সবচেয়ে বড় বিদ্যাপীঠে পড়েও সভ্যতা শিখতে পারলো না।
বাংলা ভাষার কমিউনিটি
হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো এবং সুস্থ আছেন।
একটি সত্য কথাই বারবার প্রমাণিত, একটি জাতির সভ্যতার পরিচয় শুধু তার জ্ঞান-বিজ্ঞান, প্রযুক্তি বা অর্থনৈতিক উন্নতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। সভ্যতা আসলে নির্ধারিত হয় সেই জাতির মনোভাব, সহমর্মিতা এবং অন্যের কল্যাণে কাজ করার মানসিকতার মাধ্যমে। একজন মানুষ বা একটি সমাজ তখনই সভ্যতার শীর্ষে পৌঁছায়, যখন তারা হয় নিজেরা অন্যের উপকার করে, নয়তো অন্তত্য অন্য কেউ উপকার করলে তা সমর্থন করে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, আমাদের সমাজে এখনো এমন কিছু মানুষ আছে যারা নিজে উপকার করতে না পারলেও, অন্য কেউ উপকার করলে তা সহ্য করতে পারে না।
সম্প্রতি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা আমাদের এই বাস্তবতাকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে কিছু শিক্ষার্থীর সুবিধার্থে কয়েকটি পানির ফিল্টার স্থাপন করা হয়েছিল। যারা এগুলো স্থাপন করেছিলেন, তাদের কোন ব্যক্তিগত স্বার্থ ছিল না। এটি ছিল একটি সম্পূর্ণ জনকল্যাণমূলক উদ্যোগ, যাতে করে গরমে কিংবা সাধারণ দিনে শিক্ষার্থীরা বিশুদ্ধ পানির স্বাদ পেতে পারে।
আমরা সবাই জানি, ঢাকা শহরে বিশুদ্ধ পানির অভাব কতটা তীব্র। পানির দূষণ, লাইনে পানির অভাব, কিংবা বোতলজাত পানির দাম, সব মিলিয়ে এখানে সুপেয় পানি পাওয়া অনেকের জন্যই কষ্টকর ব্যাপার। এই প্রেক্ষাপটে ক্যাম্পাসে পানির ফিল্টার বসানো নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় একটি উদ্যোগ ছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয়, কিছু শিক্ষার্থী সেই ফিল্টারগুলো ভেঙে ফেলেছে। এটি শুধু নিন্দনীয় নয়, বরং সম্পূর্ণ অমানবিক আচরণ।
আমরা যদি কারো ভালো কাজকে সমর্থন না করি, অন্তত তা বিনষ্ট করার মতো মনোভাব রাখা সভ্য সমাজের অংশ হতে পারে না। ভাবা যায়, যারা শিক্ষিত হওয়ার জন্য, সচেতন হওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছে, তারাই যদি এ ধরনের অসভ্য আচরণ করে, তাহলে সাধারণ মানুষ কেমন উদাহরণ পাবে?
আরও একটি বিষয় মনে রাখা জরুরি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শুধু বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীরাও এখানে পড়াশোনা করে। তারা এই দেশ, এই সংস্কৃতি, এই সমাজের একটি চিত্র নিয়ে ফিরে যায়। আমরা যদি নিজের দেশের ভেতরে এমন অসভ্য আচরণ করি, তাহলে বিদেশি শিক্ষার্থীদের কাছে আমরা কেমন একটি বার্তা পাঠাচ্ছি? তারা যদি দেখে, আমরা একে অপরের উপকারের জিনিস নষ্ট করছি, তাহলে তারা আমাদের দেশ সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা গড়ে তুলবে নাকি নেতিবাচক?
সভ্য জাতি হিসেবে আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে একে অপরকে সহায়তা করা, জনকল্যাণমূলক কাজগুলোকে সমর্থন করা এবং সেগুলো রক্ষা করা। আমরা যখন দেখি কেউ নিজের সময়, অর্থ এবং শ্রম দিয়ে মানুষের জন্য কিছু করছে, তখন সেটিকে ধ্বংস না করে বরং কৃতজ্ঞচিত্তে গ্রহণ করা উচিত।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পানির ফিল্টার ভাঙার ঘটনা নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য একটি সতর্কবার্তা। যদি আমরা এখনো নিজেদের মানসিকতা পরিবর্তন না করি, তাহলে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আরো ঘটতে পারে। আমাদের উচিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এমন একটি পরিবেশ তৈরি করা, যেখানে সহমর্মিতা, সহযোগিতা এবং ইতিবাচকতা থাকবে।
শেষ কথা, আমরা আমাদের কাজকর্মের মাধ্যমে প্রমাণ করব যে আমরা সত্যিই একটি সভ্য জাতি। সভ্যতা শুধু মুখে বললেই হয় না, এটি বাস্তবে আচরণের মাধ্যমে প্রমাণ করতে হয়। আশা করি, এই ঘটনার মাধ্যমে আমরা সবাই শিক্ষা নেব এবং ভবিষ্যতে এরকম অসভ্য আচরণ আর কেউ করবে না।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
https://x.com/RamimHa74448648/status/1954420280551698765?t=UWeJ8w4IEyDmrdP0TFYbpQ&s=19
https://x.com/RamimHa74448648/status/1954421001330082292?t=fPMoTJAH4smkqbrULZ6wkQ&s=19