আনন্দের ইতি, টেনশনের শুরু!
16-08-25
১ ভাদ্র , ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
🌼আসসালামুআলাইকুম সবাইকে🌼
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি আপনারা সবাই ভালো ও সুস্থ্য আছেন। আর আমার কথা যদি তাহলে বলবো ভালো নেই তেমন। একে তো সারাদিন কারেন্ট নেই তার উপর কাল থেকে পরীক্ষা শুরু! মাত্র কিছুদিন হলো ভার্সিটিতে প্রবেশ করলাম। ভেবেছিলাম ভার্সিটিতে উঠে একটু রিলাক্স করবো। কারণ এডমিশনে গাধার মতো পরিশ্রম করতে হচ্ছে। কিন্তু ভার্সিটিতে উঠে সেই আগের মতো আবারো গাধার মতো খাটতে হচ্ছে। বিএসসি ফার্স্ট ইয়ারের সিলেবাস যে কতো বড় এখন বুঝা যাচ্ছে। পরীক্ষার আগে গ্যাপ পেয়েছিলাম সাতদিন আসলে। কিন্তু সাতদিনে অনেককিছুই শেষ করতে পারলাম না। কাল পরীক্ষা, আর আজ নতুন টপিক শুরু করাটাও বোকামি! আসলে ক্লাসে মেম অনেক দ্রুত সিলেবাস শেষ করেছে যার প্রভাবটা আমাদের উপর এখন পড়ছে।
এতে বড় সিলেবাস নিয়ে অনেকেই হতাশায় ভুগছে। কেউ বলছে পরীক্ষা পেছানোর জন্য আবার কেউ বলছে যেটুকু পড়া হয়েছে সেটুকু দিয়েই পরীক্ষা দিতে যাবে। পরীক্ষা তো দিতেই হবে। আমাদের সিলেবাস বুঝতে বুঝতে আসলে চার মাস চলে গেছে। ভার্সিটিতে একটার এক ল্যাব, এসেসমেন্ট করতে করতে প্রায় সময় শেষ। ডিপ্লোমাতে আমাদের পড়ার সিস্টেম টা ওয়ান নাইট প্রিপারেশনের মতো ছিল। এক রাতে যত সালের প্রশ্ন আছে তা পড়েই পরীক্ষা দিতে যেতাম! এক রাত যে ভালোভাবে পড়াশোনা করতে পারে সে কখনো ডিপ্লোমাতে ফেল করে বলে আমার মনে হয় না! তবে বর্তমানে ডিপ্লোমার সিলেবাস পরিবর্তন করেছে বলতে গেলে টোটাল শিক্ষার সিস্টেম টা পরিবর্তন করা হচ্ছে। আমাদের সময় জিপিএ এর উপরে ক্যান্ডিডেট নির্বাচন করে সরকারি পলিটেকনিক গুলোতে পছন্দের সাবজেক্ট নিয়ে পড়তো। কিন্তু বর্তমানে পছন্দের সাবজেক্ট নিয়ে পড়তে হলে আগে জিপিএ ভালো করতে হবে পাশাপাশি বাছাই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।
এ পরিবর্তন আনাতে আমি অনেকটা খুশি হয়েছি। কারণ অযোগ্যরা কখনো আশা করছি ডিপ্লোমাতে পড়তে আসবে না। আর ইতোমধ্যে ডিপ্লোমাদের নিয়ে বাংলাদেশে নানা ধরনের গুজব রটানো হচ্ছে! একটা দেশ তখনই উন্নতির দিকে যাবে যখন সে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা কারিগরি দক্ষতার দিকে বেশি নজর দেয়া হবে। তো সেদিক থেকে ধীরে ধীরে উন্নতির দিকেই যাচ্ছে বলা যেতে পারে। তো পরীক্ষা আসলেই আমাদের মনে হয় ভীষণ চাপ পরে যায়। মনে অনেক দুশ্চিন্তা কাজ করে। জীবনে কত রকমের পরীক্ষা দিলাম। একটা অভিজ্ঞতা ভালোই হলো। সেটা হচ্ছে আত্মবিশ্বাস। আপনার আত্মবিশ্বাস যদি ভালো থাকে তাহলে আপনি পরীক্ষায় ভালো করতে পারবেন। আমি এখন পর্যন্ত যেটুকু পরেছি সেটুকুর মধ্যেই আসলে যথেষ্ট! স্বাভাবিকভাবেই একটু অন্যরকম অনুভূতিও কাজ করছে। ভার্সিটিতে প্রথম বারের মতো ফাইনাল পরীক্ষায় বসবো।
আমার মনে হয় আমার মতো সবারই এমন লাগছে। বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং এ প্রথম পরীক্ষা। অনেকেই সারা রাত পার করে দিচ্ছে ম্যাথ করতে করতে। অনেকেই আবার গা বাসিয়ে ফোন ব্যবহার করছে। যে সময়ের সঠিক ব্যবহার করেছে সে ভালো করেই পরীক্ষা দিতে পারবে। তবে যে প্রেসারে রেখেছিল কোনটা রেখে কোনটা পড়বো সেটাই বুঝতে পারছিলাম না। তার উপর ছয়টার মতো সাবজেক্ট এর পড়া ছিল! সবমিলিয়ে একটা সেমিস্টার হলো অনেক প্যারার মধ্যে দিয়েই। আর এ প্যারাটা আগামী চারবছর নিতে হবে। তো কাল পরীক্ষা, মোটামোটিভাবে সিলেবাস শেষ করা হয়েছে। পরীক্ষার আগে তেমন পড়া হয় না! ছোটবেলা থেকেই আমাদের শিখিয়েছে বড়রা পরীক্ষার আগে রিলেক্সে থাকতে হয়, তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে যেতে হয়।
জীবনে যতদিন বাচঁবেন ততদিন আপনাকে পরীক্ষা নামক প্যারার সম্মুখীন হতেই হবে। তার চেয়ে ভালো এটাকে সয়ে নেয়া নিজের সাথে মানিয়ে নেয়া! কারণ একাডেমিক পরীক্ষার থেকেও বড় বড় পরীক্ষা সামনে রয়েছে জীবনে। সেসব পরীক্ষায় যেন উত্তীর্ণ হতে পারেন, কঠিন মুহূর্ত আসলে যেন হ্যান্ডেল করতে পারেন সেটার জন্যই পরীক্ষা নামক প্যারার সম্মুখীন হওয়াটাই ভালো! জীবনে পরীক্ষা আসবে যাবে, তবে হাল ছাড়া যাবে না। আপনাকে এগিয়ে যেতে হবে দৃঢ়ভাবে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে। যারা একবার পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়ে হাল ছেড়ে দেয় তারা জীবনে সফল হতে পারে না।
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। বর্তমানে ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর উপর বিএসসি করছি ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যলয় (ডুয়েট) থেকে । পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত চার বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,কবিতা লেখা,গল্প লেখা ,রিভিউ,ডাই এবং আর্ট করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
twitter share
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.