নাগরিক হওয়ার পথে (১০% বেনিফিশিয়ারি লাজুক খ্যাকের জন্য)
এইতো সেদিনেরই কথা।আম্মুর সাথে রিক্সায় বসে আমাদের স্থানীয় হাই-স্কুলে যেতাম আম্মু ভোট দেবে জন্য।ছোট ছিলাম তো,আমাকে নিয়েই রুমের ভেতর যেতো আম্মু।দেখতাম,আম্মুর নখের উপর নীল কালি দিয়ে দিতো আর তারপর আম্মু পর্দা দিয়ে ঘেরা একটা ঘরের ভিতর গিয়ে কাগজের উপর ওই নখের ছাপ দিতো।
৪/৫ বছর অব্ধি গিয়েছিলাম।তারপর তো একটু একটু বড় হয়েছি।বাসায় একা থাকতে পারতাম।এরপর আরেকটু বড় হলে ভোটের দিন রাস্তায় যে মার্কাগুলো ছিটিয়ে যেতো সেগুলো ৪/৫ জন বন্ধু মিলে কুড়াইতাম।আর তারপর সেগুলো দিয়ে খেলতাম।কখনো টাকা হিসেবে ব্যবহার করতাম আবার কখনো মাঠের ভিতর মিছিল করতাম😁।
এমনে করেই ১০/১১ বছর পর্যন্ত গেছে।
আরেকটু বড় হওয়ার পর ভোটের কেন্দ্রে যাওয়া শিখলাম।জাস্ট দেখার জন্য আরকি।ভাই-ব্রাদার সবাই যেতো,ওদের সাথেই শখের বসে যেতাম।
এভাবেই,চলে আসছিলো।বাট এবার কাহিনী পুরো ১৮০° ঘুরে গেছে।ভোটার হওয়ার জন্য নিজেও রেজিস্ট্রেশন করে এসেছি।মানে,মায়ের ভোট দেয়া দেখতেও যেতে হবেনা বা ভাইদের সাথেও শখ মেটাতে যেতে হবেনা।কয়টাদিন পর নিজেই ভোট দেবো।
বড় হয়ে গেছি তাইনা!এতোদিন বাড়িতে মেম্বার/কমিশনার এসে বাবা-মায়ের কাছে ভোট চাইতো।আর আমায় বলতো, বাবা ভালো আছো? এবার তারাই এসে বলবে,বাবা ভোটটা কিন্তু আমাকেই দিও।তোমাদের জন্য তো সবসময়ই আছি আমি🤣🤣।অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি তাদের জন্য।
ইয়ার ফাইনাল এক্সাম শুরু হতে তখন আর দুদিন বাকি ছিল।হঠাৎ করে বাবা ফোন দিয়ে বলেছিল,ভোটারের কাগজ-পাতি জমা নিচ্ছে আর ছবি তুলছে পৌরসভাতে।আসতে পারবে?
বললাম,হ্যাঁ পারবো কিন্তু আজ রাতেই আসতে হবে।এক্সাম আছে তো।
কথা না বাড়িয়ে তখনই রেডি হয়ে বাসার উদ্দেশ্য রওনা দিয়েছিলাম।ঘন্টা দেড়েক পর প্রায় ২ঃ৩০ এর একটু আগে গোবিন্দগঞ্জ পৌছেছিলাম।যেহেতু,যাবতীয় কাগজ-পাতি আমার ব্যাগেই ছিল তাই আর বাসায় না গিয়ে সরাসরি পৌরসভাতেই গিয়েছিলাম।
গেটের কাছেই দুজন বসে কাগজ জমা নিয়ে ফর্ম দিচ্ছিলো পূরন করার জন্য।আর পাশে ব্লাড টেস্ট করার জন্য ছিল দুজন।
ওখানকার সব ক্রাইটেরিয়া শেষ করে দুই তলাতে যেতে হয়েছিল ছবি তুলতে।
ছবি তোলার জন্য ভালোভাবে টুলে বসিইনি ভাই,তাতেই বললো হ্যাঁ হয়ে গেছে,চলে আসুন।তখন বুঝতে পেরেছিলাম যে ভোটার আইডি কার্ডের ছবিতে পূর্ণিমাকে কাজের মেয়ে রহিমার মতো কেন দেখায়।
তারপর ফিঙ্গার প্রিন্ট এবং আই ওয়াশ করার পর আমার কাজের সমাপ্তি হয়েছিল।
আসার সময় ফটোগ্রাফার একটা মরা গোলাপ দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন🥲।
হেসে হেসে অনেক কথাই বললাম।তবে এটা আসলেই অনেক বড় দায়িত্ব।দেশের নাগরিক তো সবাই কিন্তু দায়িত্ববান কতজন!আমার দ্বারা দেশের উপকার না হোক অন্তত ক্ষতি যেন কখনো না হয়।
সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
cc.@farhantanvir
Shot on. Oppo f19 pro
Location
Date.30/10/22
প্রথমেই নতুন ভোটার হওয়ার জন্য অভিনন্দন।আমার সেই ভোটার হবার দিনের কথা মনে পড়ল।৫ বার ছবি তুলেছি তাও নিজের মুখ নিজেই চিনতে পারি না।পরে ক্যামেরা ম্যান বলল ভাই আপনার চেহারাই খারাপ, কি আর করবেন মেনে নেন।হাহাহা। অনেক ভাল লাগল আপনার ভোটার হবার অনুভূতি পড়ে। ধন্যবাদ সুন্দর অনুভূতি শেয়ার করার জন্য।
ক্যামেরাম্যান চেহারা চিনেই না।নাহলে আপনার চেহারাকে খারাপ বলতো না।
ভালোবাসা নিয়েন ভাই ❤️
সত্যি ছোটবেলায় আমিও ভোটকেন্দ্রে যেতাম। কালো কাপড় দিয়ে ঘেরা একটি ছোট ঘরের মতো সেখানে গিয়ে সবাই ভোট দিত। কেউ কারো ভোটের কাগজ দেখতে পারত না। যাইহোক আমি অবশ্য ভোট দিয়েছি ইতোমধ্যে। আপনি নতুন ভোটার হচ্ছেন জেনে ভালো লাগলো। আর সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে এবার কিন্তু মেম্বার চেয়ারম্যান আপনার পিছনে ঘুরবে। আপনি একটু ভাব নিয়ে বসে থাকবেন। 🤪🤪
সে আর বলতে!সুযোগ তো এসে গেছেই।সবাইকেই বলবো,আচ্ছা অবশ্যই আপনাকেই ভোট দেবো😶
ছোটবেলায় এই এনআইডি কার্ডের প্রতি একটা অন্যরকম আকর্ষণ ছিল। কিন্তু এই এনআইডি কার্ড করতে গিয়ে প্রচুর ভোগান্তি তে পড়তে হয়েছে। আর ছোটবেলার সেই ইচ্ছাটাও শেষ। তবে আপনার ফটোগ্রাফার মরা গোলাপের শুভেচ্ছা কেন দিল, তাহলে ছবি কি ভালো হয়নি 🤭🤭। আমিও এই বছরই এনআইডি কার্ড করেছি। প্রায় তিন বার ছবি তুলেছিলাম তারপরও ভালো হয়নি 😥। যাইহোক অনুভূতি টি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
আপনি তাও তিনবার তুলেছিলেন,আমার তো একবারই সুযোগ হয়েছিল😣।
প্রথমেই জানাই আপনাকে নাগরিক হওয়ার জন্য অভিনন্দন। সত্যিই তো দেখতে দেখতে কখন যে বড় হয়ে যাওয়া বুঝা মুশকিল। এটা সত্যিই এখন বুঝতে পেরেছেন ভোটার কার্ডে পূর্ণিনাকে কেনো যে কাজের মেয়ে রহিমা লাগে। যাইহোক আপনি নতুন ভোটার হয়েছেন জেনে অনেক ভালো লাগল। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ সুন্দর অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপুমণি 😊
নতুন ভোটার হওয়ার অনুভূতিটা সত্যি ভালো লাগার মত। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলেও সত্য যে ভোটার লিস্টের ছবি তোলার ক্ষেত্রে ওরা যেভাবে ছবি তোলে তাতে প্রত্যেকের ছবি খারাপ হবে এটা স্বাভাবিক। সত্য কথা বলতে ভোটার আইডি কার্ডে আমার ছবি দেখে আমি নিজেই চিনতে পারিনা।
আইডি কার্ডে আমার বাবা-মায়ের ছবি দেখলেই হাসি আসতো,কয়দিন পর অন্যরা হাসবে আমার ছবি দেখে😅
এদের ছবি কখনোই ভালো হবে না এটা নিশ্চিত থাকেন হা হা। বসতে না বসতেই বলে হয়ে গেছে হাস্যকর। তাহলে ভাই দেখতে দেখতে এতোটা বড় হয়ে গেলেন। আসলে সবকিছুই সময়। যাইহোক আপনাকে অভিনন্দন আশাকরি একজন দায়িত্ববান নাগরিক হবেন।
ইনশাল্লাহ ভাই,দোয়া রাখবেন।
কেন ভাই সব রহিমারা কি অসুন্দর হয়।সব কাজের মেয়েরা কি রহিমা হয়।প্রশ্ন আপনার কাছে আমার।
আমি দুঃখিত।আমি ওভাবে কিছু বুঝাইনি।আমাদের সমাজে প্রচলিত কিছু চরিত্রের একটি কাজের মেয়ে রহিমা।সেদিক থেকেই কথাটি আমি লিখেছিলাম।
আমি আপনার কাছে দুঃখিত,বিষয়টি আমি ওমন কিছু মিন করে লিখিনি।
আপনাকেও ধন্যবাদ ভাইয়া❤️ ভালোবাসা নিবেন।