৩০টি বিখ্যাত ইরানি প্রবাদ বাক্য যা নতুন করে ভাবতে শেখাবে

প্রবাদ বাক্য হলো কোনো জাতির অভিজ্ঞতা, বুদ্ধিমত্তা আর জীবনের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির নিঃশব্দ ভাষ্য। আর ইরানি প্রবাদ বাক্যগুলো সেই অর্থে এক অনন্য ধ্যানজগৎ—যেখানে গভীর জীবনদর্শন, সূক্ষ্ম ব্যঙ্গ ও বাস্তবতার নির্যাস একসাথে মিশে আছে।

হাজার বছরের পারস্য সভ্যতা থেকে উঠে আসা এই ইরানি প্রবাদ বাক্যগুলো শুধুমাত্র কথার ফুলঝুরি নয়, বরং প্রতিটি প্রবাদ একেকটি আয়না, যা আমাদের চিন্তা করতে শেখায়—নিজেকে, সম্পর্ককে, সমাজকে এবং জীবনের জটিলতাকে নতুনভাবে দেখতে।

এই ব্লগে আমরা এমনই ৩০টি বিখ্যাত ইরানি প্রবাদ শেয়ার করেছি।
জীবনের নানা পর্যায়ে এই প্রবাদগুলো হতে পারে আপনার ভিন্নমত, দিকনির্দেশনা বা আত্মবিশ্লেষণের অনুপ্রেরণা।

১৫ টি ইরানি প্রবাদ বাক্য
—> যখন একটি গাছ ভেঙে পড়ে, সবাই সেই শব্দ শুনতে পায়; কিন্তু, একটি গাছ বেড়ে ওঠে নিঃশব্দে।
—> সাপ ধরতে ব্যবহার করো তোমার শত্রুর হাত।
—> যখন মোক্ষম সময় আসে, শিকারই শিকারী হয়ে ওঠে।
—> একই সাথে খোদা ও খেজুর চেয়ো না।
—> যতো দূর দেখা যায়, ততো দূর যাও; তারপর আরো দূরে দেখতে পাবে।
—> সাপ যখন বৃদ্ধ হয়ে পড়ে, ব্যাঙও উপহাস করে।
—> যদি তুমি অন্ধের শহরে প্রবেশ করো, নিজের চোখ ঢেকে নিয়ো।
—> সত্যিকারের কবর তো মাটিতে নয়, থাকে মানুষের বুকে।
—>দুটো তরমুজ তুমি এক হাত দিয়ে তুলতে পারবে না।
—> দেখতে গোলাকার হলেও, সবটাই আখরোট নয়।
—> পড়শির মুরগিকে সবসময়ই রাজহাঁস মনে হয়।
—> জ্ঞানী লোক সবসময় বসে নিজের গালিচার ছিদ্র হয়ে যাওয়া জায়গাটায়।
—> যখন দুর্ভাগ্য আসে, এমনকি মোরব্বা খেতেও তোমার দাঁত ভেঙে যেতে পারে।

১৫ টি ইরানি প্রবাদ বাক্য
—> কুকুর যদি সিংহের নকল করে, তাতে সে সিংহ হয়ে যায় না।

ব্যাখ্যাঃ বাহ্যিক অনুকরণে প্রকৃত রূপ বদলায় না।

—> পাহাড় কখনো পাহাড়ের সঙ্গে মেলে না, মানুষ মানুষের সাথেই দেখা হয়।
ব্যাখ্যাঃ মানুষের সম্পর্ক এবং সাক্ষাৎ অনিবার্য।

—> যে আগুন অন্যের জন্য খুঁড়ো, নিজেই একদিন সেই আগুনে পড়বে।

ব্যাখ্যাঃ অপকার করার ফল একদিন নিজের দিকেই ফিরে আসে।

—> তুমি যদি নিজের ছায়া পেছনে ফেলতে চাও, তাহলে আলোকে সামনে রাখো।
ব্যাখ্যাঃ জীবন এগিয়ে নিতে আলো বা ইতিবাচকতা বেছে নিতে হয়।

—> অতি মিষ্টি ফলেও মাঝে মাঝে পোকা থাকে।
ব্যাখ্যাঃ বাহ্যিক সৌন্দর্য সবসময় আস্থা যোগ্য নয়।

—> পাথরের যতই দাম থাকুক, জুতা তাতে বানানো যায় না।
ব্যাখ্যাঃ প্রতিটি জিনিসের উপযোগিতা আলাদা।

—> ভাঙা আয়নাতে নিজের প্রতিচ্ছবি খোঁজো না।
ব্যাখ্যাঃ ভুল বা বিপর্যয়ের মাঝে নিজেকে সঠিকভাবে দেখতে চাওয়া বৃথা।

—> যত বেশি শব্দ, তত কম জ্ঞান।
ব্যাখ্যাঃ প্রকৃত জ্ঞানীরা কম কথা বলেন।

—> শুকনা মাটি থেকে কখনোই গোলাপ গজায় না।
ব্যাখ্যাঃ ফল পেতে হলে উপযুক্ত পরিবেশ ও শ্রম লাগে।

—> তুমি যত বেশি পানির মধ্যে ডুব দেবে, তত বেশি মুক্তা পাবে।
ব্যাখ্যাঃ গভীর পরিশ্রম ছাড়া মূল্যবান কিছু অর্জন হয় না।

—> যে থালায় তুমি খাও, সেটায় থুথু ফেলো না।
ব্যাখ্যাঃ যে তোমার উপকার করেছে, তার প্রতি কৃতঘ্ন হওয়া উচিত নয়।

—> দুধ দাও, কিন্তু এমনভাবে নয় যেন গোটা গরুই দিয়ে দাও।
ব্যাখ্যাঃ দান বা সাহায্যে সংযম রাখা উচিত।

—> তুমি যদি মরুভূমিতেও ফুল চাষ করতে পারো, তবে cactus এর কাঁটার ভয় পেও না।
ব্যাখ্যাঃ প্রতিকূলতার মধ্যেও সাহস রাখতে হয়।

—> চোরের পা কুয়োয় গিয়েই ধরা পড়ে।
ব্যাখ্যাঃ অন্যায় কাজ একদিন ধরা পড়েই যায়।

—> কিছু মানুষ এতটাই দরিদ্র যে, তাদের একমাত্র সম্পদ হচ্ছে টাকা।
ব্যাখ্যাঃ আসল ধন মানসিকতা, ভালোবাসা ও সততা।

—> যদি আকাশ থেকে সোনা পড়ে, দুর্ভাগা মানুষের মাথায় কাঁঠালই পড়ে।
ব্যাখ্যাঃ দুর্ভাগ্য যেন কখনো পিছু ছাড়ে না।

—> একটা উট কখনো তার নিজের কুঁজ দেখতে পায় না।
ব্যাখ্যাঃ মানুষ অন্যের ভুল দেখে, নিজেরটা নয়।

—> একটি বোবা লোকও স্বর্ণের দামে বিকোতে পারে, যদি সে চুপ থাকে।
ব্যাখ্যাঃ কখনো কখনো নীরবতাই সবচেয়ে জোরালো ভাষা।

—> যে মানুষ সোজা হাঁটে, তার ছায়াও বাঁকা হয় না।
ব্যাখ্যাঃ সৎ মানুষের চরিত্র সবখানেই সোজা।