নাটক রিভিউ // লাল ঘুড়ি ।

🥰.. আসসালামুয়ালাইকুম ...🥰

প্রিয় হিন্দু ভাই-বোনদের জন্য আদাব ও ভালোবাসা 💗🙏। আমার প্রিয় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল বন্ধুদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও স্নেহ। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি, মহান আল্লাহর রহমতে এবং একে অপরের ভালোবাসায় আপনারা সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও বেশ ভালো আছি।আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির একজন সদস্য,এই প্ল্যাটফর্মের সাথে আমার যাত্রা প্রায় এক বছর ধরে। সত্যি বলতে, এখানে আসতে পেরে আমার মনে হচ্ছে ! যেন নিজের আর একটি নতুন পরিবার খুঁজে পেয়েছি। প্রতিটি লেখা, প্রতিটি মন্তব্য, প্রতিটি বন্ধুত্ব আমাকে দিয়েছে আনন্দ, ভালোবাসা এক নতুন অধ্যায়ের স্বাদ।আজকে আমি আপনাদের সাথে নাটক রিভিউ শেয়ার করবো। নাটকের নাম হলো //" লাল ঘুড়ি " ।আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক অনেক ভালো লাগবে। চলুন এবার শুরু করা যাক।

_{স্ক্রিনশট টি ইউটিউব থেকে নেয়া হয়েছে}

নাটক সম্পর্কে কিছু তথ্য:

নাটকের নাম:	লাল ঘুড়ি
সহকারী পরিচালক:	সোহেল রানা
চিত্রগ্রহণ (DOP):	শেখ সুজন
সম্পাদনা:	অর্ণব
রচনা:	সোহেল রানা
অভিনয়ে:	মোর্তোজা পলাশ, সামন্তি শৌমী, শিশুশিল্পী (উষা), শিবা সানু, তুলি, নুপুর প্রমুখ।
দেশ:	বাংলাদেশ
ভাষা:	বাংলা
দৈর্ঘ্য :	৪৩মিনিট
তারিখ :	১৫ জুলাই
প্ল্যাটফর্ম:	ইউটিউব (Joy Pagol Multimedia)

নাটকের সারসংক্ষেপ কাহিনী :-

---

নাটকটি শুরু হয় এক কর্মজীবী দম্পতির জীবন নিয়ে, যারা নিজেদের ব্যস্ততায় হারিয়ে ফেলেছেন তাদের একমাত্র কন্যা উষাকে।অফিসে দেরি, বাসায় এলে ঝগড়া। এই চক্রে বন্দি বাবা-মা কখনোই বুঝে উঠতে পারেননি মেয়ের ছোট ছোট আবদারগুলোর গুরুত্ব। উষা শুধু চেয়েছিল একটি লাল ঘুড়ি, একটু সময়, একটু ভালোবাসা।

নাটকের সূচনা হয় এক সকাল বেলা, মা অফিসে বের হওয়ার তোড়জোড় করছেন, আর ছোট মেয়ে ঊষা মাকে জড়িয়ে ধরে আবদার করে "এত তাড়াতাড়ি যাচ্ছো কেন?" মা অবশ্য মেয়েকে ভালোবাসায় সাড়া দিলেও, পরক্ষণেই বাড়ির কাজের মেয়ে তুলির ওপর অন্যায় রাগ ঝাড়েন এবং এক থাপ্পড় বসিয়ে দেন, যদিও তুলি দায়িত্বশীল এবং ভালো মানুষ। বাবার (সাব্বির) হস্তক্ষেপে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়, এবং সবাই নিজ নিজ কাজে বেরিয়ে পড়ে। সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে মেয়ের লাল ঘুড়ির আবদারটিও ভুলে যান মা, যা ঊষার মনে গভীর কষ্ট সৃষ্টি করে।এই নিয়ে আবারও দম্পতির মধ্যে কলহ বাঁধে।বাবাকে জড়িয়ে ধরে উষা তার মনের দুঃখ জানায়, আর বাবা প্রতিশ্রুতি দেয় সে ঘুড়ি এনে দেবে। মেয়ে খুশি হয়ে বাবাকে ভালোবাসায় ভরিয়ে দেয়। পরদিন তুলিকে নিয়ে এক ঘটনা ঘটে ,মায়ের সঙ্গে তর্কের জেরে তাকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। ঊষা তুলিকে ছাড়তে চায় না, কারণ সে-ই ছিল তার একমাত্র সঙ্গী।এরপর আসে নতুন কাজের মেয়ে নুপুর, যে দায়িত্বহীন ও উদাসীন। সে ঊষাকে খাবার দেয় না, বরং সারাদিন টিকটক ভিডিও নিয়ে ব্যস্ত থাকে। ঊষা তার মা-বাবার প্রতি আবেগঘন একটি চিঠি লেখে ।যেখানে সে তাদের সঙ্গে সময় কাটানোর আকুতি জানায়, শুক্রবার ঘুরতে যাওয়ার ইচ্ছার কথা বলে। চিঠিটি পড়ে বাবা-মা কিছুটা আবেগপ্রবণ হন এবং প্রতিজ্ঞা করেন, মেয়েকে সময় দেবেন।কিন্তু বাস্তব জীবন তাদের প্রতিজ্ঞা রাখতে দেয় না। কাজের চাপে তারা আবারও মেয়ে থেকে দূরে সরে যান। একদিন ঊষা নুপুরের সঙ্গে একটু ঘুরতে যেতে চাইলে সে তার গলা টিপে ধরে। ভীত, কষ্টাহত ঊষা ছাদে গিয়ে নিঃসঙ্গতায় ভেঙে পড়ে।সে অন্য বন্ধুদের বাবা-মার ভালোবাসার কথা ভাবতে ভাবতে হঠাৎ একটি লাল ঘুড়ি দেখে ছাদের কিনারে চলে যায়। ঘুড়িটি ধরতে গিয়ে সে ছাদ থেকে পড়ে যায় এবং মারা যায়।শেষ দৃশ্যে মা এসে মেয়েকে বুকে জড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে। কিছুক্ষণ পর বাবা জন্মদিনের কেক হাতে এসে মেয়ের নিথর দেহ দেখে ভেঙে পড়ে ।কোল করে রাস্তায় রাস্তায় ছুটে বেড়ায় সব হারানোর যন্ত্রণায় দগ্ধ হয়ে।

নাটকটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় ।সন্তানদের বড় চাওয়া থাকে না, তারা শুধু সময়, ভালোবাসা, আর পরিবারের একটু উপস্থিতি চায়। আমাদের ব্যস্ত জীবনে আমরা সেটুকুও দিতে পারি না, এবং যখন বুঝি তখন অনেক দেরি হয়ে যায়।

---

আমার ব্যক্তিগত মতামত :-

---

নাটকটি হৃদয়কে কাঁপিয়ে দেওয়া এক বাস্তব আখ্যান। ছোট একটি আবদার , লাল ঘুড়ি ,কত বড় এক পরিণতির দিকে নিতে পারে, তা ভাবলে গা শিউরে ওঠছে।উষার চিঠি, তার মুখভঙ্গি, মায়ের অবহেলা আর বাবার দেরি। এইসব দৃশ্যগুলো খুব স্বাভাবিক অথচ ভীষণ আবেগঘন। নাটকটি শুধু একটি গল্প নয়, এটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি আয়না।সন্তানকে সময় দেওয়া, তাদের কথা শোনা ,এসব কোনো বাড়তি দায়িত্ব নয়, বরং ভালোবাসার মৌলিক প্রকাশ। এটি প্রত্যেক অভিভাবকের দেখা উচিত।

নাটকটি আমার হৃদয় ছুঁয়ে গেছে। বিশেষ করে উষার চিঠির অংশ এবং শেষ দৃশ্যটি ভীষণ আবেগপ্রবণ। এটি শুধু এক কাহিনি নয়, এটি একটি সতর্কবার্তা আমরা যেন ভুলে না যাই, আমাদের সন্তানের মুখের হাসিই জীবনের আসল সম্পদ।যেকোনো বাবা-মা, বিশেষ করে যারা চাকরি নিয়ে ব্যস্ত থাকেন, তাদের জন্য এটি অবশ্যদ্রষ্টব্য একটি নাটক। ৪৩ মিনিট এর এই নাটকটি হয়তো আমাদের চিন্তাভাবনায় একটি বড় পরিবর্তন আনতে পারে।

---

নাটকের লিংক

---

আমার নাম মোছাঃ সামছুন্ নাহার সুইটি । আমি একজন বাংলাদেশী মুসলিম নাগরিক । আমি আমার মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। আমি অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ালেখা করি । আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করার জন্য যুক্ত হয়েছি । আমি গত ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই । এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি ।আমি ভ্রমণ করতে অনেক বেশি পছন্দ করি।সেই সাথে নতুন নতুন ফটোগ্রাফি করতে ও ইউনিক রেসিপি এবং নতুন নতুন ইউনিক ডাই তৈরি করতে বেশ পছন্দ করি । আর স্টিমিট প্ল্যাটফর্মকে আঁকড়ে ধরে ভবিষ্যতে আরো এগিয়ে যেতে চাই, এটাই আমার লক্ষ্য।