ড্রাগ আসক্তি থেকে মুক্তির উপায়

আমি @arpita007 বাংলাদেশ থেকে। কেমন আছেন সকল বাংলাদেশী এবং ইন্ডিয়ান বন্ধু -বান্ধবীগণ? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।আজকে ফিরে এলাম আপনাদের মাঝে আবার নতুন একটি ব্লগ নিয়ে ।

সোর্স

ড্রাগ বা মাদকাসক্তি আজকের সমাজের জন্য এক ভয়াবহ সমস্যা। এটি শুধু একজন ব্যক্তির শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে না, বরং পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রকেও বিপর্যস্ত করে তোলে। আসক্ত ব্যক্তি ধীরে ধীরে তার স্বাভাবিক জীবনযাপন হারিয়ে ফেলে এবং সামাজিক অপরাধ, দারিদ্র্য ও পারিবারিক অশান্তির অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই ড্রাগ আসক্তি থেকে মুক্তি পেতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।

প্রথমত, ড্রাগ থেকে মুক্তি পেতে সবচেয়ে জরুরি হলো সচেতনতা বৃদ্ধি। অনেকেই কৌতূহল, বন্ধুদের প্ররোচনা বা হতাশা থেকে প্রথমে মাদক গ্রহণ করে। যদি শুরুতেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পরিবার ও সমাজে মাদকের ক্ষতিকর দিকগুলো নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করা যায়, তবে নতুন প্রজন্মকে আসক্ত হওয়া থেকে রক্ষা করা সম্ভব।

দ্বিতীয়ত, আসক্ত ব্যক্তিকে একা ফেলে রাখা যাবে না। পরিবারকে ধৈর্য সহকারে তার পাশে দাঁড়াতে হবে। ভালোবাসা, সহমর্মিতা এবং মানসিক সহায়তার মাধ্যমে তাকে বোঝাতে হবে যে জীবনকে সুন্দরভাবে গড়ে তোলা সম্ভব। পরিবার ও বন্ধুদের সমর্থন একজন আসক্ত ব্যক্তির পুনর্বাসনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

তৃতীয়ত, চিকিৎসা ও কাউন্সেলিং অপরিহার্য। ড্রাগ আসক্তি শুধুমাত্র ইচ্ছাশক্তির মাধ্যমে দূর করা সম্ভব নয়। এজন্য বিশেষায়িত পুনর্বাসন কেন্দ্র ও চিকিৎসকের সহায়তা নেওয়া প্রয়োজন। চিকিৎসার পাশাপাশি মানসিক পরামর্শ বা কাউন্সেলিং একজন ব্যক্তিকে নতুনভাবে জীবন শুরু করার অনুপ্রেরণা যোগায়।

চতুর্থত, বিকল্প কাজে ব্যস্ত রাখা আসক্তি থেকে মুক্তির আরেকটি কার্যকর উপায়। যারা মাদকাসক্ত হয়, তাদের বেশিরভাগই অবসর সময়ে নেতিবাচক চিন্তায় ভোগে। তাই তাদের খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, সামাজিক সেবা কিংবা অন্য কোনো ইতিবাচক কাজে যুক্ত করা যেতে পারে। এতে তাদের মন অন্যদিকে প্রবাহিত হবে এবং মাদকের প্রতি আকর্ষণ কমে আসবে।

পঞ্চমত, সরকার ও সমাজের সম্মিলিত উদ্যোগও প্রয়োজন। মাদক ব্যবসা ও সরবরাহ কঠোর হাতে দমন করতে হবে। পাশাপাশি মাদকবিরোধী প্রচারাভিযান চালিয়ে যেতে হবে, যাতে সাধারণ মানুষ সচেতন হয়। স্কুল-কলেজে নিয়মিতভাবে মাদকবিরোধী সেমিনার ও কর্মশালা আয়োজন করা যেতে পারে।

ষষ্ঠত, ব্যক্তিগতভাবে আসক্তকে তার নিজের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে চিন্তা করতে উৎসাহিত করতে হবে। তাকে বোঝাতে হবে যে মাদক কেবল মৃত্যু ও ধ্বংস ডেকে আনে, আর মাদকমুক্ত জীবনই হলো সফলতার প্রকৃত পথ। শক্ত ইচ্ছাশক্তি এবং আত্মপ্রত্যয় একজন মানুষকে আসক্তি থেকে বের করে আনতে সক্ষম।

সবশেষে বলা যায়, ড্রাগ আসক্তি থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব যদি ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র একসঙ্গে কাজ করে। এটি কোনো একদিনে অর্জিত ফল নয় দীর্ঘমেয়াদী প্রচেষ্টা, ধৈর্য ও সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমেই এ সমস্যার সমাধান সম্ভব। আসক্ত ব্যক্তিকে ছোট করে দেখা নয়, বরং তাকে একজন রোগীর মতো চিকিৎসা ও সহায়তা প্রদান করতে হবে। মাদকমুক্ত সুস্থ সমাজ গড়াই আমাদের সবার লক্ষ্য হওয়া উচিত।

আমি অর্পিতা নওশিন তিশা। আমি বর্তমানে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়াশোনা করছি। আমার শখের মধ্যে রান্না করতে ভালোবাসি এবং গল্পের বই পড়তেও ভালোবাসি । তাছাড়া অবসর সময়ে ছবি আঁকতে,গান শুনতে এবং বিভিন্ন ধরনের কমেডি, থ্রিলার, হরর মুভি দেখতে পছন্দ করি। এছাড়াও হিন্দি ডাবিং করা নাটকগুলো দেখতে পছন্দ করি।