দৌলতপুরে ফুচকা এবং ঝাল মুড়ি খেতে

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

নমস্কার সবাইকে,

তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। আমিও বেশ ভালো আছি। আজকের নতুন একটি ব্লগে প্রথমেই সবাইকে স্বাগতম জানাই।

বাংলাদেশে আমি যে কয়েকবার ভ্রমণ করতে এসেছি, এখানে এসে এখানকার ফুচকা এবং ঝালমুড়ি আমার খুব ভালো লেগেছে। আমাদের কলকাতার ফুচকা এবং ঝাল মুড়ি একরকম আর এখানকার ফুচকা এবং ঝালমুড়ি অন্যরকম। বানানোর যেমন ভিন্নতা রয়েছে তেমন টেস্টের দিক থেকেও রয়েছে অনেক ভিন্নতা। এক এক করে শেয়ার করি তাহলে ব্যাপার গুলো। বাংলাদেশে যে ঝাল মুড়ি পাওয়া যায় তা একপ্রকার মসলা দিয়ে মাখিয়ে দেওয়া হয়। তাছাড়া এই ঝালমুড়ির মসলার মধ্যে রসুন এবং চুই ঝাল আলাদা করে দেওয়া হয় যার জন্যই ঝাল মুড়ির টেস্ট অনেক বেশি বেড়ে যায়।

মুড়ি মাখা অনেকটা মসলাদার হয় কি! মসলা সাধারণত মাংসের মসলার মত লাগে অনেকটা। এই মসলাতে মুড়ি মাখানোর পরে বেশ দারুন লাগে। অন্য দিকে কলকাতাতে ঝালমুড়ি শুকনো ভাবে মাখানো হয়। কোন প্রকার আলাদা মশলা তৈরি করে তার সাথে মাখানো হয় না। মুড়ির সাথে পিঁয়াজ, লংকা, সরিষার তেল, বাদাম , চানাচুর ইত্যাদি দিয়ে কোন রকম করে মাখানো হয়। আমি কলকাতায় থাকলেও কলকাতার এই ঝালমুড়ি মাখা আমার মোটেও ভালো লাগেনা। বাংলাদেশে প্রথমবার এসে যখন এখনকার ঝাল মুড়ি খেয়েছিলাম তার পর থেকে এখানকার ঝাল মুড়ির ফ্যান হয়ে গেছি আমি। যতবার এখানে ঘুরতে এসেছি প্রত্যেকবার এসে এখানের ঝালমুড়ি মাখা খেয়েছি আমি। এবার ফুচকার কথা বলি। ফুচকা বানানোর স্ট্যাইলও দুই দেশে দুই রকম। কলকাতায় ফুচকার পুরে আলু ব্যবহার করা হয়। আর বাংলদেশে ফুচকার পুরে মটরের ডালের একটা মিক্সার মাখানো দেওয়া হয় । যার ফলে আলাদা রকমের টেস্ট লাগে। তাছাড়া ফুচকার উপরে শসা, ধনেপাতা, কাঁচা লঙ্কা দিয়ে সুন্দর করে সাজিয়ে দেওয়া হয় বাংলাদেশের ফুচকাতে।

20231224_174637.jpg

20231224_174554.jpg

কলকাতাতে দাঁড়িয়ে থেকে একটা একটা করে ফুচকা নিয়ে খেতে হয় । তবে বাংলদেশে একবারেই প্লেটে করে দিয়ে দেওয়া হয় ফুচকা গুলো। যাই হোক, বাংলাদেশের ফুচকা আমার কাছে খুব বেশি ভালো লেগেছে । সেইজন্য এখানে এসে অনেক জায়গা থেকে বিভিন্ন ধরনের ফুচকা আমি খেয়ে থাকি। টেস্টের পাশাপাশি দামেরও অনেক পার্থক্য রয়েছে দুই দেশে। যেখানে কলকাতাতে ১০ টাকায় মুড়ি মাখা বা ফুচকা পাওয়া যায় সেখানে বাংলাদেশে ১০ টাকায় এইসব পাওয়া যায় না। কুড়ি টাকা থেকে ৩০ টাকা দিয়ে স্টারটিং হয় সবকিছু বাংলাদেশে। গতকালকে আমি খুলনার দৌলতপুরে গেছিলাম আমার এক দুঃসম্পর্কের বোনের সাথে এই ফুচকা এবং ঝাল মুড়ি খাওয়ার জন্য। দৌলতপুরে যে রেল লাইন রয়েছে তার পাশেই অসংখ্য দোকান রয়েছে। এখানে রয়েছে কয়েকটি ফুচকার দোকান যা বেশ ফেমাস এইখানকার। এই সংবাদ আমাকে আমার সেই বোনই দিয়েছিল ।

20231224_181303.jpg

20231224_181712.jpg

যাই হোক, সে ই আমাকে এখানে নিয়ে যায় । সেখানে গিয়ে অনেকটা লাইনে দাঁড়িয়ে আমাকে ফুচকা খেতে হয়। এখানকার ফুচকা খেয়ে আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছিল। ফুচকা খাওয়ার পরে আমরা যাই ঝাল মুড়ি খেতে। ঝাল মুড়ি খাওয়ার জন্য আমাকে বি এল কলেজের সামনে, এক চাচার দোকানে নিয়ে গেছিল আমার সেই বোন। সেখান থেকে আমরা দু'জনে মিলে ৪০ টাকা ঝাল মুড়ি খাই। তবে আমাকে ঝাল মুড়ি প্লেট দিয়েছিল এবং আমার সেই বোনকে কাগজের প্যাকেটে
দিয়েছিল। আমার ঝাল মুড়ি একটু স্পেশাল ছিল তাই আমাকে প্লেটে দিয়েছিল। যাইহোক সেখান থেকে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে বেশ ভালই লেগেছিল আমার । দৌলতপুরের ফুচকা এবং ঝাল মুড়ির টেস্ট সত্যিই অসাধারণ ছিল। বর্তমানে বাংলদেশে এসে ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন জায়গা থেকে আমি বিভিন্ন ধরনের খাবার গুলো টেস্ট করে দেখছি। অনেক ভালো সময় যাচ্ছে আমার এখন।


ডিভাইসSamsung Galaxy M31s
ফটোগ্রাফি@ronggin
লোকেশনদৌলতপুর , বাংলাদেশ।

বন্ধুরা,দৌলতপুরে ফুচকা এবং ঝাল মুড়ি খেতে যাওয়া নিয়ে শেয়ার করা এই ব্লগটি তোমাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট এর মাধ্যমে জানিও । সবাই ভালো থাকো, সুস্থ থাকো , সুন্দর থাকো ,হাসিখুশি থাকো , নিজের পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকো , সবার জন্য এই শুভকামনা রইল।

ধন্যবাদ সবাইকে

Sort:  
 2 years ago 

আপনি আমাদের দেশে ঘুরতে এসেছেন এটা কিন্তু পূর্বে আমাকে বলেছিলেন। তবে ঝাল মুড়ি খাওয়ার সুন্দর একটি মুহূর্ত আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। আর ঝাল মুড়ি খেয়েছেন দৌলতপুর এসে। পাশাপাশি সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন সমস্ত অনুভূতিগুলো, যা জানার পর খুব ভালো লাগলো আমার।

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাই আপনার সুন্দর মন্তব্যটির জন্য।

 2 years ago 

আসলেই ঝাল মুড়ি গুলো খুব টেষ্টি করে বানিয়ে থাকেন। আমার কাছে দই ফুচকা খেতে দারুণ লাগে।তবে কলকাতার দাড়িয়ে দাড়িয়ে একটি একটি করে ফুচকা খাওয়া দেখতে খুব ভালো লাগে আমার। অনেক মজা করেছেন দেখছি ঝালমুড়ি ও ফুচকা খাওয়ার জন্য রেললাইনের ধারে চলে এসেছেন পোস্ট টি বেশ ভালোই লাগলো

 2 years ago 

আমার কাছে দই ফুচকা মোটামুটি লাগে দিদি, খুব বেশি ভালো লাগে তা বলবো না। তবে আপনাদের বাংলাদেশের নরমাল ফুচকা আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। সেই সাথে ঝালমুড়িও অনেক মজা করে খেয়েছিলাম ঘুরতে গিয়ে।

 2 years ago 

ঝাল মুড়ি অনেক সুস্বাদু হয়ে থাকে। আমি যখনই বাজারে ঝাল মুড়ি দেখি তখনই ঝাল মুড়ি খেয়ে থাকি। আজকে আপনি অনেক মজা করেছেন এবং ঝাল মুড়ি ও ফুচকা খাওয়ার জন্য রেললাইন এর পাশে চলে এসেছেন যা দেখে খুব ভালো লাগলো।

 2 years ago 

বাংলাদেশের ঝালমুড়ি সত্যিই অনেক সুস্বাদু ভাই, এটা মানতেই হবে। আমি এবার ঘুরতে গিয়ে ঝাল মুড়ি খেয়ে বাংলাদেশী ঝাল মুড়ির ফ্যান হয়ে গেছি বলতে পারেন 🤭!