মেধা ও মনন শক্তি বৃদ্ধির কৌশল

আমি @arpita007 বাংলাদেশ থেকে। কেমন আছেন সকল বাংলাদেশী এবং ইন্ডিয়ান বন্ধু -বান্ধবীগণ? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।আজকে ফিরে এলাম আপনাদের মাঝে আবার নতুন একটি ব্লগ নিয়ে ।

সোর্স

মানব মস্তিষ্ক প্রকৃতির এক বিস্ময়কর সৃষ্টি। জ্ঞানার্জন, চিন্তা, বিশ্লেষণ এবং সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের মূল ভিত্তি হলো স্মৃতিশক্তি। একজন মানুষের ব্যক্তিত্ব, শিক্ষা, কর্মদক্ষতা ও সাফল্যের সাথে স্মৃতিশক্তির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। তাই এই মূল্যবান সম্পদকে শক্তিশালী ও কার্যকর রাখতে আমাদের কিছু সচেতন পদক্ষেপ গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।

প্রথমেই বলতে হয় সুষম খাদ্যের কথা। গবেষণায় দেখা গেছে, স্বাস্থ্যকর খাদ্য মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়ায় এবং স্মৃতিশক্তি উন্নত করে। বাদাম, মাছ, ডিম, দুধ, শাকসবজি, ফলমূল, বিশেষ করে ভিটামিন ‘বি’, ‘সি’ এবং ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার মস্তিষ্কের কোষকে পুষ্টি জোগায়। জাঙ্কফুড, অতিরিক্ত চিনি বা তেল-চর্বিযুক্ত খাবার পরিহার করা উচিত, কারণ এগুলো মস্তিষ্কের ক্ষতি করে স্মৃতিশক্তিকে দুর্বল করে।

দ্বিতীয়ত, পর্যাপ্ত ঘুম স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির অপরিহার্য শর্ত। ঘুমের সময় মস্তিষ্ক দিনের শেখা তথ্যগুলোকে সঠিকভাবে সংরক্ষণ করে। যদি ঘুম যথেষ্ট না হয়, তাহলে মনোযোগ কমে যায় এবং মনে রাখার ক্ষমতা দুর্বল হয়। প্রতিদিন অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত।

তৃতীয়ত, নিয়মিত ব্যায়াম ও শারীরিক পরিশ্রম মস্তিষ্ককে সক্রিয় রাখে। শারীরিক অনুশীলনে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়, ফলে মস্তিষ্কে পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহ হয়। হাঁটা, দৌড়ানো, যোগব্যায়াম কিংবা সাঁতার যেকোনো ধরনের ব্যায়াম স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।

চতুর্থত, মানসিক ব্যায়ামও সমান গুরুত্বপূর্ণ। যেমন বই পড়া, কবিতা মুখস্থ করা, ধাঁধা সমাধান, দাবা খেলা, বা নতুন ভাষা শেখা। এসব কার্যক্রম মস্তিষ্কের কোষকে সক্রিয় রাখে এবং চিন্তাশক্তি বাড়ায়। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিদিন কিছু সময় মনে রাখার অনুশীলন করা অত্যন্ত উপকারী।

এছাড়াও, মানসিক চাপ স্মৃতিশক্তি দুর্বল করার অন্যতম কারণ। অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা, হতাশা বা মানসিক অস্থিরতা মস্তিষ্কের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। তাই ইতিবাচক মনোভাব বজায় রাখা, প্রার্থনা, ধ্যান বা শখের কাজ করা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।

প্রযুক্তির যুগে আমরা অনেক কিছু কাগজে কলমে না লিখে মোবাইল বা কম্পিউটারে সংরক্ষণ করি। এর ফলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমে যেতে পারে। তাই সম্ভব হলে নিজের মস্তিষ্ককেই তথ্য মনে রাখার কাজে ব্যবহার করা উচিত।

সবশেষে বলা যায়, স্মৃতিশক্তি বাড়ানো কোনো একদিনের কাজ নয় এটি একটি নিয়মিত অনুশীলন ও জীবনযাত্রার অংশ। সুষম খাদ্য, পর্যাপ্ত ঘুম, নিয়মিত ব্যায়াম, মানসিক প্রশান্তি ও অনুশীলনের মাধ্যমে স্মৃতিশক্তি কার্যকরভাবে বাড়ানো সম্ভব। শক্তিশালী স্মৃতিশক্তি শুধু শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে নয়, বরং সারাজীবনের প্রতিটি ধাপে সাফল্যের দ্বার উন্মোচন করে।

আমি অর্পিতা নওশিন তিশা। আমি বর্তমানে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়াশোনা করছি। আমার শখের মধ্যে রান্না করতে ভালোবাসি এবং গল্পের বই পড়তেও ভালোবাসি । তাছাড়া অবসর সময়ে ছবি আঁকতে,গান শুনতে এবং বিভিন্ন ধরনের কমেডি, থ্রিলার, হরর মুভি দেখতে পছন্দ করি। এছাড়াও হিন্দি ডাবিং করা নাটকগুলো দেখতে পছন্দ করি।