আমার শেকড়- ছয় বছরের স্মৃতি।।
বাংলা ভাষার কমিউনিটি
হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই। আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন।
জীবনের অনেক স্মৃতি থাকে যেগুলো সময়ের সঙ্গে রঙ বদলায়, কিন্তু মুছে ফেলা যায় না। ঠিক তেমনই আমার শৈশব আর কৈশোরের ছয় বছরের স্মৃতির পাতায় সযত্নে গাঁথা রয়েছে আমার প্রিয় মাদ্রাসার গল্প। এই মাদ্রাসাটি শুধু একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়, আমার জীবনের এক বিশাল অধ্যায়ের অংশ।
গত ঈদের ছুটিতে বাড়ি গিয়েছিলাম। এক বিকেলে হঠাৎ করেই ইচ্ছে হলো অনেকদিন পর সেই পুরনো মাদ্রাসায় ঘুরে আসি। আমাদের বাড়ি থেকে মাত্র চার-পাঁচ মিনিটের পথ। হেঁটে পৌঁছে গেলাম সেই চেনা প্রাঙ্গণে। মাঠের মাঝখানে দাঁড়িয়ে চারপাশের দিকে তাকাতেই স্মৃতির দরজা খুলে গেলো।
প্রথমেই চোখে পড়লো বিশাল সেই খোলা মাঠ। ছোটবেলায় এই মাঠে আমরা খেলতাম, দৌড়াদৌড়ি করতাম, কখনও বসে গল্প করতাম। এখনও মাঠের মাঝে দাঁড়িয়ে কানে ভেসে আসছিলো বন্ধুদের হাঁসির শব্দ, কখনও শিক্ষকদের শাসন। সময় কিভাবে এত দ্রুত বদলে গেলো?
চারপাশের একাডেমিক ভবনগুলো আজও দাঁড়িয়ে আছে অবিচলভাবে, যেন কালের সাক্ষী হয়ে। প্রতিটি জানালা, দরজা, সিঁড়িতে রয়েছে আমার ছোট্ট হাতের ছোঁয়া, শত শত পদচিহ্ন। মনে পড়ে গেলো, কিভাবে কখনও ক্লাস ফাঁকি দিয়ে জানালার পাশে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতাম, কিংবা বন্ধুদের সঙ্গে লুকোচুরি খেলতাম।
প্রিয় সেই মসজিদটা এখনও আগের মতো আছে। কত নামাজ, কত দোয়া, কত রাত্রি কাটিয়েছি এখানে। পাশেই দেখা গেলো সেই পুরনো ঘাটলা ও পুকুর। মাদ্রারাসা জীবনের একেকটা দিন যেন সিনেমার মতো চোখের সামনে ভেসে উঠছিল। পুকুরে সাঁতার কাটা, গাছ থেকে আম-জাম পাড়া, কিংবা হঠাৎ বৃষ্টির দিনগুলো, সব কিছুই মনে হলো যেন গতকালকের ঘটনা।
মাদ্রাসার চারপাশে আগের মতোই আছে বিশাল আম গাছ, কাঁঠাল গাছ, নারিকেল গাছ। গাছগুলোরও যেন আমাকে দেখে হাসি ফুটেছিল। ছয় বছর ধরে এদের ছায়ায় বসেছি, খেলেছি, কখনও ক্লান্ত হলে মাথা রেখেছি।
আজকে সেই আমি, অন্য এক আমি। জীবনের নানা ব্যস্ততা, দায়িত্ব, পরিবর্তনের মাঝে এসে দাঁড়িয়েছি পুরনো এই স্মৃতির উঠোনে। সবকিছুই যেন একই আছে, শুধু সময় আর মানুষ বদলে গেছে। প্রতিবছর নতুন নতুন ছেলেমেয়েরা আসে, পড়ে, চলে যায়। কিন্তু ভবনগুলো, গাছগুলো, মাঠটা ঠিক আগের মতোই থেকে যায়,অবিচল, অবিনশ্বর।
মনে এক অদ্ভুত বিষণ্ণতা আর শূন্যতা নিয়ে ফিরে এলাম। হয়তো জীবনের নিয়মটাই এমন। মানুষ চলে যায়, সময় পেরিয়ে যায়, স্মৃতিই শুধু থেকে যায়। আর থেকে যায় এমন কিছু স্থান, যা আমাদের ফেলে আসা দিনের সাক্ষী হয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে।
এই মাদ্রাসা, এই মাঠ, এই গাছপালা সবকিছুই আমার জীবনের এমন এক টুকরো, যা কখনও মুছে যাবে না। এদের মধ্যেই লুকিয়ে আছে আমার জীবনের সবচেয়ে নিখাদ, নির্মল দিনগুলোর গল্প।😥
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | রিয়েলমি সি-৫৩ |
ফটোগ্রাফার | @joniprins |
স্থান | সৈয়দাবাদ,কসবা , ব্রাহ্মনবাড়িয়া |
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
আসলে ভাইয়া যেখানে আমাদের শৈশব কেটেছে সেখানে এভাবে ফিরে যেতে পারলে কত ভালো লাগে। আপনি আপনার পুরাতন জায়গায় ফিরে গিয়েছেন দেখে অনেক ভালো লাগলো। যদিও এই এটা ক্ষণির জন্য। নিশ্চয় বেশ ভালো সময় কাটিয়েছেন।ধন্যবাদ আপনাকে।
https://x.com/RamimHa74448648/status/1941347540911390825?t=Q5MmkHq-ywCCT_xvIu_VbQ&s=19
https://x.com/RamimHa74448648/status/1941348097952710674?t=FeNomhB0b6uLJxG93pXGDw&s=19