ঈদের পর নানুবাড়ি ফিরে দেখা শৈশবের আনন্দ যাত্রার অনুভূতি ।।

🥰.. আসসালামুয়ালাইকুম ...🥰

প্রিয় হিন্দু ভাই-বোনদের জন্য আদাব ও ভালোবাসা 💗🙏। আমার প্রিয় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল বন্ধুদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও স্নেহ। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি, মহান আল্লাহর রহমতে এবং একে অপরের ভালোবাসায় আপনারা সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও বেশ ভালো আছি।আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির একজন সদস্য,এই প্ল্যাটফর্মের সাথে আমার যাত্রা প্রায় এক বছর ধরে। সত্যি বলতে, এখানে আসতে পেরে আমার মনে হচ্ছে ! যেন নিজের আর একটি নতুন পরিবার খুঁজে পেয়েছি। প্রতিটি লেখা, প্রতিটি মন্তব্য, প্রতিটি বন্ধুত্ব আমাকে দিয়েছে আনন্দ, ভালোবাসা এক নতুন অধ্যায়ের স্বাদ।আজকে আমি আপনাদের সাথে ঈদের পর নানুবাড়ি ফিরে দেখা শৈশবের আনন্দ যাত্রার অনুভূতি শেয়ার করবো । আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক অনেক ভালো লাগবে। চলুন এবার শুরু করা যাক।

ঈদ এই একটি শব্দেই যেন হৃদয়ের ভেতর এক রঙিন ঢেউ বয়ে যায়। সকালবেলার নতুন জামা পরে বাবা দাদুরি নামাজে যাওয়া, হাতে হাতে ঈদের সালামি পাওয়া ।সব মিলে মনে একরাশ খুশি, আমাদের রঙিন জামা, সুস্বাদু খাবার আর প্রিয় মানুষদের সঙ্গে একসাথে সময় কাটানো। কিন্তু ঈদের আনন্দ তখনই যেন পূর্ণ হতো, যখন মা বলতেন, “চলো, এবার নানুবাড়ি যাব।” এই একটা বাক্য শুনলেই মনে হতো ঈদের আরেক পর্ব শুরু হলো।আমাদের বাসা থেকে নানুবাড়ির দূরত্ব বেশি নয়, মাত্র ৪০ মিনিটের পথ সোজা গ্রাম দিকে। কিন্তু এই পথটাই তখন মনে হতো এক স্বপ্নপুরীর দিকে যাত্রা। সবুজ ধানক্ষেত, মাটির রাস্তা, বাতাসে ভেসে আসা নাম না জানা ফুলের গন্ধ ,সব কিছু যেন বলত, “তোমরা আসছো, তোমাদের ছোটবেলা ফিরে আসছে।”

নানুবাড়িতে পৌঁছালে শুরু হতো আনন্দের ঝাঁপি খোলা। মামা, খালা, নানা, নানি সবাই যেন সযত্নে সেই ভালোবাসা জমিয়ে রেখেছিলেন আমাদের জন্য। আর মামাতো ভাইবোনদের সঙ্গে মিলেমিশে যা হতো, তা কেবল একটা শব্দেই বোঝানো যায় মজা। একসাথে খেলা, গাছে উঠে ফল পাড়া, দুপুরে পেট ভরে খাওয়ার পর সবাই মিলে গল্পগুজব।দৌড়ঝাঁপ, হুল্লোড়, পাড়ার রাস্তায় হেঁটে বেড়ানো, সন্ধ্যায় ছাদে উঠে চাঁদ দেখা,সব কিছুতেই ছিল এক অনন্য স্বাদ।আর সবচেয়ে বড় কথা, এই সময়টাতে কেউ কোনো কিছু নিয়ে বকতো না, না পড়া, না ঘুম, না খাওয়ার সময় মুঠোফোন সবকিছু থেকে মুক্ত এক পৃথিবী। মনে হতো, এই কয়েকটা দিন যেন কেবল আমাদের, শুধুই আনন্দের ।এগুলো ছিল আমাদের শৈশবের ঈদের পরের স্বর্ণসময়।

তবে সময় তো আর থেমে থাকে না। বড় হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বদলেছে জীবনের ব্যস্ততা। এখন আর আগের মতো গণগনে নানুবাড়ি যাওয়া হয় না। নানা কাজ, দায়িত্ব আর দূরত্ব মিলে যেন সেই সহজ সরল আনন্দ গুলোকে একটু আড়াল করে রেখেছে।তবুও এবারের ঈদে হঠাৎ করেই গিয়েছিলাম নানুবাড়ি। মনটা ভরে উঠেছিল পুরনো দিনের মতো করে। একদিন-দুইদিনের জন্য হলেও সেই পুরোনো উষ্ণতা ফিরে পেয়েছিলাম। নানুর হাতের রান্না, মামার গল্প, খালার আদর ,সব কিছু যেন বলছিল, “তোমার শৈশব এখানেই এখনও বেঁচে আছে, অপেক্ষায় ছিল কেবল তোমার আসার।”

সেই ছোটবেলার মতো এখন আর নিয়মিত যাওয়া হয় না, অনেক কিছুই পাল্টে গেছে, কিন্তু ভালোবাসা ঠিক আগের মতোই অটুট আছে। ঈদের পর নানুবাড়ি যাওয়ার আনন্দটা এখন স্মৃতির সঙ্গে মিশে আরও গভীর হয়েছে।জীবনের প্রতিটা ব্যস্ত দিনের মাঝে এইরকম হঠাৎ করে পাওয়া মুহূর্তগুলোই আসলে আমাদের বেঁচে থাকার রসদ। আর নানুবাড়ি? সে তো হৃদয়ের সেই কোণায় থাকা ভালোবাসার ঘর, যেখানে ফিরে গেলে সব ক্লান্তি ভুলে যাওয়া যায়।

এবারের ঈদের পর হঠাৎ করেই গিয়ে ছিলাম নানুবাড়ি। বহুদিন পর গ্রাম্য পরিবেশে গিয়ে যেন মনটা একেবারে সতেজ হয়ে উঠেছিল। চারদিকে সবুজে ঘেরা প্রকৃতি, খোলা মাঠ, পাখির ডাক, আর মাটির সোঁদা গন্ধ ,সব কিছুতেই এক ধরনের প্রশান্তি ছিল। মামা-খালা আর ভাইবোনদের সঙ্গে মিলে গুঁড়াঘুঁড়ি করেছি এদিক-ওদিক, গ্রামের রাস্তা ধরে হেঁটে বেড়িয়েছি, কখনো আবার পুকুর পাড়ে বসে গল্প করেছি। এমন সময় কাটানোর সুযোগ এখন আর তেমন হয় না, তাই এবারের এই ছোট্ট সফরটা অনেক বড় আনন্দ হয়ে ধরা দিয়েছিল। একসাথে কাটানো প্রতিটা মুহূর্তই যেন শৈশবের কোনা থেকে উঠে আসা স্মৃতির মতো মনে হচ্ছিল।

ঈদের পরের এই একটুখানি ভ্রমণ শুধু একটি সফর নয়, বরং তা হয়ে ওঠে আমাদের হৃদয়ের আরাম কুরসিতে বসে একটু বিশ্রাম নেওয়ার মতো। এবং সেই বিশ্রামের মুহূর্তগুলো আমাদের জীবনের সবচেয়ে দামী স্মৃতি হয়ে থাকে।

এই ছিল আজকের ব্লগ । আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।কার কাছে কেমন লেগেছে তা অবশ্যই কমেন্টের মন্তব্য করে জানাবেন। কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আজকের মত বিদায় নিচ্ছি, আবার নতুন কিছু নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে।সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং সবার জন্য অনেক শুভকামনা রইল ।

আমার নাম মোছাঃ সামছুন্ নাহার সুইটি । আমি একজন বাংলাদেশী মুসলিম নাগরিক । আমি আমার মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। আমি অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ালেখা করি । আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করার জন্য যুক্ত হয়েছি । আমি গত ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই । এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি ।আমি ভ্রমণ করতে অনেক বেশি পছন্দ করি।সেই সাথে নতুন নতুন ফটোগ্রাফি করতে ও ইউনিক রেসিপি এবং নতুন নতুন ইউনিক ডাই তৈরি করতে বেশ পছন্দ করি । আর স্টিমিট প্ল্যাটফর্মকে আঁকড়ে ধরে ভবিষ্যতে আরো এগিয়ে যেতে চাই, এটাই আমার লক্ষ্য।