জীবন যেন শৈশবের রাজহাঁস!
কেমন আছেন সবাই? তো আশা করছি সবাই ভালো আছেন। ভালো থাকাটাই সবচেয়ে গুুরুত্বপূর্ণ। আসলে জীবনে ভালো থাকার জন্যই আমাদের এতোকিছু, এতো আয়োজন! একটু শৈশবে নিয়ে যায় আপনাদের। বয়স তখন ধরুন ৮-১০ বছর হবে হয়তো। ভালো মন্দ বুঝার ক্ষমতা হয়েছিল তখন। সকাল সকাল সূয্যিমামার জন্য অপেক্ষা করা। মায়ের ডাকে ঘুম থেকে জেগে উঠা। ঘুম থেকে উঠেই আরবি শিখতে গ্রামের মসজিদে চলে যাওয়া। তারপর সকালের নাস্তা খেয়ে স্কুলে যাওয়ার জন্য রেডি হয়ে যাওয়া! কাধেঁ ব্যাগ ভর্তি বই! বহনকরার সাধ্য নেই তবুও ছয়টা বই কাধেঁ নিয়ে স্কুলের দিকে ছুটে চলা। স্কুলে যাওয়ার পথে খেয়াল করতাম রাজঁহাড তাদের ডানা মেলে পুকুরের দিকে যায়। সাদা রঙের রাজঁহাস পুকুরের পানিতে নামার দৃশ্যটা দারুণ ছিল। তবে রাজহাঁস কে দেখে ভয়ও পেতাম! কাছে গেলেই আবার দৌড়ানি দিতো। তবে দূর থেকেই রাজহাঁস এর সাতাঁর কাটার সৌন্দর্য উপভোগ করতাম!
স্কুল ছুটি হতো বিকাল চারটায়। আসার পথে আবারো রাজহাঁসদের দেখতে পেতাম রাস্তায়। পুকুর থেকে রাজঁহাস রাস্তায় উঠে বসে থাকতো। আমরা যারা একসাথে স্কুল শেষে বাড়ি ফিরতাম তখন রাস্তায় রাজহাসঁকে দেখে ভয়ই পেতাম। কারণ কাছে গেলেই আমাদের দৌড়ানি দিতো। আমরা ভয়ে কাছে যেতাম না। রাজঁহাসের মাথা উচুঁ করে আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকতো। আমরা অনেক ভয় পেতাম। তারা সবসময় একসাথেই থাকতো। তবে একবার আমাদের সাথে এক সহপাঠী সাহসিকতার পরিচয় দিতে চাইছিল! সে বলেছিল রাজঁহাস এর সামনে দিয়ে একাই হেটেঁ যাবে! যখনই হাসেঁর সামনে দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা তখনই তাকে হাসঁ এর ঠোঠ দিয়ে টোকর মেরে দেয়! আর ভয়ে সে যে কি কান্না করে, হাহা! এরপরে আর কখনো একা যায়নি রাজঁহাস এর সামনে দিয়ে! তবে রাজঁহাস দেখলেই আমি অনেক ভয় পেতাম আসলে!
তবে রাজঁহাস কিন্তু আমাদের একটা শিক্ষা দেয় সেটা হলো একতা! একতাবদ্ধ থাকলে যেকোন কাজ সহজ হয়ে যায়। এবং কঠিন বিপদ একসাথে মোকাবেলা করা যায়। শৈশবের সেই শিক্ষাকে আমরা কাজে লাগাতে পারি। যেকোন কাজ করলে আমরা মিলেমিশে করলে সেটা সমাধান করতে সহজ হয়। তবে জীবনটা রাজঁহাস এর মতো নিরন্তর ছুটে চলার মতো হবে। জীবনের গতি যতই মন্থর হোক না কেন আমাদেরকে সবকিছু উপেক্ষা করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। তবেই জীবনে সাফল্যের দেখা পাওয়া সম্ভব। শৈশবের কথা মনে পরলেই আজ দৃশ্যগুলো চোখের সামনপ ভেসে উঠে! কতো সহজ ছিল জীবন তখন! সামান্য হাসেঁর দৌড়ানি, পানিতে ঝাপ দিয়ে সাতাঁর কাটা এসব দেখলেই আমাদের হাসি চলে আসতো। অল্পতেই সুখ পেয়ে যেতাম। সুখের মূল্য তখন কম ছিল!
আর এখন সুখের মূল্য অনেক বেশি। জীবনটাকে বড্ড জটিল করে ফেলেছি। বয়স বাড়ছে দায়িত্বও কাধেঁ আসছে। সুখ এখন ছোট জিনিসে যেন সহজেই আসে না! মনে হয় বড় হয়েগেছি। তবে শৈশবের এমন ঘটনা আমাদের শেখায় জীবনটাকে সহজভাবে উপভোগ করতে হবে। সহজভাবে জীবনটাকে উপভোগ করতে পারলেই জীবন সুন্দর! আপনার বয়স যত বাড়বে আপনি ততই শৈশবের সময়গুলো মিস করবেন। তবে সময় তো ফিরে আসবে না। শৈশবের কিছু স্মৃতি আপনাকে মনে করাবে জীবন কতো সহজ ছিল! কতো সহজে আনন্দ পাওয়া যেত। জীবনের একটা পর্যায়ে এসে আপনি মুচকি হেসে তখন বলবেন, "জীবনের শৈশব টা আসলেই সেরা ছিল! "
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। বর্তমানে ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর উপর বিএসসি করছি ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যলয় (ডুয়েট) থেকে । পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত চার বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,কবিতা লেখা,গল্প লেখা ,রিভিউ,ডাই এবং আর্ট করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
twitter share
বয়স বাড়ার সাথে সাথে জীবনটা সত্যিই অনেক জটিল হয়ে যায়। জীবনের সমীকরণ সময়ের সাথে সাথে আরো বেশি জটিল হয়ে যায় ভাই। দারুন লিখেছেন আপনি।
ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।