পুরনো দিনের গল্প আমাদের শৈশবের স্মৃতি।

আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আল্লাহর অসীম রহমতে আমিও ভালো আছি। আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব, আমার শৈশব নিয়ে।

শৈশব! সে তো জীবনের এক সোনালী সময়, যেখানে দুশ্চিন্তার কোনো মেঘ ছিল না।ধুলামাখা পথে একটি পুরোনো সাইকেল ছিল আমাদের সবচেয়ে দামি বাহন, আর প্রতিটি বিকেল ছিল মুক্তির গান।সেখানে সম্পর্কগুলো ছিল মাটির মতোই খাঁটি, যেখানে টিফিন ভাগাভাগি হয়ে যেত সহজ ভালোবাসায়।জীবনের প্রথম অদম্য জেদ আর নিঃশর্ত বন্ধুত্বের পাঠ আমরা সেই কৈশোরের মাঠেই শিখেছি।এই স্মৃতিগুলি আজও হৃদয়ের কুঠুরিতে যত্নে তোলা আছে, যা ব্যস্ত জীবনে এক ঐশ্বরিক শান্তির বার্তা নিয়ে আসে। তো চলুন, আমার শৈশব কিভাবে কেটেছে তা আপনাদের সাথে শেয়ার করি।

source

কখনো কি মনে হয়, জীবনের সবচেয়ে খাঁটি গন্ধ লুকিয়ে আছে ধুলা আর জং-ধরা সাইকেলের গ্রিজে? বিলাসী খেলনার ভিড়ে নয়, বরং সহজ সরলতার মাঝে আমাদের শৈশব ছিল এক স্বাধীন, বাঁধনহীন মুক্ত বাতাস।
যখন জীবন ছিল মাটির মতোই সরল, আর আনন্দ ছিল বাঁধনহীন মুক্ত বাতাসের মতো, সেই শৈশব—সে তো কেবল একটি বয়স নয়, সেটা হাজারো ছোট ছোট মুহূর্তের কোলাজ, যার অনেকটা জুড়েই ছিল ধুলায় মাখা পথ আর সাইকেলের হ্যান্ডেল।
আমাদের সেই দিনগুলিতে বিলাসী খেলনার প্রাচুর্য ছিল না, কিন্তু ছিল অখণ্ড সময় আর অফুরন্ত উদ্দীপনা। একটি পুরোনো, জং-ধরা সাইকেলই ছিল আমাদের সবচেয়ে প্রিয় বাহন। সাইকেলটি হয়তো উচ্চতায় আমার চেয়ে অনেক বড় ছিল, তাই প্রথমদিকে প্যাডেলে পা দিতে গিয়া প্রায়শই পা ছিলে যাইত। তবুও প্রথমবার হ্যান্ডেল ধরিয়া সোজা চলিবার যে জেদ, সেই অনুভূতিটাই ছিল অ্যাডভেঞ্চার। বন্ধুকে ঠেলিয়া দেওয়া অথবা পেছনে বসিয়া পথ চলার সেই সহজ সহযোগিতা, তাহাই ছিল আমাদের প্রথম দলবদ্ধতার শিক্ষা। সাইকেল চালানো শেখার সেই স্মৃতিতে এক অদ্ভুত মিষ্টি ব্যথা মিশে আছে।
আর শুধু সাইকেল কেন? খেলার মাঠ বলিতে ছিল দিগন্তজোড়া ফসলের ক্ষেত আর নদীর ধার। সেখানেই দিনের আলো নিভিবার আগ পর্যন্ত চলিত আমাদের অফিশিয়াল আড্ডা। সেই আড্ডায় কোনো গুরুগম্ভীর আলোচনার স্থান ছিল না; ছিল শুধুই খেলিতে না পারার অজুহাত তৈরি, পরের দিনের পরিকল্পনা করা এবং এমন সব নির্মল হাসি-ঠাট্টা, যা এখনকার দিনের কোনো মনোরঞ্জনেও পাওয়া যায় না।
বন্ধুদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কগুলি ছিল মাটির মতোই খাঁটি, যেন শিশির ভেজা ঘাসের মতো স্বচ্ছ, যেখানে জটিলতা বা ঈর্ষার কোনো স্থান ছিল না। একজন টিফিন না আনিলে বাকিদের টিফিন ভাগাভাগি হইয়া যাইত। একজনের সাইকেল মানেই ছিল সেটা সকলের জন্য উন্মুক্ত। দল বাঁধিয়া কোনো নতুন গাছে চড়া বা অজানা পথে হাঁটিয়া যাওয়া—প্রতিটি পদক্ষেপ ছিল আবিষ্কারের নেশা। একে অপরের ছোট ছোট সাফল্যে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করা এবং বিপদে পাশে থাকা—এইটাই ছিল আমাদের বন্ধুত্বের মূলমন্ত্র।
আমাদের কৈশোরের সেই বিকেলগুলি ছিল এক-একটি মহাকাব্য। সাইকেলটাকে কোনো গাছের সঙ্গে হেলান দিয়া রাখিয়া, শুকনো পাতার উপর বসিয়া দেখিতাম দিনের শেষে আকাশ কীভাবে রঙ বদলাইয়া যাইতেছে। যখন সন্ধ্যা নামিত, সাইকেলের ভাঙা ঘণ্টিটা অবিরাম বাজাইতে বাজাইতে ধুলার ঝড় তুলিয়া বাড়ি ফেরা—সেই শব্দটা আজও কানে বাজে। সেই সব হাসি, সেই সব দৌড়াদৌড়ি, সেই সব সহজ-সরল খেলাধুলা—সবকিছুই এই যান্ত্রিক জীবনের এক মুক্ত বাতাসের নিঃশ্বাস।
সেই ফেলে আসা দিনের দুরন্তপনা, সেই অদম্য প্রাণশক্তি আজও কোনো না কোনোভাবে আমাদের চলার পথে প্রেরণা যোগায়। সেই মাটির গন্ধ আর বন্ধুদের হাতের স্পর্শ—এগুলিই আমাদের ভিত তৈরি করিয়াছে। এই স্মৃতিগুলি আজও হৃদয়ের গহীনে যত্নে তোলা আছে, যা আমাদের ব্যস্ত জীবনে এক শান্তির বার্তা বহন করে।

বন্ধুরা, আজকের পোস্টটি এখানেই শেষ করছি এবং আপনাদের কাছ থেকে ভালো মন্তব্য আশা করছি। পরবর্তী ব্লগে নতুন বিষয় নিয়ে দেখা হবে। সৃষ্টিকর্তা আমাদের সকলকে সুস্থ রাখুক।

---

---

আমি আব্দুল আলীম, Steemit-এ আমার ব্যবহারকারীর নাম @alimtutorial । আমি একজন বাঙালি হিসেবে গর্বিত। Steemit কেবল আমার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম নয়, এটি আমার ভালোবাসার জায়গা। এখানে মানুষ তাদের সৃজনশীলতা এবং পছন্দ-অপছন্দ একে অপরের সাথে ভাগ করে নেয়। এই প্ল্যাটফর্মটি আমাদের মতো কন্টেন্ট নির্মাতাদের জন্য একটি দুর্দান্ত সুযোগ তৈরি করেছে, যেখানে আমরা নিজেদের প্রকাশ করতে পারি এবং অন্যদের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে পারি। পড়া, লেখা, ব্লগিং, ফটোগ্রাফি, গান গাওয়া এবং ভ্রমণ আমার প্রিয় জিনিস। প্রতিটি কাজ আমাকে নতুন জীবনযাপন করতে শেখায়, এবং Steemit আমার এই সমস্ত শখ সকলের সামনে তুলে ধরার একটি দুর্দান্ত মাধ্যম।

ফটোগ্রাফির বিবরণ

📱 ডিভাইসের নাম	📍অবস্থান	ক্যাপচার📸 দ্বারা
Redmi note 10 pro max	Jamalpur/BD	@alimtutorial
-	-	-

---

ধন্যবাদ

---

---

@photoman
@blacks
@royalmacro
@beautycreativity
@curators
@hungry-griffin

আমার পোস্টটি দেখার জন্য

---

শুভেচ্ছান্তে
@alimtutorial

_{Posted using SteemX}