করে কথা গুলো বলেছেন। এই গরমে রান্না করা সত্যি অনেক কষ্টের কাজ। আপনার মেয়েদের জন্মদিনে আপনি প্রথমে খতমে কোরআন এবং দোয়ার আয়োজন করেন জেনে সত্যি ভীষণ ভালো লাগলো। আপনার মেয়েদের জন্য অনেক দোয়া রইল। আপনার মতো করে বেড়ে উঠুক এই কামনাই করি। ভালো থাকবেন আপু।

 last year 

সত্যি ভাইয়া গরম কি জিনিস রান্না ঘরে গেলে বোঝা যাবে। বিশেষ করে আপনারা তো বুঝতে পারবেন না একদিন রান্না ঘরে যেতে পারেন তাহলে আমাদের অবস্থাটুকু বুঝতে পারবেন হি হি হি।