ছেলেবেলায় সাইকেল চালানো শেখার স্মৃতিময় গল্প।

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago

হ্যালো..!!

আমার প্রিয় বন্ধুরা,

আমি @purnima14 বাংলাদেশী,

আজ- ২৭শে মে, মঙ্গলবার, ২০২৫ খ্রিঃ

কভার ফটো


1000049651.png

Source: Pixabay

কয়েকটি ছবি একত্রিত করে সুন্দর একটি কভার ফটো তৈরি করে নিয়েছি।



আমি আশা করি, আপনারা সবাই সুস্থ এবং সুন্দর আছেন। আমি নিজেও ভালো আছি। আমি সবসময় চেষ্টা করি নিজেকে হাসি খুশি রাখার। আমি "আমার বাংলা ব্লগের" মাধ্যমে আপনাদের সামনে আমার ক্রিয়েটিভিটি তুলে ধরবো। আপনাদের সাথে বিভিন্ন ধরনের পোস্ট শেয়ার করতে আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। আজকে হাজির হয়েছে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আমাদের প্রত্যেকেরই শৈশবের অনেক স্মৃতি রয়েছেন। এখানে অনেকেই তাদের শৈশবে স্মৃতিময় গল্পগুলো শেয়ার করে থাকেন। আমিও মাঝে মাঝে শেয়ার করি। শৈশবের গল্প গুলো শেয়ার করতে অনেক ভালো লাগে। আজকেও একটি শৈশবের গল্প শেয়ার করব। ওই সেই প্রথম দিন আমি সাইকেল চালানো শিখেছিলাম সেই কাহিনী শেয়ার করবো। চলুন তাহলে দেরি না করে আমার শৈশবের স্মৃতিময় গল্পটি পড়ে নেওয়া যাক।



কোথা থেকে শুরু করব আমি আসলেই বুঝতে পারছি না। সাইকেল চালানো আমার একটা শখ ছিল। ছোটবেলা থেকেই অন্যদের সাইকেল চালানো দেখলে আমারও ইচ্ছে করতো সাইকেল চালাতে। তবে আমি খুব ছোটবেলায় সাইকেল চালানো শিখিনি। আমি যখন সাইকেল চালানো শিখলাম তখন আমি ক্লাস সেভেনে পড়তাম। ক্লাস সেভেনে ও পুরোপুরি সাইকেল চালাতে পারতাম না। ক্লাস এইটে উঠার পর আমি পুরোপুরি সাইকেল চালানো শিখলাম। ক্লাস এইট থেকে মোটামুটি যে কোন রাস্তায় আমি সাইকেল চালাতে পারতাম।

এবার শুরু করা যাক কিভাবে এই সাইকেল চালানো শুরুটা হয়েছিল সেই কথা। বাবার একটা বড় সাইকেল ছিল। এক কথায় যেটাকে বলে বাবাদের সাইকেল। সেই সাইকেলে আমার প্রথম সাইকেল চালানো শেখা শুরু হয়। আর সাইকেল চালানো শেখানোর জন্য আমার মাস্টার ছিল আমার ছোট ভাই। তার কাছ থেকে অনেক রিকোয়েস্ট করে সাইকেল চালানোটা শিখেছিলাম। ক্লাস সেভেন আমাদের স্কুলে যে কয়জন মেয়ে সাইকেল চালাতে পারতো সবাই মিলে একটা জায়গায় ঘুরতে গিয়েছিলাম। আমি যেহেতু তখন সাইকেল চালাতে পারতাম না সেজন্য আমাকে তারা নিয়ে গিয়েছিল না। এই বিষয়টা ভেবে আমার খুব মন খারাপ হয়েছিল। তারা আমাকে কেন নিল না এটা যেন আমি মেনেই নিতে পারছিলাম না।

সেদিনই বাড়ি এসে কান্নাকাটি শুরু করলাম। তখন আমার ভাইয়েরও নিজস্ব কোন সাইকেল ছিল না। আমার ভাই বাবার সাইকেলটাই চালাতো। আমি কান্নাকাটি করে বাবার সাইকেলে সাইকেল চালানো শিখতে শুরু করলাম। প্রথম দুদিন আমার ভাই আমাকে একটি বারও সাহায্য করেনি। আমি কিছুতেই পারছিলাম না। পরবর্তী দিনে আমার মা ভাইকে বলে আমাকে একটু সাহায্য করতে। তখন থেকে ভাই পিছন থেকে সাইকেল ধরে রাখতো আমি সাইকেলের উপরে উঠে চালানোর চেষ্টা করতাম। আমি অতটা লম্বা ছিলাম না সেজন্য ওই লম্বা সাইকেলটা চালাতে আমার ভীষণ কষ্ট হতো। তারপরেও শিখতেই হবে। শখের ব্যাপার আছে না!

এভাবে আমার সাইকেল চালানোর জার্নিটা শুরু হয়। এই সাইকেল চালানো শিখতে গিয়ে কতবার যে পড়েছি তার হিসাব নেই। কত জায়গায় যে কেটে গেছে রক্ত ঝরেছে তারও হিসাব নেই। একবার তো ভাই সাইকেল চালানো শিখাতে নিয়ে গিয়ে আমাকে ফেলে দিয়েছিল। ফেলে দিয়েছিল এমনটা অবশ্য বলা চলে না। আমার ভাই পিছন থেকে সাইকেল ধরেছিল আর সেই ভরসাতেই আমি সাইকেল আপন মনে চালাতে শুরু করি ও যে কখন পিছন থেকে ছেড়ে দিয়েছে আমি সেটা বুঝতে পারিনি। হঠাৎ করেই আমি আর ব্যালেন্স করতে পারছিলাম না। তখন তো সোজা গিয়ে পড়লাম একটা পুকুরের মধ্যে। আমি অবশ্য জলের মধ্যে পড়েছিলাম না সাইকেলটা পড়ে গিয়েছিল। সেবার অনেকটা পা কেটে গেছিল। সেই কাটার দাগ অনেকদিন ধরেছিল। এখন অবশ্য দাগটা বোঝা যায় না।

সাইকেল চালানো শিখতে গিয়ে সে বাড়ি আমার প্রথমবার বড় ক্ষত হয়েছিল। তবে কষ্ট যাই হোক না কেন অবশেষে আমি খুব ভালোভাবে সাইকেল চালানো শিখে গেলাম। এর পুরো ক্রেডিটটাই ছিল ভাইয়ের। এজন্য ভাইকে আমি একদিন ট্রিট দিয়েছিলাম। ট্রেড মানে বড়সড়ও কিছু না ওকে আমি ৪০ টাকা দিয়ে কিছু একটা কিনে দিয়েছিলাম। ও তাতেই ভীষণ খুশি। আর আমার কাছেও সে সময় ৪০ টাকা মানে অনেক কিছু ছিল। তারপর কিছুদিনের মধ্যে বাবা ভাইয়ের জন্য নতুন সাইকেল আনলো। সেই সাইকেলে দুই ভাইবোন চালাতাম। ক্লাস নাইন থেকে আমি নিজের সাইকেল পেলাম।

যে উদ্দেশ্যে সাইকেল চালানো শিখেছিলাম,
ওই যে বান্ধবীরা সবাই ঘুরতে গিয়েছে আমাকে নেয়নি। কিন্তু পরবর্তীতে আমরা আবার ঘুরতে গিয়েছিলাম। এবারে আমি সবার আগে সাইকেল নিয়ে ছুটছিলাম। ভীষণ মজা করেছিলাম সেদিন। অনেকদিন হলো সাইকেল চালানো হয় না। তবে সাইকেল চালাতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। এখন তো আবার বাইক চালানোর স্বপ্ন দেখি। জানিনা কখনো সম্ভব হবে কিনা। তবে স্বপ্ন তো আর থেমে থাকে না।

যাইহোক, এটাই ছিল আমার ছোটবেলার সাইকেল চালাতে শেখার সেই স্মৃতিময় গল্পের একাংশ। আজ এই পর্যন্তই।



ছবির বিবরণ

ডিভাইস: গুগল পিক্সেল ৭ প্রো
ক্যামেরা: ৫০ মেগাপিক্সেল
লোকেশন:কুষ্টিয়া



প্রিয় বন্ধুরা,আমার আজকের ব্লগটি কেমন হয়েছে আপনারা সবাই কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই মন্তব্য করবেন, সামান্য ভুল ত্রুটি হলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সুপরামর্শ দিয়ে সবসময় পাশে থাকবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে শীঘ্রই, ততক্ষণে সবাই সুস্থ ও সুন্দর থাকবেন।



আমি কে !

Screenshot_20231102_205038_Facebook-01.jpeg

আমি পূর্ণিমা বিশ্বাস, আমার ইউজার নেম @purnima14। আমি আমার মাতা-পিতা এবং নিজের মাতৃভূমি ও মাতৃভাষাকে ভালবাসি। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে। আমি বর্তমানে কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে সিভিল টেকনোলজিতে ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমি ভ্রমণ করতে, কবিতা লিখতে ও আবৃত্তি করতে, গান শুনতে, যেকোনো ধরনের রেসিপি তৈরি করতে ও প্রাকৃতিক দৃশ্যের ফটোগ্রাফি করতে অনেক পছন্দ করি। "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটিতে কাজ করতে পেরে আমি গর্বিত



সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ
@purnima14



VOTE@bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png
OR
SET @rme as your proxy
witness_vote.png

standard_Discord_Zip.gif

Sort:  
 2 months ago 

বন্ধুরা সাইকেল নিয়ে ঘুরতে গিয়েছিল কিন্তু আপনাকে নেয়নি সেই জায়গাটা একেবারে হৃদয়ে গেঁথে গেল। ছোটবেলার এমন ছোট ছোট কষ্টগুলো কত গভীরে গিয়ে লাগতো, আজ সেই গল্পটা পড়ে যেন নিজের শৈশবে ফিরে গেলাম। ভাইয়ের সাহায্য, পায়ের ক্ষত, তবু দমে না যাওয়া এগুলো শুধু সাইকেল শেখা নয়, জীবনের একটা বড় শিক্ষা।

 2 months ago 

আসলে আমি মনে করি কিছু শিখতে গেলে কিছু দিতে হয়।কারণ পরিশ্রম ছাড়া কিন্তু কেউ সফলতা অর্জন করতে পারে না।ঠিক তেমনি সাইকেল চালাতে গিয়ে কিন্তু অনেক ধরনের ক্ষতি হয় তারপর আমরা পুরোপুরি সাইকেল চালাতে শিখতে পারি।যাইহোক আপনার পুরো পোস্ট টি পড়ে আমার কাছে অনেক ভালো লাগলো।ধন্যবাদ আপনাকে পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য।

 2 months ago 

তোমার সাইকেল চালানো শেখার স্মৃতিময় গল্প পড়ে সত্যি খুবই ভালো লাগলো। এরকম অধ্যাবসায় না হলে কোন কিছু শেখা যায় না। একটা জিনিস খুবই ভালো লাগে যে তোমার যে, কোন জিনিস শেখার প্রতি অনেক আগ্রহ আছে। এই পুরো গল্পটা কিন্তু অনেক উপভোগ করেছি কখনো মন খারাপ হয়েছে আবার কখনো হেসেছি। অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।