ছোট বেলায় মাছ ধরার স্মৃতিচারণ।

in আমার বাংলা ব্লগ7 days ago

আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় আমার বাংলা ব্লগবাসী, কেমন আছেন আপনারা? আশা করি সকলেই ভালো আছেন। আজ আপনাদের সাথে আমার ছোট বেলার কিছু মজার স্মৃতি শেয়ার করবো। বিষয়বস্তু হচ্ছে, মাছ ধরা।


ice-fishing-2919070_1280.jpg

Photo Source

ছোট বেলায় এই সময়টাতে, অর্থাৎ বর্ষার শেষ দিকে আমাদের ওইদিকে আমন ধানের চাষ করা হতো। সাধারণত বর্ষার পানি জমিতে জমিয়ে তাতে ধানের চারা রোপন করা হতো। এসময় যেহেতু বৃষ্টি হতো, তাই জমিতে আলাদা করে পানি সেচের প্রয়োজন হতোনা।

আর এই সময়টা ছিলো মাছের প্রজনন সিজন। পুঁটি মাছ, ট্যাংরা মাছ, টাকি মাছ, কই মাছ, মলা-ঢেলা মাছ এই সময় প্রজনন করত। তাই দেখা যেত চাষ করা জমিতেই মাছগুলো ছোটাছুটি করছে। আমরাও এই সুযোগে জমিতে আইল বানিয়ে মাছগুলো আঁটকে রাখতাম। তারপর সেচ দিয়ে পানি কমিয়ে মাছগুলো ধরতাম। কতগুলো মাছ পেলাম তার চেয়ে বেশি আনন্দ পেতাম মাছগুলো ধরতে পেরে।

তবে সেয়ানা মাছগুলো, যেমন টাকি মাছ আর কই মাছ কম পানিতেও চলতে পারে বিধায় বেশি ধরা পরতোনা। বেশির ভাগই আমরা বিল থেকে পুঁটি মাছ আর মলা-ঢেলা মাছ ধরতাম। সেয়ানা মাছগুলো ধরার সময় ছিলো শীতকাল। তখন পুকুর আর খালের পানি কম থাকতো। স্কিমের নতুন পানি আসার আগে নদীর সাথে সংযুক্ত পুকুর আর খালের পানি একদম নোংরা হয়ে যেত। ওই অবস্থায় আমরা পুকুর কিংবা খাল সেচ দিয়ে বড় বড় মাছ, কই, টাকি, শিং আর শোল মাছ ধরতাম।

আমাদের চাঁদপুর একটি নদীমাতৃক জেলা হওয়ায় সাধারণত সবসময়ই নদী, খাল আর নদীর সাথে সংযুক্ত খালে সবসময় মাছ পাওয়া যায়। আল্লাহর রহমতে এখনও বর্ষাকালে যারা রাতের বেলায় মাছ শিকারে বের হয়, সবাই-ই ভালো পরিমাণ মাছ নিয়ে ঘরে ফিরে। যারা এখনও শীতকালে সেচ দিয়ে মাছ ধরে, তারাও ভালো পরিমাণ মাছ পায়।

ছোটবেলার এই ঘটনাগুলো খুব আনন্দ দেয়। এখন আর গ্রামে খুব একটা যাওয়া হয়না। গেলেও পুকুরে নামা হয়না। খাল আর বিল তো আরও দূরের কথা। ঘটনাগুলো মনেপড়লে খুব স্মৃতিকাতর হয়ে যাই নিজেই। এখন দিন দিন চাষযোগ্য জমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে। সেখানে নিত্য নতুন ঘর তৈরি হচ্ছে। খালগুলো মানুষ ভরাট করছে না বুঝেই। এভাবে দিন দিন মাছের আশ্রম কমে যাচ্ছে। আর কয়েক যুগ পর হয়তো গ্রামের মানুষেরও শহরের মতো চাষ করা মাছের উপরই নির্ভর করতে হবে।


gif.gif