অতিরিক্ত কোনো কিছুর প্রতি আসক্তি থাকা ভালো নয়।
কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
সোর্স
ঈশ্বর আমাদের একটা সুন্দর জীবন দিয়েছে আর এই সুন্দর জীবনে সবকিছুই সঠিক মাপে দিয়েছে। আমরা আমাদের জীবনে এত সব সমস্যা খুজে পাই কারণ আমরাই আমাদের জীবনের ওই সঠিক মাপ টাকে ব্যালেন্স করতে পারি না এবং ডিস ব্যালেন্স করে সবকিছু নষ্ট করে ফেলি। আমরা যদি কোন একটি জিনিসের প্রতি প্রয়োজনের অতিরিক্ত বেশি আসক্ত হয়ে পড়ি তবে অন্যান্য দিক গুলি কমজোর হয়ে পড়ে এবং সবকিছুই ডিস ব্যালেন্স হয়ে পড়ে। আমাদের জীবনের সবকিছুই প্রয়োজন এবং সবকিছুর একটা সঠিক মাপ প্রয়োজন সেটা আমাদের অবশ্যই বুঝতে হবে। আমাদের সঠিক জিনিস সঠিক সময়ে ত্যাগ করা যেমন শিখতে হবে তেমন ভোগ করাও জানতে হবে আবার সাথে সৃষ্টি করতেও হবে আবার ধ্বংস করার ক্ষমতাও রাখতে হবে। আমাদের মোহ-মায়া, লোভ-লালসা হিংসা সব জিনিসের প্রতি কন্ট্রোল রাখতে হবে। আমাদের পছন্দ-অপছন্দ থাকতেই পারে এটা আমাদের জীবনের একটি স্বাভাবিক জিনিস তবে আমরা যে জিনিসটাকে অপছন্দ করি সেই জিনিসটাকে একদম জীবন থেকে বাদ দিয়ে যে জিনিসটাকে পছন্দ করি সেই জিনিসটার প্রতি প্রয়োজনের অতিরিক্ত আসক্ত হয়ে পড়লে সেটা আমাদের জীবন যাপনের জন্য কখনোই ভালো হবে না।
আমাদের বাড়ির পাশেই একটা লোক বসবাস করে যিনি এতটাই নিজের প্রতি আসক্ত এবং নিজের পছন্দের প্রতি আসক্ত যে তার অন্য কোন জিনিসের প্রতি খেয়ালই থাকে না। বেশি লোকটি যেহেতু পরিবারের কর্তা তাই স্বাভাবিকভাবেই তার দায়িত্ব পরিবারের সবার খেয়াল রাখা এবং প্রয়োজন মেটানো। কিন্তু সেই লোকটি সংসারের দায়িত্ব ঠিকমতো একদমই পালন করে না। এমন নয় যে সে আর্থিকভাবে অক্ষম, মাসে বেশ মোটা টাকা উপার্জন করে থাকে। কিন্তু উপার্জন করলেও পুরো টাকাটাই সে খরচ করতে থাকে বাড়ি ঘর তৈরি করার কাজে। লোকটির জমি জমা এবং ঘরবাড়ির প্রতি এতটাই বেশি আসক্তি যে অন্য সব দিকে অর্থ ব্যয় করা তার অর্থ নষ্ট করা বলে মনে হয়। এমনকি নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস, বছরে দুইবার জামা কাপড় কেনা, কোথাও ঘুরতে যাওয়া, ভালো কোন রেস্টুরেন্টে খাওয়া এগুলো তার কাছে অর্থ নষ্ট করা বলে মনে হয়। তার মতে বছরে এক থেকে দুটো জামা কাপড় কেনাই যথেষ্ট। আর ভালো রেস্টুরেন্টে খাওয়া-দাওয়া করা নাকি শরীরের ক্ষতি। কিন্তু সে যে সংসারে ভালো বাজার করে বা শাকসবজি কিনে আনে এমনটা নয়। সংসারে খাওয়া দাওয়া অনেক বেশি কষ্ট লেগেই থাকে। ঠিকমতো বাজার করা হয় না যার ফলে অভাব থাকে। কিন্তু সেই টাকা জমিয়ে জমিয়ে সে দালানের পর দালান গড়তে থাকে।
কিন্তু বাড়ির লোক সেই ব্যক্তিকে কিছু বলে না বা বলার চেষ্টা করেনা কারন বহুবার বলার পরেও সেই লোকটা কথা শোনে না এবং সে বলে, তার উপার্জন করা টাকা সে যেভাবে চাইবে সেইভাবে খরচ করবে। এমনকি লোকটা নিজের ওষুধটা পর্যন্ত অনেক সময় না খেয়েই টাকা বাঁচিয়ে থাকে, অসুস্থ হলে ডাক্তারের কাছেও যেতে চায় না। কিন্তু লোকটি একটু স্বার্থপর ধরনের হওয়ায় সে নিজের পছন্দমত খাওয়া দাওয়া করে এবং ফলফলাদি নিজের প্রয়োজনীয় খাবার ঠিকই কিনে খায়। তার এই স্বার্থপর মনোভাবের কারণে আশেপাশের থেকে তার আত্মীয়-স্বজন এবং সন্তানেরা মন থেকে অনেকটাই দূরে সরে যায়। লোকটি বাড়ি গাড়ি এবং জমি জমা কেনার প্রতি এতটাই সত্য যে তার সাথে কেউ কথা বলতে লাগলে সে শুধুমাত্র এইসব নিয়েই কথা বলে এবং সবাইকে রীতিমতো না খেয়ে টাকা বাঁচিয়ে বাড়ি এবং জমি জমা কেনার উপদেশ দিতে থাকে। লোকটির মস্ত বাড়ি তৈরি করে রাজার হালে অর্থাৎ জমিদারের মত জীবন যাপন করার একটা আসক্তি লক্ষ্য করা যায়। তবে তার এই প্রয়োজনের অতিরিক্ত আসক্তি এবং নিষ্ঠুর আচরণ তাকে দিনে দিনে একদম একা করে তুলেছে। সে যেহেতু নিজের প্রয়োজন ছাড়া অন্যের প্রয়োজন ভালো লাগা খারাপ লাগা কিছুই গুরুত্ব দেয় না এবং সবাইকে কষ্ট দেখে শুধুমাত্র তার বাড়ি বানানোর নেশায় লেগে রয়েছে তাই তার এই নিষ্ঠুর আচরণের জন্য তার আত্মীয়-স্বজনেরা ধীরে ধীরে তার সাথে সম্পর্ক বিচ্ছেদ করে চলেছে।
বৃদ্ধ বয়সের লোকটি সম্পূর্ণ একা হয়ে পড়েছে, সে সব সময় বলতো যে শেষ বয়সে এই বাড়িঘর তাকে দেখবে কিন্তু আসলেই কি বাড়ি ঘর কোন মানুষকে দেখতে পারে? স্বার্থপরতা এবং প্রয়োজনের অতিরিক্ত কোন জিনিসের প্রতি আসক্তি মোটেও ভালো নয় সেটা এই লোকটাকে চোখের সামনে দেখে বেশ ভালোভাবেই বুঝতে পারছি। তার সন্তানেরা তার আচরণে অনেক বেশি কষ্ট পায় যার কারণে তার থেকে অনেক বেশি দূরে সরে গেছে। সন্তান এবং পরিবারের মানুষদের অভাব অনটনের রেখে প্রয়োজনের জিনিস এবং সঠিক খাওয়া দাওয়া না দিয়ে শুধুমাত্র ঘরবাড়ি তৈরি করে যাওয়া এটা মোটেই কোন মানুষের সুস্থতার লক্ষণ নয়। আমরা যদি আমাদের শরীরের যত নানি সঠিক সময় খাওয়া-দাওয়া না করি অভাব অনটনে দিন কাটাই তবে আমাদের শরীর নষ্ট হয়ে যাবে এবং আয়ু ক্ষয় হতে থাকবে। আমরা অবশ্যই এক সময় মরে যাব কিন্তু থেকে যাবে পৃথিবীতে এই ঘরবাড়ি। এই ঘরবাড়ি সম্পত্তি কখনোই আমাদের সঙ্গে যাবে না তাই আমরা যদি খেয়ে পড়ে সুস্থ ভাবে বাঁচতে পারি তাহলে কয়েকদিন বেশি আমরা সুন্দর জীবন যাপন করতে পারব। অর্থ, সম্পত্তি, জায়গা জমি অবশ্যই আমাদের বেঁচে থাকতে প্রয়োজন তবে অতিরিক্ত কখনোই প্রয়োজন নয়। আমরা যদি কোন জিনিসের প্রতি অতিরিক্ত আসক্ত হয়ে পড়ি এবং সেই দিকেই একমাত্র খেয়াল করি আর অন্য দিকের দায়িত্ব পালন না করি তবে আমরা একে একে সব কিছুই হারিয়ে ফেলবো।
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।
https://x.com/pussmemecoin/status/1964483347775967267?s=46&t=nHPwcg_swfA_HF8Tq9ebSw
https://x.com/pussmemecoin/status/1964484053585056013?s=46&t=nHPwcg_swfA_HF8Tq9ebSw
https://x.com/PussFi_FNDN/status/1964625750704959814?t=mz7AIruZbl0yUTwOx9Z0UA&s=19
টাইটেলের সাথে সাদৃশ্য রেখে পোস্টে চমৎকার কিছু কথা লিখেছেন। তবে আমরা যতই টাকা ইনকাম করি না কেন অবশ্যই আমাদের পরিবারের প্রতি আগে খেয়াল রাখতে হবে। আপনার বাড়ির পাশের লোকটির স্বভাব দেখে তো আমি হতভম্ব হয়ে গেলাম। যাই হোক যে যার মত করে চলে চলুক কিন্তু বিষয় হল সীমাবদ্ধতার মধ্যেই চলা সবার উচিত।