অখাদ্য!!!
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
বইয়ের প্রতি আমার ভালোবাসা আমার আগ্রহ যে একেবারে অল্প কিছুদিনের এমন টা ঠিক না। মোটামুটিভাবে বই পড়া শুরু করেছিলাম করোনার মধ্যে সেই ২০২০ সালে। সেই শুরু তারপর থেকে মোটামুটি ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছি। আমি প্রথম পড়া শুরু করেছিলাম বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় এর বই দিয়ে। ভদ্রলোকের ভাষা প্রয়োগ এতোটা অসাধারণ সেটা বলে বোঝাতে পারব না। বিশেষ করে যেকোনো বিষয় উনি যে দারুণ ভাবে ফুটিয়ে তোলেন সেটা বরাবরই আমার কাছে ভালো লাগত। বিভূতিভূষণের পাশাপাশি বাঙালি লেখকদের মধ্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, সমরেশ মজুমদার, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় এদের লেখাগুলো পড়েছি। পাশাপাশি কিছু বিদেশি লেখক এবং আমাদের দেশের বতর্মান সময়ের কিছু লেখকের আমি নিয়মিত পাঠক। তার মধ্যে একজন মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন।
এবার আসল ঘটনায় যায়। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে পদ্মজা উপন্যাস বই মেলায় বইটা আসে। লেখিকার নাম ইলমা বেহরোজ। ইতিপূর্বে ঐ লেখিকা ফেসবুকে লিখতেন। না সেটা খারাপ কিছু না। পরবর্তীতে কোন একটা প্রকাশনীর মাধ্যমে বইটা বইমেলায় বের করে। সেই বইমেলায় বইটা সম্ভবত বেস্ট সেলার হয়েছিল। বাহ একটা বই বেস্ট সেলার মানে অনেক ভালো বই হওয়ার কথা। আগ্রহ নিয়ে আমি একজনের থেকে বইটা নেয় পড়ার জন্য। সত্যি বলতে বইটার দাম ছিল অনেক বেশি প্রায় ৭০০ টাকা এর কাছাকাছি। তখন বইটা কেনা হয়নি। যাইহোক বইটা পড়া শুরু করার পড় খুব বেশি আর পড়তে ইচ্ছা হয়নি। আমার ক্ষেত্রে সাধারণত কী হয় প্রথমে পড়তে ভালো লাগে না। কিন্তু একবার বইয়ের কাহিনীর মধ্যে ঢুকে গেলে শেষ না করে আর রাখতে ইচ্ছা করে না। কিন্তু এই পদ্মজার ক্ষেএে হয়েছিল পুরোপুরি উল্টা।
কয়েকটা অধ্যায় পড়ার পড়ে আমি বইটা আর পড়িনি। আমার কাছে ঐটা কোন বই মনে হয়নি। ঐটা ছিল পুরোপুরি নিব্বা নিব্বিদের প্রেম কাহিনী। এই কথা বলছি এর কারণ একেবারে সস্তা প্রেম ভালোবাসার কাহিনী নিয়ে লেখা। বইটা পড়েই মনে হচ্ছে এ যেন স্টার জলসা জি বাংলা এবং হিন্দি সিরিয়াল হুবুহু কেউ লিখে দিয়েছে। এই পরিমাণ অখাদ্য ছিল সেটা। শুধু সেটা না লেখিকা আবার শরৎচন্দ্রের দেবদাস, শ্রীকান্ত এর কিছু জনপ্রিয় সংলাপ একেবারে সরাসরি সেখানে বসিয়ে দিয়েছে। এটা আমার কাছে খুবই হাস্যকর লেগেছিল। প্রথমত একেবারে সস্তা কাহিনী দ্বিতীয়ত এইরকম কপি পেস্ট। বিষয়টা কী রকম বাজে সেটা একজন বইপ্রেমি জানে। এখন আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে তাহলে বইমেলার মতো জায়গাই বইটা বেস্ট সেলার কীভাবে হলো? এবার সেটাই বলব।
আমাদের বতর্মান জেনারেশন খুব একটা বই পড়ে না। কোন লেখকের লেখা কেমন কেউ খোঁজও রাখে না। ২০২৪ এর বই মেলায় ঐসব নিব্বা নিব্বি ঐ উপন্যাস টা হাইপে কিনে নেয়। এবং সে আগে কখনও বই পড়েনি সেটা নিশ্চিত ভাবে বলা যায়। ঐরকম একটা অখাদ্য পড়ার পরে সরাসরি ফেসবুকে রিভিউ দিয়ে দেয় সেরা উপন্যাস এই সেই লিখে। এই শুরু হয়ে গিয়েছিল। এছাড়া অনেকের নেগেটিভ রিভিউ ছিল অবশ্য। পাশাপাশি অনলাইন বুক পেইজ গুলোর অতিরিক্ত প্রচারণা বইটাকে ট্রেন্ডিং এ নিয়ে আসে। এবং যারা জীবনে কোনদিন বই পড়েনি তারাই বইটা কিনতে শুরু করে। কারণ ঐ একেবারে সস্তা প্রেমের কাহিনী। আমার চাচাতো ভাইয়ের গার্লফ্রেন্ড ভাইয়ের কাছে আবদার করে বইটা কিনে দেওয়ার জন্য। উনিও কখনও নাকী বই পড়েনি। শেষে ভাইয়াও বইটা কিনে দেয়। এভাবেই বইটার সেল বেড়ে যায়। একটা অখাদ্য হয়ে যায় বেস্ট সেলার।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
Daily task
https://x.com/Emon423/status/1978008710854349088?t=f_Lkikl1Vxf9boN_Rp9OiQ&s=19