দূর্নীতির আখড়া ঘর!
05-08-2025
২১ শ্রাবণ , ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
🌼আসসালামুআলাইকুম সবাইকে🌼
আশা করছি আপনারা সবাই ভালো ও সুস্থ্য আছেন। তো সুস্থ্য থাকাটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। দিনশেষে আপনি যদি সুস্থ্য না থাকেন তাহলে আপনার কোনো কিছুতেই ভালো লাগবে না। তো গত কয়েকদিন ধরে আমার বাবা প্রচন্ড রকম অসুস্থ। ডাক্তার বলেছে ডেঙ্গু হয়েছে। সেটা শোনার পর মোটামোটি টেনশনে পরে গেছি। আমার বাবা বাড়ি থেকে ঢাকা আমার আপুর বাসায় এসেছিল বেড়াতে। ঢাকা শহরে এমনিতে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি আসলে। এজন্য সাবধানে থাকাটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তবে ঢাকা শহরে যেমন রোগব্যাধি আছে তেমনি চিকিৎসা কেন্দ্রগুলো কাছাকাছি আছে। তো ডেঙ্গু নরমালি ডেঙ্গু মশার কামড়েই হয়। প্রথমে এটার সিনড্রোম বুঝা যায় না। আমরা প্রথমে ভাবতে পারি নরমাল জ্বর। আসলে নরমাল জ্বর হলেও নাপা টেবলেট খাওয়াটা উচিত না। এটলিস্ট কয়েকদিন অপেক্ষা করা ; এটা সিজনাল জ্বর কি না ; নাকি অন্যকোনো জ্বর! আপু আমাকে পাচঁদিন আগেই বলেছিল আমার বাবার মাঝে মাঝে জ্বর উঠছে! মাঝে আবার শুনি জ্বর নেই!
তারপর হঠাৎ করেই তিনদিন আগে শুনি আমার বাবার প্রচন্ড রকমের শরীর খারাপ। পেট ফুলে গেছে, কোনোভাবেই কমছে না। তারপর আমি দ্রুত চলে আসলাম ঢাকায়। তো ঢাকা আসার পর প্রথমে প্রাইভেটভাবে ডাক্তার দেখলাম। কিন্তু কয়েকজন পরমার্শ দেয় যে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যেতে। তো দেরি না করে সেখানেই নিয়ে যায়। ঢাকা মেডিকেল কলেজে আমার এক বন্ধু পড়াশোনা করছে। সে এমবিবিএস ফাইনাল ইয়ারে আছে। আমাদের বন্ধুত্ব ছোটবেলা থেকেই। তার নাম শুয়াইব। তাকে বলেছিলাম বাবাকে ডাক্তার দেখাতে হসপিটালে আসবো। তো তার ক্লাস ছিল বিকাল চারটা অবধি। কিন্তু সে বলে দিয়েছিল কিভাবে টিকেট সংগ্রহ করে ডাক্তার দেখাতে হবে। তো আমার বাবার যেহেতু ডেঙ্গু একটা কমেন্ট ডাক্তারে বলে দিয়েছিল তো ইমার্জেন্সি ইউনিটে গিয়ে টিকেট কেটে ভিতরে গেলাম।
টিকেট কাটার পর থেকে ভিতরের পরিবেশ লক্ষ্য করলাম। এতো এতো রোগী, কোনে সিট পাচ্ছে না। বারান্দায় অনেকেই শুয়ে আছে। বেড পাচ্ছে না। আবার একটা বিষয় খেয়াল করলাম সেটা হচ্ছে টেস্ট করানোতে । কিছু টাকা পে করতে হয়। এখন আপনি যদি রিপোর্ট এ না বুঝেন কোথায় কেমনে টেস্ট করাতে হবে, কতো টাকা পে করতে হবে? কিভাবে টাকা পে করতে হবে? এসব বিষয় না বুঝেন তাহলে দেখবেন আপনি দালালের খপ্পরে পরে যাবেন। বিশেষ করে দালালদের টার্গেট থাকে গ্রাম থেকে যারা চিকিৎসা সেবা নিতে আসে। তারাই বেশি দূর্নীতির শিকার হয়। তো আমি দেখলাম সিম্পল একটা রোগীর বেড নিয়েই দূর্নীতি শুরু হয়ে যায়! আপনি যদি কিছু টাকা দিতে পারেন এক্সট্রা তাহলে আপনি বেড পেয়ে যেতে পারেন। আরেকটা বিষয় খেয়াল করলাম সেটা হচ্ছে হসপিটালের ভিতরে থাকা আনসার ব্যাটালিয়ন রা সবচেয়ে বেশি দূর্নীতিগ্রস্ত। আপনি যদি হসপিটালে নতুন হয়ে থাকেন সেটা যদি তারা বুঝতে পারে তাহলে আপনি সহজেই দালালদের হাতে পরে যাবেন।
হসপিটালের বাহিরে রোগী পরে থাকলেও কারো কোনো মাথা ব্যাথা নেই! আপনি যদি বাহিরে ট্রলি বহন করা লোকদের টাকা দেন তাহলে আপনার রোগীকে নিয়ে যাবে। ধরেন, আপনার একজন রোগীর অবস্থা খুবই খারাপ। কিন্তু আপনি গরিব! আপনি যতক্ষণ না টাকা দিবেন ততক্ষণ পর্যন্ত আপনার রোগীকে তারা বহন করবে না। এখন একটা বিষয় খেয়াল করেন। আমাদের মধ্যে আদৌ মানবিক মূল্যবোধ কি আছে। যেখানে টাকার মাধ্যমে সেবা বিক্রি হয় সেখানে আর যায়হোক মানবিক সহানুভূতি থাকতে পারে না! একটি দেশ ততক্ষণ পর্যন্ত উন্নতি করতে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না দূর্নীতি না কমে। দূর্নীতি না কমলে এ দেশ কখনো উন্নতি করতে পারবে না। এখন কথা হলো আপনি দূর্নীতি যদি কমাতে চান তাহলে প্রথমে যে কাজটি করতে হবে তা হলো আইনের প্রয়োগ করতে হবে কঠোরভাবে।
আপনি যদি আইনের সঠিক প্রয়োগ করতে পারেন তাহলে দূর্নীতি কমানো যেতে পারে। এক্ষেত্রে আইনবিভাগকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে সবসময়! ছোট ছোট দূর্নীতি করলেও সেগুলোকেও আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। তাহলে দূর্নীতি কিছুটা কমানো যেতে পারে। এক্ষেত্রে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। যদি সকল সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় তাহলে দূর্নীতিকে রুখে দেয়া সম্ভব। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে শিক্ষা দিতে হবে যে দূর্নীতিকে না বলতে হবে।
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। বর্তমানে ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর উপর বিএসসি করছি ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যলয় (ডুয়েট) থেকে । পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত চার বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,কবিতা লেখা,গল্প লেখা ,রিভিউ,ডাই এবং আর্ট করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
twitter share
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.