পরিবেশ দূষণ রোধে করণীয়

আমি @arpita007 বাংলাদেশ থেকে। কেমন আছেন সকল বাংলাদেশী এবং ইন্ডিয়ান বন্ধু -বান্ধবীগণ? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।আজকে ফিরে এলাম আপনাদের মাঝে আবার নতুন একটি ব্লগ নিয়ে ।

সোর্স

বর্তমান বিশ্বে পরিবেশ দূষণ একটি জটিল ও ভয়াবহ সমস্যা। মানুষ তার দৈনন্দিন জীবনযাপন ও উন্নয়নের প্রয়োজনে নানা রকম কাজ করছে, যার ফলে প্রকৃতি ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। শিল্পকারখানা, যানবাহন, প্লাস্টিক, বনভূমি ধ্বংস, অতিরিক্ত রাসায়নিক ব্যবহার ইত্যাদি পরিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। এর ফলশ্রুতিতে আমরা পাচ্ছি দূষিত বায়ু, দূষিত পানি, নষ্ট হয়ে যাওয়া মাটি এবং ধ্বংসপ্রাপ্ত জীববৈচিত্র্য। তাই পরিবেশ দূষণ রোধ করা এখন সময়ের দাবি।

প্রথমেই বলা যায় বায়ুদূষণ সম্পর্কে। শহরাঞ্চলে প্রচুর যানবাহনের কালো ধোঁয়া, কারখানার চিমনি থেকে নির্গত ক্ষতিকর গ্যাস এবং পলিথিন ও আবর্জনা পোড়ানোর ফলে বায়ু মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে। এর ফলে অ্যাজমা, শ্বাসকষ্ট, ফুসফুসের ক্যানসারসহ নানা রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। বায়ুদূষণ রোধে আমাদের প্রয়োজন গাছপালা রোপণ করা, যানবাহনের ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণ করা এবং পরিষ্কার জ্বালানি ব্যবহার করা।

এরপর জলদূষণ নিয়ে আলোচনা করা প্রয়োজন। শিল্পকারখানার বর্জ্য, রাসায়নিক সার, কীটনাশক, হাসপাতালের বর্জ্য এবং প্লাস্টিক নদী-খাল-বিলে ফেলে দেওয়ায় পানি মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে। এর ফলে পানির নিচের জীববৈচিত্র্য নষ্ট হচ্ছে এবং মানুষও নিরাপদ পানি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। জলদূষণ রোধ করতে হলে শিল্পবর্জ্য শোধন করে পানিতে ফেলতে হবে, প্লাস্টিক ব্যবহার কমাতে হবে এবং নিরাপদ পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।

মাটিদূষণ পরিবেশ দূষণের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। কৃষিজমিতে অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার করলে মাটির প্রাকৃতিক উর্বরতা নষ্ট হয়ে যায়। তাছাড়া পলিথিন ও প্লাস্টিক মাটির সঙ্গে মিশে দীর্ঘ সময় ধরে মাটিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এ সমস্যা সমাধানে জৈব সার ব্যবহার, প্লাস্টিক বর্জ্য হ্রাস এবং মাটির প্রাকৃতিক গঠন বজায় রাখা জরুরি।

শব্দদূষণও বর্তমান সময়ে একটি বড় সমস্যা। যানবাহনের হর্ন, উচ্চ শব্দে মাইক বাজানো, কারখানার শব্দ মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত করছে। শব্দদূষণের কারণে শ্রবণশক্তি হ্রাস, অনিদ্রা, মাথাব্যথা এমনকি মানসিক অস্থিরতাও দেখা দেয়। তাই শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সরকারের কঠোর আইন প্রয়োগ এবং মানুষের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

পরিবেশ দূষণ রোধে কিছু কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। যেমন গাছ আমাদের অক্সিজেন দেয় এবং পরিবেশকে শীতল রাখে। তাই প্রত্যেকের উচিত প্রতি বছর অন্তত একটি করে গাছ লাগানো ও পরিচর্যা করা।কয়লার পরিবর্তে বিদ্যুৎ, সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি ইত্যাদি নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করতে হবে।স্কুল, কলেজ ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের মাধ্যমে পরিবেশ রক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে মানুষকে জানাতে হবে।শিল্পকারখানা ও যানবাহনের দূষণ নিয়ন্ত্রণে আইন মানতে বাধ্য করা জরুরি।

পরিশেষে বলা যায়, পরিবেশ হলো আমাদের বেঁচে থাকার মূলভিত্তি। সুস্থ ও সুন্দর জীবনযাপনের জন্য দূষণমুক্ত পরিবেশ অপরিহার্য। কেবল সরকার নয়, আমাদের প্রত্যেকের ব্যক্তিগত দায়িত্ব রয়েছে পরিবেশ রক্ষা করার। সবাই যদি সচেতনভাবে নিজের দায়িত্ব পালন করি, তবে পরিবেশ দূষণ অনেকাংশে কমানো সম্ভব। তাই আসুন আমরা সকলে একসঙ্গে শপথ করি।পরিবেশকে ভালোবাসব, দূষণ রোধ করব এবং আগামী প্রজন্মের জন্য একটি বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ে তুলব।

আমি অর্পিতা নওশিন তিশা। আমি বর্তমানে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়াশোনা করছি। আমার শখের মধ্যে রান্না করতে ভালোবাসি এবং গল্পের বই পড়তেও ভালোবাসি । তাছাড়া অবসর সময়ে ছবি আঁকতে,গান শুনতে এবং বিভিন্ন ধরনের কমেডি, থ্রিলার, হরর মুভি দেখতে পছন্দ করি। এছাড়াও হিন্দি ডাবিং করা নাটকগুলো দেখতে পছন্দ করি।