ভাষা না জানার কারণে পড়ে গেল বিপদে এক রোগী
বন্ধুরা, সকলে কেমন আছেন ? আশা করি ভালোই আছেন, আমিও আলহামদুল্লিাহ ভাল আছি।
আমরা যারা অন্য দেশে বসবাস করি সে দেশের ভাষা জানা আমাদের খুবই জরুরী।আর ইংলিশ ভাষায় তো আন্তর্জাতিক, এ ভাষা জানাও সকলেরই দরকার।আর যে দেশে বসবাস করি সে দেশের ভাষা যদি জানা না থাকে তাহলে বিপদের আর সীমা থাকে না।হ্যাঁ বন্ধুরা হসপিটালে এক রোগীর ঘটনা আপনাদের সাথে শেয়ার করব।তার কথা চিন্তা করেই এই পোস্টটি আজ মাথায় এলো।যেহেতু ইংল্যান্ড একটি মাল্টিন্যাশনাল কান্ট্রি তাই এ দেশে পৃথিবীর সমস্ত দেশের লোকেরই বসবাস রয়েছে। সকলেরই ইংলিশ উচ্চারণ এক নয়। প্রথম যখন এ দেশে এসেছিলাম তখন আমারই কষ্ট হতো অন্যান্য দেশের ইংলিশ উচ্চারণগুলো বুঝতে। এরপর আমি ইংলিশে কোর্স করি, এছাড়া একটি কলেজেও ভর্তি হয়েছিলাম।এভাবে ধীরে ধীরে আমার ল্যাঙ্গুয়েজের উন্নতি হয় এবং পৃথিবীর সকল দেশের লোকজনের ইংলিশ উচ্চারণ গুলো বুঝতে পারি। যাইহোক বন্ধুরা এবার চলে যাচ্ছি আমার মূল গল্পে।
হসপিটালে থাকাকালীন কত রোগীর আসা যাওয়া দেখলাম। আমি যে ইউনিটে ছিলাম সেই ইউনিটের সবচেয়ে বেশিদিন হসপিটালে থেকেছি আমি, কারণ আমার অবস্থা ছিল বেশি খারাপ। বেশিরভাগ রোগীকে দেখেছি চার দিন, পাঁচ দিন সর্বোচ্চ সাতদিন থেকেছে, এমনকি দুই তিন দিনও থেকে চলে গিয়েছে। যাইহোক একজন রোগীকে দেখলাম তার বয়স আনুমানিক ৮০ থেকে ৮৫ হবে, খুবই বয়স্ক।রোগীর সাথে আরও দুই তিনজন লোক ছিল এবং তাদের দেখে মনে হচ্ছিল তারা আফ্রিকান। দেখে মনে হচ্ছিল রোগীর অবস্থা খুবই খারাপ।এরপর রোগীর আত্মীয়-স্বজন চলে যায় তাকে রেখে। এ দেশে রাতের বেলায় রোগীর সাথে হসপিটালে কারো থাকার অনুমতি নেই।এরপর দুইজন নার্স এসে রোগীর সাথে কথা বলার চেষ্টা করে। কিন্তু রোগী কোন কথাই বলছিল না, কারণ রোগী ইংলিশ ভাষা কিছুই বোঝে না।পরে জানতে পারলাম রোগীর দেশ ফ্রান্স।ফ্রান্স থেকে সে এই দেশে বসবাস করছে।এরপর সেখানে একজন নার্স ছিল যিনি ফ্রান্সের ল্যাঙ্গুয়েজ কিছু বোঝেন তিনি রোগীর সাথে একটু কথা বললেন, রোগীও তার কথা বুঝতে পারল। কিন্তু সব সময় তো সেই নার্সকে পাওয়া সম্ভব নয়, কারণ তার আরো অন্য ডিউটি রয়েছে।
এরপর রাতের বেলায় আবার যখন এসে রোগীকে ডাকে রোগী কোন রেসপন্স করে না শুধু বলে ‘উলা,। এরপর নার্সরা পড়ে যায় বিপদে। এরপর দেখি একটি ডিভাইস নিয়ে এসেছে।তারা ডিভাইসে ইংলিশ বলে আর ফ্রান্সের ল্যাঙ্গুয়েজ ট্রান্সলেট হয়। কিন্তু সেখানে মাঝে মধ্যে এক কথা বললে অন্য কথা চলে আসছিল।এ কারণে রোগী কিছু বুঝতে পারে, আর কিছু কথা মোটেই বুঝতে পারছিলনা। আমি শুধু শুনতে পারছিলাম নার্সরা বলছিল ওপেন ইওর মাউথ, বার বার এই বাক্যটি উচ্চারণ করছিল।রোগী কোন সারা শব্দ করছিল না।এরপর তারা পড়ে যায় মহা বিপদে। এরপর যে তার ল্যাঙ্গুয়েজ কিছুটা বুঝতো সেও ছিল না ওই সময় ডিউটিতে।এরপর দেখি তারা একজন ডক্টরকে নিয়ে এসেছে, সেই ডাক্তার ছিল ফ্রান্সের। এরপর ডক্টরের কথা রোগী বুঝতে সক্ষম হন। এরপর পরের দিন সকালবেলা ডাক্তার ও তাদের টিম আসে।তখন রোগীর অবস্থা বেশি খারাপ ছিল। কিন্তু রোগী তখন কোন কথাই বুঝতে পারছিল না।তখন ডাক্তার বলেন দ্রুত তার ফ্যামিলির লোকজনকে ডেকে আনা হোক।এরপর রোগের লোকজন ১০-১৫ মিনিটের মধ্যেই চলে আসে।এরপর ডক্টর যা বলল তারা তা রোগীকে বুঝিয়ে দিল।রোগীর অবস্থা এতই খারাপ ছিল যে পুরো এক্সরে মেশিনটা নিয়ে এসেছিল রোগীর বেডে।
চিন্তা করুন ভাষা না জানার কারণে কতটা বিপদে পড়েছিলেন সেই রোগী।এরপর পরের দিন আমি হসপিটাল থেকে রিলিজ নিয়ে চলে আসি।পরবর্তীতে রোগীর সাথে কি হয়েছে তা আর বলতে পারব না।
Photographer | @tangera |
---|---|
Device | I phone 15 Pro Max |
বন্ধুরা এটিই ছিল আমার আজকের আয়োজন।আশা করি আপনাদের ভালো লেগেছে।
ধন্যবাদ,
👉 আমাদের discord চ্যানেল এ JOIN করুন :
VOTE @bangla.witness as witness
OR
[

রোগী ইংরেজি ভাষা না জানার কারনে রোগী থেকে বেশি বিপদে পড়েছে নার্স এবং ডাক্তাররা। তারপরেও তারা তাদের সাধ্য অনুযায়ী যথা সম্ভব রোগীর কথা বুঝতে চেষ্টা করেছে। কিন্তু এটা যদি বাংলাদেশে হতো, ডাক্তার আর নার্স কি ব্যবহার করতো সেই চিন্তা করছি....।
যেহেতু রুগী বয়স্ক তাই সে ইংরেজি ভাষা শেখার প্রয়োজন মনে করনি। কিন্তু যে দেশে বসবাস করবো টুকটাক হলেও সেই দেশের ভাষা শেখাটা জ্রুরী। তা না হলে যে কোন বিপদে পরতে হতে পারে। যেমনা হয়েছে ফ্রান্সের রুগির ক্ষেত্রে। তবে নার্স ও ডাক্তাররা যথা সাধ্য চেস্টা করেছে তার কথা বোঝার ও চিকিৎসা করার।
আসলে বাহিরের দেশের ডাক্তার এবং নার্সরা রোগীদের ব্যাপারে বেশ আন্তরিক। এই ব্যাপারটা সত্যিই খুব ভালো লাগে। ফ্রান্সের সেই বয়স্ক রোগী ভাষা না জানার কারণে,ডাক্তার এবং নার্সরা বেশ ঝামেলায় পড়েছিল। যাইহোক বাহিরের দেশে বসবাস করলে,ভাষা জানাটা অত্যন্ত জরুরী। পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।