বই রিভিউ ;( আদর্শ হিন্দু হোটেল - বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ‍্যায় )।

in আমার বাংলা ব্লগlast year


আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।

আজ সোমবার, ১৩ ই মে , ২০২৪।

আমি @emon42.

বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে


1000554491.jpg


বই এর গুরুত্বপূর্ণ তথ‍্য



----------
বইয়ের নামআদর্শ হিন্দু হোটেল
লেখকবিভূতিভূষণ বন্দোপাধ‍্যায়
প্রকাশ'কাল১৯৪০
প্রকাশকসূর্যোদয় প্রকাশন
প্রথম প্রকাশ২০২১
প্রচ্ছদএম এ আরিফ
দাম২৮০ টাকা


বইয়ের কাহিনী সংক্ষেপ


1000554493.jpg

1000554505.jpg

1000554495.jpg


রাণাঘাটের বেচু চক্রবর্তীর হোটেলে রাধুনি এর কাজ করতেন হাজারি দেবশর্মা। হাজারির অসাধারণ রান্নার জন্য দূর দূরান্ত হতে বেচু চক্রবর্তীর দোকানে মানুষ ছুটে আসত। বিশেষ করে হাজারির মাংস রান্না খেয়ে কলকাতার বাবুরা পযর্ন্ত প্রশংসা করে যেত। কিন্তু হাজারি তার মালিক বেচু চক্রবর্তী এবং পদ্ম ঝি এর থেকে কখনো পুরষ্কার তো দূরে থাক দুইটা ভালো কথাও শোনে নাই। বিশেষ করে পদ্ম ঝি সবসময় তার পিছনে লেগে থাকত। হাজারি এই হোটেলে প্রায় ৭ বছর রাধুনির কাজ করছে। তার বেতন মাসিক সাত টাকা থাকা খাওয়া ফ্রি এবং বছরে দুইটা কাপড়। কিন্তু হাজারির অনেক বড় একটা স্বপ্ন ছিল। সে এই রেলবাজারে একটা হিন্দু হোটেল দেবে। কিন্তু অতো টাকা সে পাবে কোথায়।

প্রতিদিন ছুটির সময় হাজারি চূর্ণী নদীর ঘাটে বসে এসব চিন্তা করত। এই সাত বছরে হোটেলের সমস্ত কাজ সে শিখে নিয়েছে। এখন শুধু হোটেল টা দিয়ে সে দেখিয়ে দিবে কী করে সেটা চালাতে হয়। কিন্তু হোটেল দেওয়ার অতো টাকা তার নেই। তারই গ্রামের মেয়ে কুসুম। সে অল্প বয়সে বিধবা হয়েছে এই রাণাঘাটেই থাকে। হাজারি কে কুসুম তার বাবার মতো এবং হাজারি কুসুমকে মেয়ের মতো মনে করত। কুসুম নিজের গয়না বিক্রি করে হাজারি কে হোটেল করার টাকা দিতে চাইলে হাজারি সেটা নিতে চাই না। একপর্যায়ে চুরির দায়ে হাজারির চাকরি চলে যায়। কিন্তু সেই চুরি সে করেনি। তারপর হাজারি গ্রামে গ্রামে ঘুরতে থাকে। এই পর্যায়ে অন্য এক গ্রামের বাড়িতে সে রান্নার চাকরি পায়। তারা হাজারি কে অনেক সম্মান করত। হাজারির রান্না বলতে তারা পঞ্চমুখ ছিল। কিন্তু হাজারির মনে সুখ ছিল না।


1000554501.jpg

1000554502.jpg

1000554503.jpg

1000554504.jpg


গ্রামের বাবুর মেয়ে আতসী। হাজারির ছোট মেয়ে টেপির সাথে আতসীর বেশ মিল। বাবুর মেয়ে আতসী অনেক ভালো মেয়ে। সে হাজারির স্বপ্নের কথা শুনে হাজারিকে হোটেল করার জন্য তার জমানো ২০০ টাকা দিতে চাই। কিন্তু হাজারি সেটা নিতে চাই না। কিন্তু অনেক জোড়াজুড়ি করায় হাজারি রাজি হয় এবং বলে হোটেল যদি সে কখনও করে তাহলে সে তার টাকা নেবে। এরপর হাজারি একদিন আবার রাণাঘাটে আসে। এবং বেচু চক্রবর্তী দেখেই তাকে বলে কী ব‍্যাপার হাজারি এখানে কেন। হাজারি যাওয়ার পর থেকে বেচু চক্রবর্তীর হোটেলের অবস্থা খারাপ। সেজন্য বেচু চক্রবর্তী আবার হাজারি কে নিজের হোটেলে কাজে নিয়োগ দেয়। হাজারিও মহা আনন্দে কাজ শুর করে। হাজারি তার পুরানো মনিবের কথা ফেলতে পারে না। কিন্তু হাজারির মনে ঐ একটাই চিন্তা সে এখানে নিজের হোটেল দেবে। নাম হবে হাজারির আদর্শ হিন্দু হোটেল। হাজারি কী শেষ পযর্ন্ত আতসী এবং কুসুমের টাকা নেবে এবং হোটেল টা কী দেবে। সেটা জানতে হলে আপনাকে পুরো বইটা পড়তে হবে।



ব‍্যক্তিগত অনূভুতি



এই উপন‍্যাস টা আমাকে অনেক অনুপ্রেরণা দেয়। এইরকম সুন্দর উপন‍্যাস আমি আগে পড়িনি। একটা ছোট চাকরি করেও কীভাবে নিজের স্বপ্নকে বুকে লালন করে এগিয়ে যেতে হয় এখানে সেটাই দেখানো হয়েছে। পাশাপাশি বয়স যতই হোক মানুষের মধ্যে যদি কিছু করার ইচ্ছা আকাঙ্খা থাকে তাহলে বয়স কোন বিষয় না। এখানে হাজারির ক্ষেএে সেটা প্রকাশ পেয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে নিজের পুরানো মনীবের প্রতি সম্মান পদ্ম ঝি এর খারাপ আচরণ সহ‍্য করে নেওয়া সবকিছুই যেন একটা শিক্ষা। সবমিলিয়ে অসাধারণ লেগেছে আমার কাছে উপন‍্যাস টা।





সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।



IMG-20231027-WA0008.jpg

Facebook
Twitter
You Tube



অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।


আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।





Amar_Bangla_Blog_logo.jpg

Banner(1).png

3jpR3paJ37V8JxyWvtbhvcm5k3roJwHBR4WTALx7XaoRovUdcufHKutmnDv7XmQqPrB8fBXG7kzXLfFggSC6SoPdYYQg44yvKzFDWktyjCspTTm5NVQAdTm7UoN34AAMT6AoF.gif



Heroism_Second.png



Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last year 

এই বইটা আসলেই অনেক শিক্ষামূলক একটি বই, যদি শিক্ষাটা নিতে পারা যায়! আমিও বইটি পড়েছি। একটা মানুষ নিজের স্বপ্নের জন্য কতটা অধীর আগ্রহে থাকতে পারে, তার উদাহরণ কেউ হাজারী ঠাকুরের কাছে থেকে শিখুক! তিনি যখন যাই করুক না কেন, তার স্বপ্ন সবসময়ই তার চোখে ভাসতো... শুধু কী সেই স্বপ্ন পর্যন্তই? সবসময় নিজেকে পরের ধাপে এগিয়ে নিয়ে যেতেও তিনি কী ব্যাকুল! এমন মানুষ ই পারে জীবনে এচিভ করতে!

 last year 

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুন্দর একটি বই রিভিউ করে আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন ভাইয়া। খুবই ভালো লাগলো আপনার এই বই রিভিউ দেখে। চমৎকারভাবে রিভিউ এর কাজ সম্পন্ন করেছেন আপনি। বেশি অসাধারণ ছিল, আর নতুন একটা পড়া সম্পর্কে ধারণা পেলাম।

 last year 

বাহ খুবই চমৎকার একটি উপন্যাস রিভিউ করেছেন। যদিও এই উপন্যাসটি পড়া হয়নি তবে আপনার রিভিউ পড়ে খুব ভালো লেগেছে। যেখান থেকে হাজারি কে চুরির অপবাদ দিয়ে বের করা হয়েছে সেখানে আবার সে ফিরে এসেছে। মাঝে মাঝে এমন কিছু সময় থাকে যখন নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে পুরনো কথা ভুলে যেতে হয়। তাই হয়তো হাজারি আবার সেই পুরনো কাজ পেয়ে আনন্দ পেয়েছে কিন্তু তার মনে মনে একটাই চিন্তা সে হোটেল দেবে আর সে ক্ষেত্রে আতসী তাকে সাহায্য করতে চাচ্ছে। দেখা যাক হাজারি সেই সাহায্য নেবে নাকি আর হাজারির জীবনে পরবর্তীতে কি হয়?

 last year 

অনেক সুন্দর একটি বুক রিভিউ করে আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। বেশ ভালো লাগলো বুক রিভিউটা দেখে। বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ‍্যায় এর এই বইটা আমার পড়া হয়নি কখনো তবে নাম শুনেছিলাম, এই বিষয় সম্পর্কে কিছুটা ধারণা ছিল পূর্বে। আজকে আপনি আমাদের মাঝে খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন দেখে অনেক ভালো লাগলো।

 last year 

খুব সুন্দর একটি শিক্ষামূলক বইয়ের রিভিউ পোস্ট শেয়ার করেছেন ভাইয়া। বইটি চমৎকার। যদিও আমার পড়া হয়নি।তবে নামটি লিখে রাখলাম।সময় করে এনে পড়বো আশাকরি।স্বপ্ন পূরণের আশায় থাকা গল্প, তবে তো পড়তেই হয়।

 last year 

আসলে যোগ্যতা থাকলে যে কোনো মানুষ যে কোনো জায়গাতেই গিয়ে কাজ ঠিক পেয়ে যায়। ঠিক যেমন হাজারি কে চুরির অপবাদে বেচু চক্রবর্তী তাড়িয়ে দিলেও, সে ঠিক আবার অন্য জায়গায় কাজ জোগাড় করে নিতে পারল। বেচু চক্রবর্তীও দেখছি তাকে আবারও কাজে নিয়ে নিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হাজারি তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে কিনা, সেটা জানার আগ্রহ থেকেই গেল।

 last year 

হ‍্যা আপু হাজারির স্বপ্ন পূরণ হয়। এবং হাজারি নিজের হোটেলে তার মনীব বেচু চক্রবর্তী এবং পদ্ম ঝি কে চাকরি পযর্ন্ত দেয়।

 last year 

বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ‍্যায় এর আদর্শ হিন্দু হোটেল উপন্যাসটি আমার পড়া হয়নি। তবে আপনার বুক রিভেউতে যত টুকু পড়লাম তাতে,গল্পটা শেষ পর্যন্ত না জানা পর্যন্ত শান্তি পাবো। হাজারি কি শেষ পর্যন্ত তার স্বপ্নের হোটেল দিতে পেরেছে কিনা সেটা না জানা পর্যন্ত ঘুম আসবে না। ধন্যবাদ।

 last year 

বাহ দারুন একটি উপন্যাসের বুক রিভিউ দিয়েছেন। আমি যদিও উপন্যাস টি পড়ি নাই,তবে আপনার রিভিউ করা একটু অংশ পড়ে,দারুন লেগেছে। চেষ্টা করবো অনলাইন থেকে বের করে পিডিএফ ফাইল হলেও উপন্যাসটা পড়বো। ধন্যবাদ।