না ফেরার দেশে বাবাকে উদ্দেশ্য করে ||উড়ন্ত চিঠি|~~

in আমার বাংলা ব্লগlast year (edited)

আসসালামু আলাইকুম/আদাব


1000015226.jpg


বন্ধুরা সবাইকে শুভেচ্ছা। আশা করি সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও বেশ ভালো আছি। আপনারা সবাই সব সময় ভালো থাকবেন এটাই প্রত্যাশা করি।

বন্ধুরা আজ আমি আপনাদের মাঝে একটি উড়ন্ত চিঠি শেয়ার করছি। না ফেরার দেশে আমার বাবা কে উদ্দেশ্য করে। আসলে পত্রসাহিত্য এখন আর চোখে পড়ে না। আমরা চিঠি লিখতে প্রায় সবাই ভুলেই গেছি।
তবে কিছুদিন আগে কৌশিক দাদাকে আমি কথা দিয়েছিলাম যে আমিও চিঠি লিখব। কারণ এই পত্র সাহিত্যটাকে ও বাঁচিয়ে রাখতে হবে আমাদের ঐতিহ্যকে ধারণ করার জন্য। আমি আমার বাবাকে খুব বেশি মিস করি। বাবার আদর্শ গুলো মেনে চলার চেষ্টা করি। আর তাই বাবাকে উদ্দেশ্য করে আমার আজকের এই উড়ন্ত চিঠি লেখা। হয়তো জানি এই চিঠির একটি শব্দও বাবার কাছে পৌঁছাবে না। তবুও ব্যথিত মনের আকুতি নিয়েই লেখা।
আজ থেকে প্রায় 19 বছর আগে বাবাকে হারিয়েছিলাম। বাবাকে হারানোর পর যখন এতিম হয়েছি তখন বুঝেছি বাবার গুরুত্ব কতটুকু। আর সেই সাথে এটাও বুঝেছি এতিম হওয়ার যন্ত্রণা কতটুকু। তো বন্ধুরা আশা করছি আমার আজকের এই চিঠিখানা আপনাদের অনেকের কাছে ভালো লাগতে পারে। আর এই চিঠির ভাষা গুলো অনেকের স্মৃতিচারণ হতে পারে। তবে মনের অজান্তে যদি কাউকে কষ্ট দিয়ে থাকি তাহলে সবাই ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। চলুন তবে চিঠিটি পড়ে আসা যাক।


1000015228.jpg


🌹 উড়ন্ত চিঠি🌹


প্রিয় বাবা,

তোমার সেই স্মৃতিগুলো এখনো হৃদয়ে অমলিন, তোমার মুখের হাসি, সেই স্নেহের ছোঁয়া, তোমার কাছে চাওয়া কথাগুলো সব যেনো আজো গুনগুন করে মনে। তোমার আদরের স্পর্শ, তোমার হাতের ছোঁয়া, তোমার ভালোবাসা ভরা বুকে জড়িয়ে ধরা—এসবের মাঝে আমি আজো বাঁচি।

তোমার সেই স্নিগ্ধ দৃষ্টি, তোমার শক্তি ও সাহসের কথা, তোমার আদর্শে পথ চলা, তুমি ছিলে আমার জীবনের সেরা উপহার। তোমার স্নেহের ছায়ায়, তোমার দিকনির্দেশনায় আমি বড় হতে শিখেছি। জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে তোমার সেই মমতা মিশ্রিত পরামর্শ আমাকে সাহস যোগায়।

তুমি আজ অনেক দূরে, তবু তোমার স্মৃতিরা কানে বাজে। তোমার অনুপ্রেরণায় আজো চলি, তোমার জন্য প্রার্থনা করি। জীবনের প্রতিটি সাফল্যে তোমার অবদান ভোলা সম্ভব না। তুমি ছিলে আমার জীবনের পথপ্রদর্শক, আমার বন্ধু, আমার পরামর্শদাতা।

তোমার হারানোর শূন্যতা কখনো পূরণ হবে না। কিন্তু তোমার স্মৃতিরা আমাকে শক্তি যোগায়, আমার জীবনের প্রতিটি কষ্টের সময় তোমার সেই স্মৃতি আমাকে সাহস যোগায়। তোমার সেই কথাগুলো—‘হাল ছাড়বে না, সামনে এগিয়ে যাবে’—এখনো আমার কানে বাজে।

বাবা, তুমি ছিলে, আছো, থাকবে চিরকাল হৃদয়ে আমার। তোমার জন্য এই উড়ন্ত চিঠি, না ফেরার দেশে পৌঁছে যাক আমার ভালোবাসা এবং কৃতজ্ঞতার কথা। আমি জানি তুমি সবসময় আমার পাশে আছো, আমার প্রতিটি সাফল্যে তুমি গর্বিত হও।

তোমার আদরের মেয়ে
সাথী


বন্ধুরা আমার আজকের চিঠিটি , নিশ্চয়ই আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। আর আপনাদের ভালোলাগাই আমার সার্থকতা ও পরম পাওয়া। সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। পরবর্তীতে আবারো সুন্দর সুন্দর আয়োজন নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব।

টা টা,,
♥♥

photo_2023-07-07_17-27-00.jpg

আমি সেলিনা সাথী। ছন্দের রাজ্যে, ছন্দরাণী কাব্যময়ী-কাব্যকন্যা বর্তমান প্রজন্মের নান্দনিক ও দুই বাংলার জনপ্রিয় কবি সেলিনা সাথী। একধারে লেখক, কবি, বাচিক শিল্পী, সংগঠক, প্রেজেন্টার, ট্রেইনার, মোটিভেটর ও সফল নারী উদ্যোক্তা তার পুরো নাম সেলিনা আক্তার সাথী। আর কাব্যিক নাম সেলিনা সাথী। আমি নীলফামারী সদর উপজেলায় ১৮ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। আমার বাবা পিতা মরহুম শহিদুল ইসলাম ও মাতা রওশনারা বেগম। ছড়া কবিতা, ছোট গল্প, গান, প্রবন্ধ, ব্লগ ও উপন্যাস ইত্যাদি আমার লেখার মূল উপজীব্য। আমার লেখনীর সমৃদ্ধ একক এবং যৌথ কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ১৫ টি। আমার প্রথম প্রকাশিত কবিতার বই অশ্রু ভেজা রাত, উপন্যাস মিষ্টি প্রেম, যৌথ কাব্যগ্রন্থ একুশের বুকে প্রেম। জীবন যখন যেমন। সম্পাদিত বই 'ত্রিধারার মাঝি' 'নারীকণ্ঠ' 'কাব্যকলি'সহ আরো বেশ কয়েকটি বই পাঠকহমলে বেশ সমাদৃত। আমি তৃণমূল নারী নেতৃত্ব সংঘ বাংলাদেশ-এর নির্বাচিত সভাপতি। সাথী পাঠাগার, নারী সংসদ, সাথী প্রকাশন ও নীলফামারী সাহিত্য ও সংস্কৃতি একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। এছাড়াও আমি জেলা শাখার সভাপতি উত্তোরন পাবনা ও বাংলাদেশ বেসরকারি গ্রন্থাগার পরিষদ নীলফামারী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছি। তিনি মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০১৪ সালে নীলফামারী জেলা ও রংপুর বিভাগীয় পর্যায়ে সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদানের জন্য শ্রেষ্ঠ জয়িতা অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছি। এছাড়াও সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় ও সামাজিক সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে বিশেষ অবদান রাখায় আমি বহু সম্মামনা পদক অর্জন করেছি। যেমন সাহিত্যে খান মইনুদ্দিন পদক ২০১২। কবি আব্দুল হাকিম পদক ২০১৩। শিশু প্রতিভা বিকাশ কেন্দ্র কর্তৃক সম্ভাবনা স্মারক ২০১৩। সিনসা কাব্য সম্ভাবনা ২০১৩। বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উদযাপন উপলক্ষে সম্মামনা স্মারক ২০১৩। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৩৭ তম মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে সম্মাননা স্মারক ২০১৩। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর ১১৫ তম জন্ম জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ২০১৪। দৈনিক মানববার্তার সম্মামনার স্মারক ২০২৩। চাতক পুরস্কার চাতক অনন্যা নারী সম্মাননা ২০২৩ ওপার বাংলা মুর্শিদাবাদ থেকে মনোনীত হয়েছি।

A5tMjLhTTnj4UJ3Q17DFR9PmiB5HnomwsPZ1BrfGqKbjddgXFQSs49C4STfzSVsuC3FFbePnB7C4GwVRpxUB36KEVxnuiA7vu67jQLLSEq12SJV1etMVkHVQBGVm1AfT2S916muAvY3e7MD1QYJxHDFjsxQDqXN3pTeN2wYBz7e62LRaU5P1fzAajXC55fSNAVZp1Z3Jsjpc4.gif



বিষয়: ক্রিয়েটিভ রাইটিং

কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ

আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......


Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last year 

আপু ভালো লাগলো বাবার কাছে লেখা আপনার খোলা চিঠিটি পড়ে। আপনি ১৯ বছর যাবত বাবাকে হারিয়েছেন, সেই কষ্ট যন্ত্রণা ভুলতে বাবার কাছে একটি খোলা চিঠি লিখেছেন। সত্যি বলেছেন এই খোলা চিঠির একটি বাক্য ও বাবার কাছে পৌঁছাবে না কিন্তু ১৯ বছর আগে বাবাকে হারানোর যে কষ্ট, যে যন্ত্রনা, বা বাবার থেকে না পাওয়া যে আদর, সোহাগ, ভালোবাসা এগুলো আপনি অনেক সুন্দর করে আপনার লেখা খোলা চিঠিতে তুলে ধরেছেন, যেটা আমরা যারা বাবা কে হারিয়েছি সবার বাবাদের জন্যই এটি একটি বার্তা।

 last year 

একদম ঠিক বলেছেন বাবার মতো বটবৃক্ষের ছায়া যার মাথার উপরে নাই, এই চিঠির মর্মাথ তারাই ভালো অনুধাবন করবেন। অনেক বেশি মনে পরে বাবাকে।

 last year 

আমায় কথা দিয়ে তুমি যে সেই কথা রাখলে এটি আমাকে খুব আনন্দ দিল। বাবাকে যে চিঠি লিখলে তা এক কথায় যেন জীবন্ত একটি দলিল। পড়তে পড়তে নস্টালজিক হয়ে পড়লাম। সত্যিই বাবা এমন এক বটগাছ যার কোন বিকল্প হয় না। বাবা হারানোর জায়গা কোনদিন পূরণও হয় না। আর পত্র সাহিত্যে সেই দিকটি যথার্থভাবে উঠে এলো। ধন্যবাদ তোমায়।

 last year 

বাবা আমার জীবনের সবচেয়ে অন্যতম প্রিয় মানুষ।
তাই তো উড়ন্ত চিঠিটি বাবাকে উদেশ্য করেই লিখলাম। সেই সাথে তোমাকে দেয়া কথাও রাখার চেষ্টা করলাম। তোমার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম প্রিয় দাদা।

 last year 

আপু আপনার লেখাগুলো পড়ে আবেগ প্রবন হয়ে গিয়েছিলাম। আসলে এই আবেগ কাউকে বলে বোঝানোর মত নয়। প্রিয় মানুষকে হারানোর কষ্ট খুবই বেশি। যখন তাকে অনেক মনে পড়ে তখন ভেতরটা হাহাকার করে ওঠে। আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগলো আপু। চমৎকার লিখেছেন আপনি। ধন্যবাদ আপনাকে নিজের অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 last year 

আপু আপনার লেখাগুলো যখন পড়তাম তখন চোখ দিয়ে পানি পড়ছিল। আসলে এই অনুভূতি খুবই কষ্টের। বাবা হারিয়ে যাওয়ার কষ্টটা অনেক বেশি। হয়তো এখনো সেই কষ্টটা উপলব্ধি করতে পারছি না। তবে আপনার ভেতরের জামা কথাগুলো খোলা চিঠিতে উপস্থাপন করেছেন এজন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

 last year 

এটা একদম ঠিক বলেছেন আপু বাবা হারিয়ে যাওয়ার গল্প গুলো অনেক বেশি বেদরাদায়ক।
যা আমি খুব ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পারি।

 last year 

এই চিঠির ভালো মন্দ হয় না। আমি জানি না তুমি শেষ কবে চিঠি লিখেছিলে বা চিঠি লেখার আনন্দ উপভোগ করেছিলে। এই রসের ভাগ হয় না। আসলে চিঠি আমাদের কাছে এমন আশ্রয় যেখানে আমরা অনেক না বলা কথা বলে ফেলি।

চিঠিটি আমার তো খুবই ভালো লেগেছে। লিখে তোমার কেমন লেগেছে সেটা বলো।

 last year 

আমি শেষ চিঠি অনেক আগে লিখেছিলাম বন্ধু। আর সেই চিঠিটা ছিল আমার ছেলেদেরকে লেখা। তবে স্কুল জীবনে অনেক বান্ধবীদেরকে প্রেম পত্র লিখে দিয়েছিলাম। হা হা হা,,
এভাবে বান্ধবীদেরকে লিখে দেওয়া প্রেমপত্র নিয়ে অনেক ছোট ছোট হাসির বা মজার গল্প আছে। পরে কোন এক পোস্টে তোমাদের সাথে শেয়ার করব। সুন্দর বক্তব্য করে অনুপ্রেরণা দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।

 last year 

নিশ্চয়ই শেয়ার করো। ব্লগের মাধ্যমে এরকম নানান স্মৃতি বললে কখনো পরে নিজেরা পড়লেও ভালো লাগে। আসলে জীবনের সবটাই কিন্তু সাহিত্যেরই অঙ্গ। শুধু দেখা দৃষ্টিভঙ্গি টা একটু বদলাতে হয়। ভালো থেকো প্রিয় বন্ধু।