এক ব্যস্ত দিনের ক্লান্ত গল্প
আজকের দিনটা আমার জীবনের অন্যতম ব্যস্ত এবং কষ্টের একটি দিন ছিল। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত যেন দৌড়ঝাঁপের মধ্যেই কেটেছে। শরীর-মন ক্লান্ত হলেও সবকিছুর মধ্যে ছিল দায়িত্ববোধ আর ভালোবাসার টান।
সকালে ঘুম থেকে উঠে স্বাভাবিক দিনের মতোই ভার্সিটিতে গিয়েছিলাম। সকালটা ভার্সিটির ক্লাস আর পড়ালেখার মধ্যে কেটে গেল। দুপুরে বাসায় ফিরেই খাওয়া-দাওয়া করলাম। একটু বিশ্রাম নিয়ে ভাবলাম দিনের ক্লান্তি কিছুটা কাটবে, কিন্তু ভাগ্যে যেন শান্তি লেখা ছিল না। বিকেল গড়াতেই আবার ফার্মগেটে যেতে হলো। আমার ছোট বোনের হোস্টেলে কিছু প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দিয়ে আসতে হয়েছিল। বোনের জন্য সবসময় কিছু করার মধ্যে আলাদা তৃপ্তি আছে, তাই কষ্ট হলেও সেটা আনন্দের মতোই লাগে।ফার্মগেট থেকে ফিরে আসতে না আসতেই সন্ধ্যা নামল। বাসায় ফিরেই আবার এক বন্ধুকে নিয়ে মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ডে একটি কাজে যেতে হলো। ব্যস্ত শহরে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাওয়া মানেই যানজট আর ভোগান্তি, তবুও কাজের টানে বের হতে হলো।
দিনের সব ক্লান্তি যেন এখানেই শেষ হয়ে যাবে ভেবেছিলাম। কিন্তু রাত দশটার দিকে হঠাৎ একটা ফোন পেলাম। খবর এলো আমার চাচাতো ভাইয়ের নানী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন এবং তাকে মিরপুর দুইয়ের হার্ট ফাউন্ডেশনে আনা হচ্ছে। আমার ছোট চাচা ফোন করে বললেন, আমি যেন দ্রুত হসপিটালের গেটে চলে যাই। রাতের খাবার খাওয়ারও সময় হলো না, তাড়াহুড়ো করে ঢাকা শহরের ভয়ানক যানজট পেরিয়ে রাত এগারোটার পর হসপিটালের গেটে পৌঁছালাম।প্রায় এক ঘণ্টারও বেশি সময় গেটে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করলাম। অবশেষে রাত বারোটার দিকে অ্যাম্বুলেন্স এসে পৌঁছাল। ততক্ষণে শরীর ক্লান্তিতে ভেঙে পড়ছিল, কিন্তু দায়িত্ববোধ আমাকে শক্তি জুগিয়েছিল। রোগীকে ইমারজেন্সিতে ভর্তি করানো হলো। সেখানে গিয়ে সব কাগজপত্রের ব্যবস্থা করলাম। এরপর ইমারজেন্সি থেকে কেবিনে শিফট করতে গিয়ে আরও দৌড়াদৌড়ি করতে হলো।
রোগীর জন্য খাওয়ার ব্যবস্থা করতে বাইরে থেকে সুপ কিনে আনতে হলো। হাসপাতালে যেহেতু সবসময় রোগীর সাথে কাউকে থাকতে দেয় না, তাই গেস্ট হাউসে রুম ভাড়া করে আত্মীয়দের সেখানে রাখার ব্যবস্থা করলাম। রাতের ভেতরে প্রায় ১০-১২ বার দৌড়াদৌড়ি করতে হয়েছে। একদিকে ক্লান্ত শরীর, অন্যদিকে চারদিকের চাপ সব মিলিয়ে মনটা যেন নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছিল।এখন রাত তিনটা। অবশেষে বাসায় ফিরতে পেরেছি। এখনো রাতের খাবার খাওয়া হয়নি। শরীর ভীষণ ক্লান্ত লাগছে, যেন সারাদিন ঝড় বয়ে গেছে আমার ওপর দিয়ে। তবুও মনে স্বস্তি আছে, কারণ দিনের শেষে আমি আমার সামর্থ্য অনুযায়ী দায়িত্বটা পালন করতে পেরেছি।
আজকের দিন আমাকে আবারও বুঝিয়ে দিল মানুষ আসলেই কষ্টের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যায়। দিনের পর দিন সহজ যায় না, কিন্তু দায়িত্বের টানে আমরা সব কষ্ট সয়ে নেই। পরিবার-পরিজনের প্রয়োজনে যে কোনো মুহূর্তে ঝাঁপিয়ে পড়তে হয়।সবশেষে আমি শুধু এটাই বলব আল্লাহতালা আমার চাচাতো ভাইয়ের নানীকে সম্পূর্ণ সুস্থতা দান করুন। আপনাদের সবার কাছে অনুরোধ, দয়া করে তার জন্য দোয়া করবেন।
আজ এখানেই শেষ করছি। অন্য কোন একদিন ভিন্ন ধরনের কনটেন্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব। ততক্ষন পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।
X-Promotion
পরিস্থিতি যেমনই হোক দায়িত্ববোধটাই সবার আগে। মানুষের বয়স বাড়ার সাথে সাথে দায়িত্ববোধ ও বেড়ে যায়। বুঝতেই পারছি সকালটা আপনার ভালো কাটলেও বিকেল থেকে একদম মধ্য রাত্রি পর্যন্ত খুবই পরিশ্রম করেছেন। আশা করি আপনার অসুস্থ আত্মীয় অতি শীঘ্রই সুস্থ হয়ে উঠবেন দোয়া রইল।
Congratulations!
Your post has been manually upvoted by the SteemPro team! 🚀
This is an automated message.
If you wish to stop receiving these replies, simply reply to this comment with turn-off
Visit here.
https://www.steempro.com
SteemPro Official Discord Server
https://discord.gg/Bsf98vMg6U
💪 Let's strengthen the Steem ecosystem together!
🟩 Vote for witness faisalamin
https://steemitwallet.com/~witnesses
https://www.steempro.com/witnesses#faisalamin