“শৈশবে পুকুরে মাছ ধরার মজার গল্প”
শৈশবের সেই মিষ্টি স্মৃতিগুলো যখন মনে পড়ে, তখন নানীর বাড়ির পুকুরের মাছ ধরা মুহূর্তগুলো যেন জীবন্ত হয়ে ওঠে। গ্রীষ্মের ছুটিতে যখন স্কুল থেকে ফিরে আসতাম, তখন নানী আমাদের সবাইকে নিয়ে যেতেন গ্রামের বাড়িতে, যেখানে ছিল বিশাল একটি পুকুর। সেই পুকুরের চারপাশ ছিল ঘাস আর বিভিন্ন ধরনের গাছপালা। পুকুরের পানিতে ঝিলমিল করত সূর্যের আলো, আর পাখির কোলাহল আর বাতাসের নরম স্পর্শ ছিল এক অন্যরকম প্রশান্তির প্রতীক।আজকে সেই পুকুরের মাছ ধরার গল্প আপনাদের মাঝে শেয়ার করব। আশা করছি আজকের শৈশবের স্মৃতিচারণ পোস্টে আপনাদের সবার ভালো লাগবে। চলুন তাহলে শুরু করি...
আমাদের শৈশবের সবচেয়ে প্রিয় কাজ ছিল পুকুরে মাছ ধরা। নানীর আঙিনায় বসে আমরা হাত পাততাম সেই ঝিনুকের মতো ছোট ছোট মাছগুলো ধরার জন্য। ছোট ছোট কাঠের জাল হাতে নিয়ে, নানীর দোয়া নিয়ে সেই পুকুরের দিকে ছুটে যেতাম আমরা। কখনও ধীরে ধীরে পুকুরের ধারে হাঁটতে হাঁটতে, কখনও আবার ঝাঁপ দিয়ে পানির মধ্যে ছুঁইয়ে মাছ খোঁজার মজা ছিল এক অনবদ্য অনুভূতি।সকাল বেলা পুকুরে যাওয়ার আগে নানী যেভাবে রান্না করতেন, তার সুগন্ধ যেন আজও নাকের সামনে ঘুরে বেড়ায়। মাটির হাঁড়িতে ভাত আর ডাল, সঙ্গে মৌসুমি তরকারি আর কখনো কখনো ঝাল মাচা মাছের ঝোল, যা পুকুরের মাছ দিয়ে তৈরি হত। খাবারের গন্ধে যেমন মন ভরে উঠত, তেমনি পুকুরে মাছ ধরা নিয়ে আমাদের উত্তেজনা আরও বেড়ে যেত।
পুকুরে মাছ ধরতে গেলে সবার মধ্যে একটা বিশেষ উত্তেজনা আর বন্ধুত্বের অনুভূতি কাজ করত। আমরা ছিলাম ছোট্ট শিকারির মতো, হাতে ছিল আমাদের জাল আর কান্নির মতো ছোট পাত্র। ধীরে ধীরে পুকুরের পানিতে হাত ভিজিয়ে, নানীর গল্প শুনতে শুনতে মাছ ধরার আনন্দ আলাদা এক জগৎ তৈরি করত। কখনো পুকুরের ধারে বসে মাছ ধরা সৎকার করতাম, কখনো আবার পানির মধ্যে ঝাঁপিয়ে পড়তাম আমরা। পুকুরের মাছ ধরা মানে ছিল শুধু মাছ ধরা নয়, এটা ছিল শৈশবের খেলা, ভালোবাসা আর আবেগের মিশেল।নানীর চোখে তখন এক ধরনের গর্ব আর শান্তি দেখতে পেতাম। তিনি আমাদের মাছ ধরে ফেরানোর সময় পুকুরের ধারে বসে গল্প করতেন, শিখাতেন কীভাবে মাছের যত্ন নিতে হয়, কীভাবে প্রকৃতির সুরক্ষা করতে হয়। তার গল্পগুলো ছিল যেন জীবনের এক সুন্দর পাঠ। কখনো কখনো পুকুরের পাড়ে বসে নানীর সঙ্গে বসে থাকতাম, আর সূর্য অস্ত যাওয়ার আগে আমরা সবাই মিলে মাছগুলো পরিষ্কার করতাম।
আমাদের হাতে ধরে থাকা ছোট ছোট মাছগুলো কখনো কখনো পুকুরের ঘাসের মধ্যে ফেলে দিতাম, যেন তাদের আবার সেই জলরাশিতে ফিরে যাওয়ার সুযোগ পাই। মাছ ধরা শেষে নানী মাঝে মাঝে আমাদের কাঁদা আর কাদা থেকে সাফ করে দিতেন, আর মৃদু হাসি দিয়ে বলতেন, “বাচ্চারা, মজা পেলে বলো তো।” সেই মুহূর্তগুলো আজও আমার হৃদয়ে একটি অমোঘ স্মৃতি হয়ে রয়ে গেছে।পুকুরে মাছ ধরার সেই আনন্দ শুধু শৈশবের মজাই ছিল না, বরং সেটা ছিল নানীর প্রতি আমাদের ভালোবাসার প্রতীক। নানীর সঙ্গে কাটানো সেই সময়গুলো আমাদের জীবনের সবচেয়ে মধুর স্মৃতি। সেখানে আমরা শিখেছিলাম ধৈর্য ধরতে, একসঙ্গে কাজ করতে আর প্রকৃতির সঙ্গেই মিলেমিশে থাকতে।
আজও যখন নানীর বাড়ির কথা ভাবি, পুকুরের সেই নীরবতা আর মাছ ধরার সেই মধুরতা যেন আমার মনকে একরকম শান্তি দেয়। শৈশবের পুকুর, নানীর হাসি আর মাছ ধরার আনন্দ সবই এক মায়াময় অধ্যায়, যা আমার জীবনের গভীরে একটি অমূল্য ধন।সেই পুকুর আর নানীর বাড়ি আজও যেন আমার মনে এক নিঃশব্দ সুরের মতো বাজে, যা আমাকে শৈশবের মধুরতা স্মরণ করিয়ে দেয়। শৈশবের সেই পুকুরে মাছ ধরা একটি সময়ের কথা, যা কখনো ভুলবার নয়।
আজ এখানেই শেষ করছি। অন্য কোন একদিন ভিন্ন ধরনের কনটেন্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব। ততক্ষন পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।
X-Promotion
Daily Tasks
Comment Link:-
https://x.com/mohamad786FA/status/1929962571219849725?t=SjRjrG_MRu_hFwXO0oiu9A&s=19
https://x.com/mohamad786FA/status/1929962753562948037?t=cEphT0QufrTde27BOADrcQ&s=19
https://x.com/mohamad786FA/status/1929962866591051960?t=5cSOj2UcaoLZ5sxVoPdMzQ&s=19
https://x.com/mohamad786FA/status/1929962990339797249?t=vTwUwPfmFjJKUboryEmzjw&s=19
https://x.com/mohamad786FA/status/1929963098741584047?t=iKrVjj0W-Kgy6OhC2NSdpQ&s=19
https://x.com/mohamad786FA/status/1929963243671585136?t=Z-VZKTsVlQUv7i305V1HkQ&s=19
Ss
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.