সখের ছাদ বাগানে ডালিম ফলের রঙিন সার্থকতার গল্প।

🥰.. আসসালামুয়ালাইকুম ...🥰

প্রিয় হিন্দু ভাই-বোনদের জন্য আদাব ও ভালোবাসা 💗🙏। আমার প্রিয় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল বন্ধুদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও স্নেহ। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি, মহান আল্লাহর রহমতে এবং একে অপরের ভালোবাসায় আপনারা সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও বেশ ভালো আছি।আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির একজন সদস্য,এই প্ল্যাটফর্মের সাথে আমার যাত্রা প্রায় এক বছর ধরে। সত্যি বলতে, এখানে আসতে পেরে আমার মনে হচ্ছে ! যেন নিজের আর একটি নতুন পরিবার খুঁজে পেয়েছি। প্রতিটি লেখা, প্রতিটি মন্তব্য, প্রতিটি বন্ধুত্ব আমাকে দিয়েছে আনন্দ, ভালোবাসা এক নতুন অধ্যায়ের স্বাদ।আজকে আমি আপনাদের সাথে সখের ছাদ বাগানে ডালিম ফলের সার্থকতার গল্প ও ফটোগ্রাফি শেয়ার করবো ।আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক অনেক ভালো লাগবে। চলুন এবার শুরু করা যাক।

ছাদবাগান শব্দটা এখন আর শুধু গাছ লাগানোর মাঝেই সীমাবদ্ধ নেই। বরং এটি হয়ে উঠেছে আমাদের জীবনের এক শান্তিপূর্ণ কোণ। শহরের কোলাহল, ধুলাবালি আর কংক্রিটের আবরণে ঢাকা এই জীবনে যদি একটু সবুজ, একটু প্রাণ খুঁজে পাওয়া যায়, তবে তা এক অনন্য আশীর্বাদই বটে। সেই আশীর্বাদের নাম আমাদের সখের ছাদবাগান। আর সেই বাগানে নিজের হাতে রোপণ করা একটি ডালিম গাছ এখন যেন আমাদের বাড়ির আপনজন হয়ে উঠেছে। প্রতিদিনের সূর্যোদয় আর সূর্যাস্তের সাক্ষী হয়ে সে দাঁড়িয়ে থাকে ছাদের এক কোণে, নিঃশব্দে ফুল ফোটায়, ফল ধরে এবং আনন্দ দেয়।

ডালিম গাছটি প্রথমে ছেলে মানুষের মতো ছিল।নাজুক, কচি, পাতলা পাতায় মোড়ানো। প্রথম দিকে ওর যত্ন নিতে গিয়ে মনে হত, আদৌ কি এই গাছ কোনোদিন ফল দেবে? কিন্তু প্রকৃতির নিজস্ব গতিতে, ভালোবাসার যত্নে সে বড় হয়েছে, ডালপালা ছড়িয়েছে এবং একদিন হঠাৎ করেই দেখা গেল, পাতার ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে ছোট্ট এক ডালিম ফল। তখন মনে হল, এই তো আমাদের অপেক্ষার ফল, এই তো সখের সার্থকতা। সেই ছোট্ট ফল এক সময় বড় হয়ে উঠল, রঙ পাল্টাতে লাগল, সবুজ থেকে হলুদ, আর তারপর গাঢ় লাল। ডালিমের ত্বকের উজ্জ্বলতা দেখে মনে হল, যেন এক টুকরো রক্ত রাঙা সূর্য ঝুলে আছে পাতার মাঝে।

এই গাছটি এখন কেবল একটি ফলদায়ী গাছ নয়, বরং এটি হয়ে উঠেছে পরিবারের এক অংশ। প্রতিদিন সকালে ছাদে গিয়ে চোখে পড়ে যখন ডালিম গুলো হালকা হাওয়ায় দুলছে, তখন এক অদ্ভুত প্রশান্তি মনকে ঘিরে ধরে। মনে হয়, যতদিন এই গাছ আছে, ততদিন জীবনে একটুখানি হলেও নিঃস্বার্থ আনন্দ থাকবে। ছবিগুলোর দিকে তাকালেই সেই ভালোলাগা ফিরে আসে।পাতার ফাঁক দিয়ে উঁকি দেওয়া ফল, ডাল ধরে ঝুলে থাকা লাল রঙ, আকাশের পটভূমিতে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা গাছটি যেন নিজেই বলছে, "আমি আছি, আমি বেঁচে আছি তোমাদের ভালোবাসায়।"

এই গাছ আমাদের শিখিয়েছে ধৈর্য আর নিরব প্রেমের ভাষা। কীভাবে একটি ছোট চারা একটু একটু করে বড় হয়, কীভাবে তাতে জীবন আসে, ফল আসে।এই প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা শুধু একজন চাষিই নয়, একজন প্রকৃতিপ্রেমী মানুষের হৃদয়কে গভীরভাবে ছুঁয়ে যায়। ছাদবাগান আমাদের শুধু সবুজ দেয় না, দেয় আত্মিক প্রশান্তি, শেখায় যত্ন ও ভালোবাসার গুরুত্ব।

শেষমেশ এই গল্পটা শুধুই একটি গাছের নয়, বরং আমাদের জীবনের, আমাদের মনোবৃত্তির। গাছটি যেমন নিজের রঙে, নিজের ছায়ায় পরিপূর্ণ হয়েছে, আমরাও তেমনি এই ছোট্ট সৃষ্টির মধ্যে খুঁজে পাই এক পরিপূর্ণতার ছোঁয়া। ভবিষ্যতে যদি কখনো কারো মনে হয়, ছাদে গাছ লাগানো বৃথা, তবে তাকে বলব ,একবার একটি ডালিম গাছ লাগিয়ে দেখুন, সে আপনাকে ফল দেবে না হলেও শান্তি দেবে, আপন হয়ে পাশে দাঁড়াবে। আমাদের সখের ছাদবাগানের এই ডালিম গাছ তাই শুধু একটি গাছ নয়, সে আমাদের ভালোবাসার প্রতীক।

এই ছিল আজকের ব্লগ । আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।কার কাছে কেমন লেগেছে তা অবশ্যই কমেন্টের মন্তব্য করে জানাবেন। কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আজকের মত বিদায় নিচ্ছি, আবার নতুন কিছু নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে।সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং সবার জন্য অনেক শুভকামনা রইল ।

আমার নাম মোছাঃ সামছুন্ নাহার সুইটি । আমি একজন বাংলাদেশী মুসলিম নাগরিক । আমি আমার মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। আমি অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ালেখা করি । আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করার জন্য যুক্ত হয়েছি । আমি গত ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই । এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি ।আমি ভ্রমণ করতে অনেক বেশি পছন্দ করি।সেই সাথে নতুন নতুন ফটোগ্রাফি করতে ও ইউনিক রেসিপি এবং নতুন নতুন ইউনিক ডাই তৈরি করতে বেশ পছন্দ করি । আর স্টিমিট প্ল্যাটফর্মকে আঁকড়ে ধরে ভবিষ্যতে আরো এগিয়ে যেতে চাই, এটাই আমার লক্ষ্য।