জীবনে সফলতা, উন্নতি কিংবা স্বপ্নপূরণের জন্য অনেকেই মনে করেন, সঠিক সময়ের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। কেউ বলে, ঠিক সুযোগ এলে শুরু করবো, কেউবা ভাবে, আরও একটু সময় নিলে আরও ভালোভাবে শুরু করা যাবে।কিন্তু বাস্তবতা হলো সেই ঠিক সময় কখনোই নিজে থেকে আসে না। আমাদেরই তৈরি করে নিতে হয় সময় ও সুযোগ। আর তাই, আরের জন্য অপেক্ষা না করে, নিজেই নিজেকে প্রস্তুত করে তোলা সবচেয়ে বড় সিদ্ধান্ত।

আমরা যখন অপেক্ষা করতে থাকি, তখন সময় ধীরে ধীরে আমাদের হাত থেকে ফসকে যায়। প্রতিদিন আমরা দেখি,কেউ একজন সাহস করে এগিয়ে যাচ্ছে, চেষ্টা করছে, হোঁচট খাচ্ছে, আবার উঠে দাঁড়াচ্ছে। আর অন্যদিকে কেউ বসে ভাবছে, আরে, আমি তো আরও ভালো করতে পারতাম! কিন্তু করতে পারা আর করে ফেলা,এই দুইয়ের মধ্যে পার্থক্য হলো আত্মপ্রস্তুতি।

নিজেকে তৈরি করার মানে শুধু জ্ঞান অর্জন নয়, মানসিক প্রস্তুতিও। নিজের দুর্বলতাকে চিহ্নিত করে তাকে জয় করার চেষ্টা, সময়কে মূল্য দেওয়া, ব্যর্থতা থেকে শেখা, এবং প্রতিনিয়ত নিজেকে আরও ভালো করার প্রচেষ্টা,এসবই প্রস্তুতির অংশ। যাদের জীবনে বড় অর্জন এসেছে, তাদের অধিকাংশই দীর্ঘ সময় নিজেদের প্রস্তুত করেছেন, অনেকবার ব্যর্থ হয়েছেন, আবার নতুন করে শুরু করেছেন।

আরেকটা বড় ব্যাপার হলো,যখন আমরা নিজেকে প্রস্তুত করতে শুরু করি, তখনই চারপাশও আমাদের প্রস্তুতির প্রতিফলন হতে শুরু করে। আত্মবিশ্বাস বাড়ে, মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হয়, নতুন নতুন দরজা খুলতে থাকে। যে কাজটা একসময় অসম্ভব মনে হতো, এখন তা অনেক সহজ লাগে। কারণ প্রস্তুতি আমাদের ভেতরের শক্তিকে জাগিয়ে তোলে।

জীবনে সবকিছু পারফেক্ট হবে এমন আশা রাখা অবাস্তব। সঠিক সময়, সঠিক মানুষ, সঠিক পরিবেশ এসব কল্পনা করে বসে থাকলে আমরা কখনোই শুরু করতে পারি না। কিন্তু যদি আমরা বুঝে ফেলি যে, এখনই সময়, আমি যা আছি তাই দিয়েই শুরু করতে হবে, তাহলেই সাফল্যের যাত্রা শুরু হয়।

অতএব, আর অপেক্ষা নয়। এখনই সময়,নিজেকে প্রস্তুত করা।তাই সময় নষ্ট না করে আমাদের উচিত কারও জন্য অপেক্ষা না করে নিজেকে নিজেই প্রস্তুত করা।তাহলেই আমরা এগিয়ে যেতে পারবো।