বিয়ের পরে মেয়েদের কখনো বাপের বাড়ি থাকতে নেই।
কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
বাবার বাড়ি শুনলেই মেয়েদের কত ভালো লাগে! প্রত্যেকটা মেয়েদের বাবার বাড়ির কথা শুনলেই এক অন্যরকম আবেগ কাজ করে। বাবার বাড়ি আমাদের খুবই আপন একটি জায়গা যেখানে প্রত্যেকটা মেয়েকে অনেক যত্ন সহকারে বড় করে তোলে তার বাবা মা। কোন কষ্ট পেতে দেয় না বা কোন অভাব বোধ হতে দেয় না মা বাবা তার মেয়েকে। কিন্তু এই ভালোবাসা মা বাবার মনে তার মেয়ের প্রতি সারা জীবন কি সমান ভাবে থাকে? কখনোই নয়। সময়ের সাথে সাথে ভালোবাসার পরিবর্তন হতে থাকে যেমন পরিবর্তন হতে থাকে মানুষ। তেমনই বাবা-মাও পরিবর্তন হয়ে যায় আবার অনেক সময় পরিবর্তন হতে বাধ্য হয় মেয়েরা। মেয়েদের জীবনে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন আসে বিয়ের পর। বিয়ের ওই একদিন বা এক রাতের মধ্যেই যেন বাবার বাড়ি পর হয়ে যায়। ছেড়ে আসতে হয় নিজের পছন্দের ঘর পছন্দের বাড়ি এবং সাথে প্রিয়জনদের। এই প্রিয়জনদের কাছে আবার ফিরে যাওয়া যায় কিন্তু ক্ষণিকের জন্য ঘুরতে। মেয়েদের একবার বিয়ে হয়ে গেলে বাপের বাড়ি একটা ঘোরার জায়গা হয়ে থেকে যায়। আপন বলে আর থাকে না। বিয়ের পর প্রত্যেকটা মেয়েরই নিজের ঘর বলতে শ্বশুরবাড়ির নিজের বাড়ি হয় আর শ্বশুরবাড়ির পরিচয় নিজের পরিচয় তৈরি হয়ে যায়। আর এই পরিচয় মৃত্যু পর্যন্ত আমাদের বয়ে নিয়ে বেড়াতে হয়, বাপের বাড়ির পরিচয়ে কেউ যেন চিনতেই পারেনা বা বলতেও পারে না।
প্রত্যেকটা মেয়ের বাপের বাড়ি বাপের বাড়ির পরিচয় ছাড়ার সাথে সাথে বাপের বাড়ির প্রতি অধিকার যেন ছেড়ে আসতে হয়। বিয়ের পর বাপের বাড়ির প্রতি কোন অধিকারই থাকে না কোন মেয়ের। কোন মেয়ে যদি ঘনঘন বাপের বাড়িতে আসে বিয়ের পরে অথবা বেশ কিছুদিন বা কিছু মাস থাকে তাহলে সে মেয়েটাকে অনেক বেশি কটু কথা শুনতে হয় সমাজের মানুষের কাছ থেকে এবং কোন কোন সময় কিছু কিছু পরিবারের মানুষও অনেক বেশি কটু কথা শুনিয়ে থাকে। যেহেতু সব বাবা-মা সমান হয় না তাই কিছু কিছু বাবা-মা পরিস্থিতি বুঝে সামলে চললেও কিছু কিছু বাবা-মা আছে সব কাজে মেয়েদেরই দোষারোপ করতে থাকে। আর যদি হয় স্বামী ছেড়ে একদমই চলে আসার ব্যাপার তাহলে তো সেই মেয়ের জীবনটাই নরকের সমান হয়ে যায়। তখন তো বাবা-মার কটুক্তি শুনতেই হয় সে যতই ভালো বাবা-মা হোক না কেন। তবে এগুলো তো আমাদের সমাজের মেয়েদের বলা যায় স্বাভাবিক অবস্থা। কিন্তু যেসব মেয়ে বিয়ের পরে বাপের বাড়িতেই থেকে যায় তাদের তো যেন গলায় কাটা, না পারে গিলতে আর না পারে সহ্য করতে আর না পারে বের করতে। অনেক বাবা-মা এমন আছে যাদের কোন পুত্র সন্তান না থাকায় মেয়ের বিয়ে দিয়ে নিজের বাড়িতে রেখে দেয় অর্থাৎ মেয়ে বিয়ের পরেও বাবার বাড়িতেই থেকে যায়। এমন যে সব মেয়ে বাবা-মার কাছেই থেকে যায় বিয়ের পরে তাদের জীবনের যন্ত্রণা ঠিক গলায় বাধা কাটার মত।
মেয়েটি না পারে সইতে আর না পারে কিছু কইতে। আমার মতে কোন মেয়েকেই বিয়ের পরে বাপের বাড়ি থাকা উচিত নয়। কারণ আমরা এমন অনেক দেখেছি যে বিয়ের পরে ছেলের বাবা-মা ছেলের সংসার ভেঙে দেয় তেমনি মেয়ের বাবা-মাও কিন্তু সংসার ভাঙার ব্যাপারে পিছিয়ে থাকে না। আমাদের সমাজে যেহেতু ছেলে সন্তানের মা বাবা ছেলে জন্মের সময় থেকেই একটা মানসিক প্রস্তুতির মধ্যেই থাকে যে আমার ছেলের একটা বউ আসবে যারা আমাদের সাথেই থাকবে এবং সংসার করবে যে কারণে তাদের মেন্টালিটি কিছুটা অন্যরকম হয়ে থাকে। কিন্তু মেয়ের বাবা মা যখন দেখে যে বিয়ের পরেও মেয়ে আমারই আছে তখন মেয়ের বাড়ির লোক মেয়েকে এমন ভাবে পরিচালনা করার চেষ্টা করে যাতে তার সংসার ভাঙতে একটুও সময় লাগে না। আসলে প্রত্যেকটা ছেলে এবং মেয়ের বিয়ের পরে নিজেকে একটু পরিবর্তন করার প্রয়োজন হয় এবং অনেক বেশি সংসারী হওয়ার প্রয়োজন হয়। বিয়ের পরে ছেলেরা এমনিতেই অনেক বেশি সংসারী হয়ে যায় নিজের বাপের বাড়িতে থেকেই কিন্তু মেয়েরা যদি নিজের বাপের বাড়িতে থাকে তাহলে কখনোই সংসারী হয়ে উঠতে পারে না। কারণ তার বাবা-মা এতটাই বেশি আগলে রাখে যে মেয়েটির ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যায়। বাবা মার বাড়িতে বিয়ের পরেও মেয়েরা থাকলে কখনোই সেই মেয়েটি সংসারী হয়ে উঠতে পারবে না।
আর শুধু যে সংসারী হয়ে ওঠা যায় না এমনটা নয় জীবনে উন্নতি করা অনেক বেশি কঠিন হয়ে ওঠে। বাবা মা বুঝতেও পারে না যে তারা ভালোবাসার নামে মেয়ের জীবনের এবং মেয়ের সংসারের কত বেশি ক্ষতি করে দিচ্ছে। আর এইসব জিনিস যদি সে মেয়েটি বুঝতেও পারে তবুও এমন একটা সিচুয়েশনে পড়ে যায় যে সেই মেয়েটি সেই পরিস্থিতি থেকে বেরোনোর উপায় খুঁজে পায় না। একজন সঠিক বুদ্ধিমতী মেয়ে সবকিছু মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতে করতে নিজেই দম ঘুটে মরতে থাকে। কারণ একদিকে বাবা-মা অন্যদিকে শ্বশুরবাড়ির সংসার হাজব্যান্ড সবকিছু সামলানো অনেক বেশি কষ্টকর হয়ে ওঠে। বাবা মায়ের কাছে জামাই সবসময়ই খারাপ হয়ে থাকে। আর যদি মেয়ের হাসবেন্ড ভালো হয়ে থাকে তবুও মেয়ের বাবা মায়ের চোখে মেয়ের হাজবেন্ড সবসময় খারাপই থাকে। আর এই খারাপ নজরকে ভালো করার সাধ্য স্বয়ং সেই বাবা-মার মেয়েরও থাকে না। মেয়েদের বাপের বাড়িতে থাকার জন্য বাবা মার সাথেও সম্পর্কের অনেকটাই দূরত্ব চলে আসে আর তার সাথে কমে আসে ভালোবাসা। আগের মত বাবা মায়ের সাথে মেয়ের সম্পর্ক ভালো থাকেনা। মেয়েকেই পর ভাবতে শুরু করে তার নিজের বাবা-মা। আসলে আমার মনে হয় প্রত্যেকটি মেয়ের জীবনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া উচিত এবং নিজের একটি সংসার হওয়া উচিত যেখানে সে নিজের মত সংসারটাকে গুছিয়ে নিতে পারবে। বাবা মায়ের কন্ট্রোলে থাকলে কোন ছেলে মেয়েই পরিশ্রমী হবে না এবং নিজে আয় উন্নতি করতে পারবে না। তাই মেয়েদের সব সময় বুদ্ধি করে নিজের সংসার পরিচালনা করা উচিত।
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।
https://x.com/PussFi_FNDN/status/1943231395637375225
https://x.com/pussmemecoin/status/1943341066356207691?s=46&t=nHPwcg_swfA_HF8Tq9ebSw
https://x.com/pussmemecoin/status/1943341346653409281?s=46&t=nHPwcg_swfA_HF8Tq9ebSw