বুক রিভিউ (ইনফার্নো)। ১০% লাজুক শিয়ালের জন্য
আজ- ১৬ কার্তিক/ ১ নভেম্বর | ১৪২৯, বঙ্গাব্দ/২০২২ খ্রিষ্টাব্দ | মঙ্গলবার | হেমন্তকাল |
আসসালামু-আলাইকুম।
অনেকদিন যাবত পছন্দ মত কোন উপন্যাস পড়া হচ্ছিল না। সর্বশেষ যে বইটি পড়লাম আজ সেটারই রিভিউ শেয়ার করব আপনাদের সঙ্গে। ড্যান ব্রাউনের নাম আপনারা অনেকেই শুনেছেন। তিনি বিশ্ব সাহিত্যের একজন খ্যাতিমান লেখক। এই লেখকের একটি বিখ্যাত বই দা ভিঞ্চি কোড পড়ার পর তার লেখা সম্পর্কে আগ্রহ অনেকটাই বেড়ে গিয়েছিল। অবশেষে ইনফার্নো পড়ে শেষ করলাম। আমি গরিব পাঠক। বই কিনে পড়ার সামর্থ্য আমার নেই। বিশেষ করে এই ধরনের বড় উপন্যাসগুলো কিনতে গেলে ৪০০/৫০০ টাকা লেগে যায়। আর সত্যি বলতে কি এত বই কিনে পড়া অনেকটাই দুরূহ আমার জন্য। তাই আমার ভরসা পিডিএফ ভার্সন। বর্তমানে আধুনিক যুগে ইন্টারনেট থাকলে আর কি চাই। বইয়ের লাইব্রেরী আপনার হাতের মুঠোয়। চাইলেই দুনিয়া জোড়া বই নিমেষের মধ্যে আপনার চোখের সামনে পেয়ে যাবেন। সত্যি বলতে কি আমার মতো পাঠকদের জন্য এই অনলাইন লাইব্রেরীই একমাত্র ভরসা। যাই হোক কথা না বাড়িয়ে আসুন তবে মূল ঘটনার দিকে যাই।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্যঃ
বইয়ের নাম | ইনফার্নো |
---|---|
লেখকের নাম | ড্যান ব্রাউন |
অনুবাদক | মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন |
ধরন | রোমাঞ্চকর উপন্যাস |
প্রকাশনী | বাতিঘর |
প্রথম প্রকাশ | জুন ২০১৩ |
মূল্য | ৪০০ টাকা |
ISBN no | ৯৮৪৮৭২৯৬০ |
কাহিনী সংক্ষেপেঃ
উপন্যাসের প্রধান চরিত্র একজন আমেরিকান সিম্বলজির প্রফেসর। হঠাৎ করেই কাহিনী শুরু হয় বাড়ি থেকে কয়েক হাজার মাইল দূরে ইতালির এক শহরে অজ্ঞান অবস্থা থেকে তার জেগে ওঠার মধ্য দিয়ে। ধীরে ধীরে রহস্য উন্মোচনের মধ্য দিয়ে কাহিনী এগিয়ে যেতে থাকে। উপন্যাসের শেষ পর্যায়ে এসে আমরা জানতে অসাধারণ প্রতিভাধর একজন বিজ্ঞানী যিনি মনে করেন জ্যামিতিক হারে পৃথিবীর এই জনসংখ্যা বৃদ্ধি অচিরেই পৃথিবীকে ধ্বংস করে ফেলবে। যদি একে কোন ভাবে বাধা না দেয়া যায়। তিনি বিভিন্নভাবে যুক্তি-তর্ক আর প্রমান দ্বারা নিশ্চিত হন এই ধ্বংস খুব দ্রুতই আসন্ন। আর এটা অলঙ্ঘনীয়। সারা পৃথিবীব্যাপী এ বিষয়ে মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করে তিনি ব্যর্থ হন। অবশেষে তিনি এমন একটি ভাইরাস তৈরি করেন যা কিনা এই সমস্যা সমাধানে ১০০% কার্যকর। উপন্যাসের একেবারে শেষ অব্দি পাঠকের ধারণা জন্মাবে এই ভাইরাস হচ্ছে একটি মারাত্মক ছোঁয়াচে ও অনিরাময় যোগ্য মরণব্যাধি যা পৃথিবীর জনসংখ্যা কে শতকরা ৯৯ ভাগ মেরে ফেলবে। এই বিজ্ঞানী ভাইরাসটিকে মুক্ত করার জন্য একটি নির্দিষ্ট দিনক্ষণ এবং ম্যাকানিজম সেট করে নিজে আত্মহত্যা করেন। পরবর্তীতে উপন্যাসের নায়ক বিভিন্ন ক্লু ধরে ভাইরাস এর উৎপত্তিস্থলে পৌঁছান। আর এই যাবতীয় ক্লু হচ্ছে বিখ্যাত কবি দান্তে অলিঘিয়েরির ইনফার্নো উপন্যাস। নায়ক যখন ভাইরাসের জায়গাটিকে গিয়ে পৌঁছায় ততক্ষণে অনেকে দেরি হয়ে গেছে। ভাইরাস অলরেডি অবমুক্ত হয়ে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে মজার বিষয় হল একেবারে শেষ পর্যায়ে জানা যায় এটা কোন মরণব্যাধি নয় বরঞ্চ জেনেটিক ভাবে কোড করা এমন একটি ভাইরাস যা পৃথিবীর তিন ভাগের এক ভাগ মানুষের প্রজনন ক্ষমতা সম্পূর্ণরূপে নষ্ট করে দেবে। আর এভাবেই প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে আস্তে আস্তে জনসংখ্যা কমে এসে পৃথিবীকে রক্ষা করবে। সত্যি বলতে কি এত বড় একটা উপন্যাস সংক্ষেপে এর কাহিনী তুলে ধরা অসাধ্য সাধনের মত। আশা করি বই পড়তে আগ্রহীরা এর স্বাদ নিতে ভুলবেন না।
ব্যক্তিগত অভিমতঃ
আমি সাধারণত ভালোলাগা বইগুলো এক বসাতেই পড়ে শেষ করি। তবে এই উপন্যাসটির ব্যাপ্তি অনেক বড় হওয়ায় আমার পড়তে অনেক সময় লেগেছে। এছাড়া শুরুর দিকে কাহিনী ততটা জমজমাট নয়। পড়তে পড়তে আকর্ষণ বাড়তে থাকে। বলতে গেলে প্রায় এক মাস ব্যাপী সময় নিয়ে এই উপন্যাসটি আমি শেষ করেছি। ব্যক্তিগতভাবে আমি নিজেও বিশ্বাস করি পৃথিবীর এই অব্যাহত জনসংখ্যা বৃদ্ধিকে প্রতিহত করতে না পারলে ধ্বংস অনিবার্য। খুব শীঘ্রই হয়তো পৃথিবীর মানুষরা নিজেরাই নিজেদেরকে শেষ করে দেবে।
ব্যক্তিগত রেটিংঃ ৬/১০
আজকের মতো এতোটুকুই। আবার কথা হবে অন্য কোন বিষয় নিয়ে। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই কামনায় আজকের মত এখানেই শেষ করছি।
Photographer | @ferdous3486 |
---|---|
Device | Samsung M21 |
বাহ বইয়ের গল্পটি অনেকটা মুভির কাহিনীর মত ভালো লাগলো।আর স্বল্প কথায় লিখলেও সুন্দর লিখেছেন।আর আমিও আপনার মত পিডিএফ থেকেই বই পড়ি,তবে যেগুলো খুব পছন্দের বই সেগুলো যেকোনো মূল্যে কিনি।আসলে নিজের পছন্দের বই গুলা সংগ্রহে থাকলে অনেক ভালো লাগে।☺️
কাগজের বই কিনে পড়ার মজাই আলাদা কিন্তু সাধ্য নেই তাই কি আর করার। এই উপন্যাসটি নিয়ে হলউড থেকে একটা সিনেমা তৈরি করা হয়েছে। সময় পেলে দেখবেন। আশাকরি ভালো লাগবে। ধন্যবাদ।
আমিও আপনার মত পিডিএফ রিডার ভাই।আর ড্যান ব্রাউন সিরিজের সব বই পড়েছি।ইনফার্নোর রিভিউটি আপনি অল্পভাষায় খুব সুন্দর ভাবে দিয়েছেন ধন্যবাদ ভাই এমন বিখ্যাত বইয়ের এমন সুন্দর রিভিউ দেওয়ার জন্য।
মনে হচ্ছে আপনি একজন ভালো পাঠক। আমি অবশ্য ড্যান ব্রাউনের খুব বেশি বই পড়িনি। রিভি উ আরো বড় করার ইচ্ছে ছিল কিন্তু বেশি বড় হলে কেও আর পড়তে চায়না তাই এই সংক্ষেপে উপস্থাপন। ধন্যবাদ ভাই।
আজকে আপনি ইনফার্নো বুক রিভিউ দিয়েছেন। আসলে আমার বইটি কখনো পড়া হয় নি তবে আপনার পোস্ট দেখে পড়তে ইচ্ছে করতেছে। সময় বের করে নিশ্চয় পড়ে নেবো । এমন সুন্দর রিভিউ দেওয়ার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ মূল্যবান সময় ব্যয় করে আমার বুক রিভউ পোষ্টটি পড়ার জন্য। সময় পেলে পড়ে দেখবেন আশাকরি ভালো লাগবে।
ভাইয়া আপনার বুক রিভিউ ইনফার্নো পড়ে অনেক ভাল লাগলো। আমিও ব্যাক্তিগত ভাবে মনে করে যে পৃথিবী খুব তারাতারি ধংস হয়ে যাবে। কারন যে হারে মানুষ বাড়ছে আর সবাই পৃথিবীকে ধংস করার প্রতিযোগিতায় নেমে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে একসময় মানুষ মানুষকে মেরে ফেলবে। তবে প্রফেসর সিম্বলজির আবিষ্কৃত ভাইরাস মানুষের প্রজনন ক্ষমতাকে আস্তে আস্তে ধংস করে দিবে,সেটা কতটুকু সত্য হবে সেটাই চিন্তার বিষয়। লাষ্টের উক্তিটা শতভাগ সত্য। ধন্যবাদ ভাইয়া।
পৃথিবীর অন্যকোন দেশ ধ্বংস না হলেও আমাদের বাংলাদেশের জন্য খুব শীঘ্রই যে বড় ধরনের বিপদ অপেক্ষা করছে তাতে সন্দেহ নেই। প্রথমত ভয়ংকর জনসংখ্যার চাপ সেই সাথে দূর্নিতী কতদিন আমাদেরকে টিকিয়ে রাখবে সময়ই তা বলে দেবে। ধন্যবাদ ভাই আপনার মন্তব্যের জন্য।