অবশেষে আমিও আক্রান্ত জল বসন্তে ❤️

in আমার বাংলা ব্লগlast year (edited)

হ্যালো,

আমার বাংলা ব্লগ বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই। আশা করছি ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি আপনাদের আশীর্বাদ ও সৃষ্টিকর্তার কৃপায়।
আমি @shapladatta বাংলাদেশ থেকে। আমার বাংলা ব্লগের একজন ভেরিফাই নিয়মিত ইউজার। আমি গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সঙ্গে যুক্ত আছি।

IMG_20240714_180126.jpg

আজ আমি আপনাদের সাথে ভাগ করে নেবো আমার মেয়েও আমার জল বসন্ত রোগে আক্রান্ত হওয়ার গল্প।
জল বসন্ত চিকেন পক্স রোগ এটি অতি সংক্রমণক ভাইরাস জনিত একটি রোগ। সাধারণত শীতের শেষে ও বসন্ত ঋতুর শুরুতে এই রোগ বেশি হয়।শিশুদের মধ্যে এই রোগ হওয়ার প্রবণতা বেশি। ৯০ ভাগ মানুষের ক্ষেত্রে ১০ বছরের মধ্যে বসন্ত রোগ হয়ে থাকে।তবে ভালো বিষয় হচ্ছে একবার এই রোগটি হলে আর দ্বিতীয়বার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।

বসন্ত ভিষন সংক্রমণ একটি রোগ। এই রোগটি সাধারণত বসন্তকালই হয়ে থাকে। আর এজন্যই এই রোগটির নাম বসন্ত রোগ। আগের দিনে এই রোগটি মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়তো। আবহাওয়ার পরিবর্তনকালে এই রোগটি প্রকোপ খুব বেশি দেখা যায় । আমাদের গ্রামের এক বাড়িতে সেই বাড়ির বিবাহিত মেয়ে এসেছে বাবার বাড়িতে ঘুরতে। সম্ভব উনি আক্রান্ত হয়ে এসেছিলেন। আমার বাড়িতে আসার দু একদিন পরেই উনি আক্রান্ত হন।

এরপর একে একে ওই বাড়ির যতগুলো বাচ্চা ছিল সবগুলোই আক্রান্ত হয়।আমার মেয়ের সমবয়সী বাচ্চা দুটো ছিল ওই বাড়িতে আর তারা আমার মেয়ের সঙ্গে এসে খেলতো। আমার মেয়েকে যেতে দিতাম না তাতে কি তারাই চলে আসতো খেলার জন্য ছোট বাচ্চা কিছু বলাও যেত না মন খারাপ করবে বলে। একপর্যায়ে আমার মেয়ে আক্রান্ত হয়ে যায় এই জল বসন্ত রোগে।মেয়ের শরীরে অসংখ্য বসন্ত উঠেছিলো।

আপনারা জানেন জল বসন্ত হলে উচ্চমাত্রায় জ্বর,শরীর ব্যথা মাথাব্যথা হয়।জ্বর হওয়ার দু' একদিনের মধ্যেই রেস দেখা দেয়। এটি বেশ চুলকায় ও প্রথমে একটু দাগের মতো থাকে তারপর সেটি ব্লিষ্টারের মতো।জল ভর্তি ফোঁড়া হয়ে যায়।
প্রথম দিনেই আমি মেয়েকে শিশু ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়েছিলাম। ডাক্তার এলার্জির ঔষধ এবং প্যারাসিটামল ও ভিটামিন ঔষধ দিয়েছিল শুধু। জ্বর কমানোর জন্য প্যারাসিটামল সিরাপ দিয়েছিলেন।অতিরিক্ত চুলকানির জন্য অ্যান্টি হিস্টামিন জাতীয় ঔষধ দিয়েছিলেন।এগুলো খেয়েই মেয়ে সুস্থ হয়ে গেছে। তবে আমি কোনভাবেই
পক্স গুলোকে ফাটাতে দেইনি।কারণ পক্সের কালো দাগ দেখা দেয় তবে সময়ের সাথে সাথে অনেক পক্সের দাগ মিলিয়ে যায় আবার কোন কোন গুলো চির জীবনের জন্য রয়ে যায়। তবে কোন কোন ক্ষেত্রে ক্রিম ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা।

যেহেতু জল বসন্ত অতি সংক্রমণক ভাইরাসজনিত একটি রোগ তাই এটি প্রতিরোধের একমাত্র উপায় হচ্ছে আক্রান্ত ব্যাক্তির সংস্পর্শে না যাওয়া। এবং আক্রান্ত ব্যক্তির কাছে বেশি খন না থাকা। কিন্তু আমার মেয়ের পক্স হওয়ার পর সব সেবা যত্ন করতে হয়েছে মেয়েকে ছোট মানুষ তাই দূরে রাখা সম্ভব হয়নি কোলে উঠেছে। বুকের উপরে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়েছে। খাইয়ে দিতে হয়েছে। আর এজন্যই আমিও আক্রান্ত হয়ে গেছি। ছোটবেলায় আমার পক্স হয়নি জন্য আমিও আক্রান্ত হয়েছি যদি হতো তাহলে আর আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকতো না।

গত দুদিন ধরে আমার পক্স ওঠার সব ধরনের উপসর্গ দেখা দিয়েছে। আমি বুঝতে পারছি আমার পক্স উঠবে। আজকে দেখলাম দু একটা পক্স দেখা দিয়েছে মুখে ও শরীরে সেগুলো ভীষণ রকমের অস্বস্তি অনুভব করেছে। গলায় প্রচন্ড ব্যথা।একদমই খাওয়ার রুচি উঠে গেছে।পেট ভর্তি ক্ষুধা কিন্তু খাওয়ার কোন ইচ্ছে নেই রুচিও নেই । গলা ব্যাথার কারনে প্যারাসিটামল খেয়ে নিচ্ছি তিন বেলা তিনটি।

আমার বরের ছুটিতে আসার কথা দু একের ভিতরেই। পক্স গুলো দেখার সাথে সাথেই মেসেজ করে জানিয়ে দিলাম পক্স আমার উঠছে ছুটি নিও না। কিন্তু কে শোনের কার কথা ছুটি নিয়ে রওনাও দিয়েছে। ভিডিও ফোনে কথা বলে দেখলাম
তখনো ইউনিফর্ম পড়া আছে। ছুটিতে আসতে নিষেধ করলে বললো তাতে কি হলে হবে পক্স তাই বলে কি ছুটিতে যাব না।

আগের দিনে নাকি এক গ্রামে পক্স হলে অন্য গ্রামের কেউ আর ওই গ্রামের পাশ দিয়েও হাঁটতো না। খুব ভয় পেতে এবং এই পক্স খুব ভয়াবহ আকার ধারণ করে ছিলো। অসংখ্য মানুষজন এই বসন্ত রোগে মারা যেতেন মারা যেতেন।

বসন্ত খুব যন্ত্রণা দায়ক একটি রোগ। আমিও যতোই সময় যাচ্ছে আর ততই টের পাচ্ছি এর যত্ননা। প্যারাসিটামল ছারা কোন ঔষধ এখনো খাইনি তবে খেতে হবে অ্যান্টি হিস্টামিন জাতীয় ঔষধ। এই যন্ত্রণাদায়ক ভাইরাস টি সারতে কম পক্ষে দুই সপ্তাহের বেশি সময় লাগে।আমারও এক সপ্তাহ যন্ত্রণা সহ্য করতে হবে এবং লোকজন থেকে দূরে থাকতে হবে।কাজে মন বসাতে পারছি না কিন্তুু বাংলা ব্লগ আমার নেশায় পরিনত হয়েছে আর তাই ঘুরে ফিরে এখানেই সবার সাথে আড্ডা দিচ্ছি, কমেন্ট করছি ও পোস্ট টি লিখলাম।

বাড়ির অন্য সদস্যদের যেন না হয় সে প্রার্থনা করছি।আজকের মত এখানেই শেষ করছি আবারও দেখা হবে অন্য কোন পোষ্টের মাধ্যমে সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন নিরাপদে থাকুন।

টাটা

পোস্টবিবরণ
পোস্ট তৈরি@shapladatta
শ্রেণীলাইফ স্টাইল
ডিভাইসOppo A95
লোকেশনবাংলাদেশ

photo_2021-06-30_13-14-56.jpg

IMG_20230826_182241.jpg

আমি হৈমন্তী দত্ত। আমার স্টিমিট আইডিরঃshapladatta. জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। শখঃবাগান করাও নিরবে গান শোনা,শপিং করা। ভালো লাগে নীল দিগন্তে কিংবা জোস্না স্নাত খোলা আকাশের নিচে বসে থাকতে।কেউ কটূক্তি করলে হাসি মুখে উড়িয়ে দেই গায়ে মাখি না।পিছু লোকে কিছু বলে এই কথাটি বিশ্বাস করি ও সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি।বিপদকে ও অসুস্থতার সাথে মোকাবেলা করার সাহস রাখি সহজে ভেঙ্গে পরি না। সবাইকে নিয়ে ভালো থাকার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি পর হিংসা আপন ক্ষয়। ধন্যবাদ ।

A5tMjLhTTnj4UJ3Q17DFR9PmiB5HnomwsPZ1BrfGqKbjddgXFQSs49C4STfzSVsuC3FFbePnB7C4GwVRpxUB36KEVxnuiA7vu67jQLLSEq12SJV1etMVkHVQBGVm1AfT2S916muAvY3e7MD1QYJxHDFjsxQDqXN3pTeN2wYBz7e62LRaU5P1fzAajXC55fSNAVZp1Z3Jsjpc4.gif



IMG_20240709_202211.png

Sort:  
 last year 

আপু আপনার মেয়ে ওই বাড়ির মেয়ের সাথে খেলাধুলা করেছে বলেই জল বসন্তে আক্রান্ত হয়েছে। এটা খুবই মারাত্মক ব্যাপার। অবশেষে আপনিও জল বসন্তে আক্রান্ত হয়েছেন জেনে খুবই খারাপ লাগলো। আপু আপনার দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি।

 last year 

হ্যাঁ আপু গ্রামের বাচ্চাদের কাছ থেকে সংক্রমণ হয়েছিল মেয়ে এখন আমি।ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য।

 last year 
 last year 

আপনি একদম ঠিক বলেছেন আপু আগে মানুষজন এক জনার পক্স হলে অন্য মানুষ আর তাদের বাড়িতে যেত না। তবে এটা কিন্তু ঠিক পক্স ছোঁয়াচে রোগ। কিছুদিন আগে আপনার মেয়ের হয়েছিল তবে আপনার মেয়ে এখন অনেকটাই সুস্থ জেনে খুবই ভালো লাগলো। আশা করছি আপনিও অনেক দ্রুত সুস্থ হয়ে যাবেন দোয়া রইল আপু।

 last year 

হ্যাঁ আপু প্রচুর ছোঁয়াচে রোগ। মেয়ের শুখিয়ে গেছে। ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য।

 last year 

দোয়া করি আপনি যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে যান, আপনার পরিবারের সবাই যেন সুস্থ থাকে। আর এই রোগের জন্য বেশ কিছু নিয়ম রয়েছে অবশ্যই মেনে চলবেন। যেমন নাপা এক্সট্রা এইস প্লাস জাতীয় বড়ি খাওয়া, ডাবের পানি খাওয়া ও ডাবের পানি গায়ে মাখা। এছাড়াও বেশ কিছু নিয়ম রয়েছে সেভাবে চলার চেষ্টা করবেন। আশা করি দ্রুত সুস্থ হয়ে যাবেন।

 last year 

ঠিক বলেছেন ভাইয়া এই রোগে নিয়মকানুন মানতে হয়।ডাবের পানি খাচ্ছি। ধন্যবাদ সুন্দর পরামর্শ দেয়ার জন্য।

 last year 

মেয়ের সাথে সাথে আপনার ও পক্স দেখা দিল এটা শুনে খুব খারাপ লাগলো আপু। তবে এই পক্স শরীরে দেখা দিলে পুরো গা ব্যথা করে, তার পাশাপাশি জ্বর আসে। আপনার মেয়ে তো ছোট তাহলে তার কি পরিমাণ অসুস্থতাবোধ হচ্ছে তা ভেবেই কষ্ট লাগছে।আসলে আমিও শুনেছি এটা একবার হলে নাকি আর হয় না।যাইহোক আশা করি মেয়ের সাথে সাথে আপনার অসুস্থতাও তাড়াতাড়ি সেরে যাবে।

 last year 

হ্যাঁ আপু শরীর ব্যাথা ও জ্বর হয়েছে। ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য।

 last year 

সত্যি বলতে আপু এই রোগ হলে অনেক কষ্ট হয়। আমারও একবার হয়েছিল। গা হাতে জ্বালাপোড়া করার জ্বর অনেক সমস্যা হয়। বিশেষ করে ৫-৬ দিন তো অনেক কষ্ট হয়। যাইহোক হয়ে গেছে কি আর করা সাবধানে থাকেন সুস্থ থাকার চেষ্টা করেন এবং আপনার শারীরিক সুস্থতা কামনা করছি। আপনি দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন।

 last year 

ঠিক বলেছেন আপু গা হাত পা জ্বালাপোড়া করে।ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য।

 last year 

আমার একবার হয়েছিলো জল বসন্ত। সে কি যে কষ্ট যা বলার মত না। সংক্রমণের জন্য পাশাপাশি কেউ থাকলে তারও হয়ে যায়।যাই হোক আপনার পুরাপুরি সুস্থ্যতা কামনা করছি।ধন্যবাদ

 last year 

ঠিক বলেছেন আপু অনেক কষ্ট। গ্রামের এক বাচ্চাদের কাছ থেকে মেয়ের হয়েছিল। এরপরে আমার হলো। ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য।

 last year 

আপু আপনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করি। ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করলে জল বসন্ত ভালো হয়ে যায়। আতঙ্কিত হবেন না ধৈর্য ধারণ করে পরিস্থিতি মোকাবেলা করেন। নিশ্চয় অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে সুস্থতা ফিরে আসবে। ডাবের পানি খান আর ডাবের পানি গায়ে দিন । ধন্যবাদ আপনাকে আপু।

 last year 

ডাবের পানি খাচ্ছি ভাইয়া।ধন্যবাদ সাহস ও সুপরামর্শ দেয়ার জন্য।

 last year 

ঠিকই বলেছেন আপু বক্স হলে অনেক কষ্ট হয় আমারও অনেক আগে একবার হয়েছিল । আমাদেরও ফুল ফ্যামিলির সবারই হয়েছিল যাদের হয়েছিল তাদের হয়নি তবে ভাই বোন আমরা কেউ বাদ যাইনি । আপনার ও আপনার বাচ্চার পক্স হয়েছে আর আপনি আপনার হাসবেন্ডকে আসতে বারণ করছেন এই মুহূর্তে কি সে আপনাদের থেকে দূরে থাকতে পারে নাকি । আর এটা সত্যি ভয়াবহ রকমের ছোঁয়াচে । একজনের হলে কেউ বাদ যায় না । সাবধানে থাকবেন আপু ।

 last year 

ধন্যবাদ আপু মন্তব্য করার জন্য।

 last year 

আপনার মেয়ের পরে অবশেষে আপনার শরীরে পক্স দেখা দিলো। যাই হোক রোগ-বেদী এগুলো সব সৃষ্টিকর্তার পক্ষ থেকে আসে। চিন্তা করবেন না এটা কোন মারাত্মক রোগ নয়। এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে সুস্থ হয়ে যাবেন ইনশাল্লাহ। জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল আর যদি চুলকানি হয় তাহলে আন্টি হিসামিন খেতে পারেন। তাছাড়া ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চলার চেষ্টা করবেন। আপনার সুস্থতা কামনা করি। ধন্যবাদ।

 last year 

একদমই ঠিক বলেছেন ভাইয়া রোগ- ব্যাধী সৃষ্টি কর্তার দান।ডাক্তারের পরামর্শ মতোই চলছি।ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।