ডেঙ্গু প্রতিরোধে সতর্কতার কোনো বিকল্প নেই
আমি @riyadx2 বাংলাদেশ থেকে
মঙ্গলবার, ২৪ ই সেপ্টেম্বর ২০২৫ ইং
ডেঙ্গু এখন কেবল একটি রোগ নয়, এটি এক ধরনের মহামারী আশঙ্কার নাম। প্রতি বছর বর্ষাকাল শুরু হলে কিংবা বৃষ্টিপাত বাড়লেই এডিস মশার প্রজনন বেড়ে যায়, আর তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে ডেঙ্গুর সংক্রমণ। শহর থেকে গ্রাম, ধনী থেকে গরিব ডেঙ্গু কারো জন্য আলাদা করে সীমাবদ্ধ থাকে না। তাই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা আমাদের সবার জন্য অপরিহার্য।ডেঙ্গুর মূল বাহক এডিস মশা। এ মশা সাধারণত ভোরবেলা ও বিকেলবেলা কামড়ায়। অন্য মশার মতো নোংরা জলে নয়, বরং এডিস মশা জন্ম নেয় একেবারে পরিষ্কার পানিতে।
এ কারণেই আমাদের আশপাশের পরিবেশ যতই পরিপাটি হোক না কেন, যদি কোথাও পানি জমে থাকে তবে সেটিই হতে পারে ডেঙ্গুর জন্মভূমি। বাড়ির ছাদে জমে থাকা বৃষ্টির পানি, ফ্রিজের ট্রে, ফুলের টব, ডাবের খোসা, পুরনো টায়ার বা কোনো খোলা পাত্র এসবই এডিস মশার প্রজননের আদর্শ জায়গা।ডেঙ্গু প্রতিরোধে প্রথম ধাপ হলো নিজের বাড়ি এবং এর আশপাশ পরিষ্কার রাখা। সপ্তাহে অন্তত একবার অবশ্যই জমে থাকা পানি ফেলে দিতে হবে। যেসব পাত্রে পানি রাখা প্রয়োজন, সেগুলো সবসময় ঢেকে রাখতে হবে।
যদি কোথাও পানি জমে থাকে যা সরানো সম্ভব নয়, তবে সেখানে মশা প্রতিরোধী তেল বা লার্ভানাশক ব্যবহার করা জরুরি। শুধু বাড়ি নয়, আশপাশের ড্রেন বা খোলা জায়গাও পরিষ্কার রাখা দরকার। কারণ একজন মানুষ যতই সতর্ক থাকুক না কেন, পাশের বাড়ি যদি অবহেলা করে তবে ডেঙ্গুর ঝুঁকি থেকেই যায়।শুধু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নয়, ব্যক্তিগত সুরক্ষার দিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। এডিস মশা সাধারণত দিনের আলোতেই কামড়ায়, তাই দিনে ঘুমালে মশারি ব্যবহার করা উচিত। বাইরে গেলে ফুলহাতা জামা পরা, শরীর ঢেকে রাখা এবং মশা প্রতিরোধক লোশন বা স্প্রে ব্যবহার করাও খুব কার্যকর উপায়।
ডেঙ্গুর উপসর্গ নিয়ে সচেতন থাকাও জরুরি। হঠাৎ করে তীব্র জ্বর, শরীর ব্যথা, মাথাব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা বা লাল দাগ উঠলে অবহেলা করা যাবে না। অনেক সময় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর প্লাটিলেট সংখ্যা দ্রুত হ্রাস পায়, যা প্রাণঘাতী পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। তাই প্রাথমিক উপসর্গ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। নিজে নিজে ওষুধ খাওয়া বিপজ্জনক, বিশেষ করে পেইনকিলার জাতীয় ওষুধ এড়িয়ে চলতে হবে।ডেঙ্গু প্রতিরোধের সবচেয়ে বড় অস্ত্র হলো সম্মিলিত প্রচেষ্টা।
শুধু ব্যক্তি নয়, পরিবার, সমাজ, এমনকি রাষ্ট্রকেও একসাথে এগিয়ে আসতে হবে। স্থানীয় সরকার ও স্বাস্থ্য বিভাগকে ড্রেনেজ ব্যবস্থা ঠিক রাখা, মশকনাশক ছিটানো এবং জনসচেতনতা বাড়ানোর কাজ চালিয়ে যেতে হবে। স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালত সব জায়গায় মানুষকে ডেঙ্গু সম্পর্কে সচেতন করা জরুরি।সবশেষে বলা যায়, ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমাদের অস্ত্র হচ্ছে সতর্কতা, সচেতনতা এবং সম্মিলিত উদ্যোগ। একদিকে পরিচ্ছন্ন পরিবেশ নিশ্চিত করা, অন্যদিকে ব্যক্তিগত সুরক্ষা বজায় রাখা ও দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ এই তিনের সমন্বয়েই ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।
তাই সত্যিই বলা যায়, ডেঙ্গু প্রতিরোধে সতর্কতার কোনো বিকল্প নেই।
Device | iPhone 11 |
---|---|
Camera | 11+11 MP |
County | Bangladesh |
Location | Rangpur, Bangladesh |
Vote@bangla.witness as witness
এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য অনেকেরই অজানা। আপনার লেখাটি পড়ে সাধারণ মানুষ সহজেই বুঝতে পারবে কোথায় ভুল হচ্ছে এবং কীভাবে সামান্য সচেতনতায় বড় বিপদ এড়ানো সম্ভব।
সবচেয়ে ভালো লেগেছে আপনি শুধু সমস্যার দিকটি নয় সমাধানের পথও দেখিয়েছেন। যেমন জমে থাকা পানি ফেলে দেওয়া পাত্র ঢেকে রাখা আশপাশ পরিষ্কার রাখা এসব সহজ কিন্তু কার্যকরী পদক্ষেপই ডেঙ্গু প্রতিরোধে সবচেয়ে বড় অস্ত্র।