অনেকদিন পর আমি আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি একটু অন্যরকম একটি গল্প নিয়ে। বর্তমানে আমার সেমিস্টার ব্রেক চলছে, তাই কিছুদিনের জন্য খালার বাড়িতে এসেছি। এখানে এলেই মনটা একদম শান্ত হয়ে যায়। গ্রামের পরিবেশ, চারপাশে সবুজ গাছপালা, পাখির ডাক আর হালকা ঠান্ডা বাতাসে মনটা খুব শান্ত ও ফ্রেশ লাগে। এই ছুটিটাকে শুধু বিশ্রামেই কাটাতে চাইনি, বরং ভেবেছিলাম কিছু স্মরণীয় মুহূর্ত তৈরি করব।আমার খালামণি ছোটবেলা থেকেই একুরিয়ামের মাছ খুব পছন্দ করেন। কিন্তু বিভিন্ন ব্যস্ততার কারণে কিংবা সুযোগের অভাবে কখনোই একটা একুরিয়াম কেনা হয়ে ওঠেনি। তাই হঠাৎ আমার মনে হলো, এবার তাকে একটা ছোট একুরিয়াম উপহার দেব সেটা হবে এই ছুটির একটা বিশেষ কাজ এবং খালামণির জন্য একটা চমৎকার সারপ্রাইজ।সকালে ঘুম থেকে উঠে ঠিক করলাম আজই কিনে ফেলবো। বাজারে গিয়ে অনেক খোঁজাখুঁজির পর একটা সুন্দর ছোট একুরিয়াম কিনলাম। এর সাথে কিনলাম অক্সিজেন সাপ্লাই মেশিন, কালারফুল পাথর, কিছু শোপিস এবং একটি ছোট ফিল্টার সিস্টেম, যেন মাছেরা ভালোভাবে বাঁচতে পারে। এরপর কিছু রঙিন মাছ কিনলাম গোল্ড ফিশ, মলি, গাপি, প্লাটি ইত্যাদি। মাছগুলো খুব সুন্দর, রঙে ঝলমল করছে দেখে মন একেবারে আনন্দে ভরে উঠল।সব কিছু কিনে নিয়ে ফিরছিলাম গ্রামের পথে। চারপাশে সবুজ গাছ, ঠান্ডা বাতাস আর সেই নিরিবিলি পরিবেশে হাঁটতে হাঁটতে মনটা আরও ভালো লাগছিল। মনে হচ্ছিল, আমি সত্যিই কিছু সুন্দর করতে যাচ্ছি। বাড়িতে পৌঁছেই প্রথমে কিছু না বলে সব কিছু সাজাতে শুরু করলাম। খালামণি অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিলেন কিছুই বুঝতে পারছিলেন না। তারপর আমি ধীরে ধীরে একুরিয়াম সেটআপ করলাম পাথর সাজালাম, শোপিস বসালাম, পানি ঢাললাম, ফিল্টার আর অক্সিজেন মেশিন চালু করলাম, তারপর মাছগুলো একে একে ছেড়ে দিলাম।যখন সব কিছু রেডি হলো, তখন একুরিয়ামটা দেখতে একেবারে পরীর জগতের মতো লাগছিল।

মাছগুলো পানি ছেড়ে খুশিমনে সাঁতার কাটছিল। খালামণির মুখে তখন যে আনন্দ আর হাসি দেখেছি, সেটা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। তিনি বললেন, “এইটা আমার জীবনের সবচেয়ে সুন্দর গিফট!” এই কথাটি শুনেই আমি বুঝে গেছি, আমার উপহার সার্থক হয়েছে।এটা আমার জন্য খুবই স্পেশাল একটা অভিজ্ঞতা। জীবনে হয়তো অনেক বড় কিছু করা হয়নি, কিন্তু আজ প্রিয় একজন মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে পেরেছি এর চেয়ে বড় কিছু আর হতে পারে না। আমরা সবসময় ভাবি, উপহার মানেই বড় কিছু দিতে হবে। কিন্তু না, ছোট কিছু ভালোবাসা দিয়েও অনেক বড় আনন্দ দেওয়া যায়।এই পোস্ট লেখার মূল উদ্দেশ্য হলো ভালোবাসা শুধু কথায় নয়, কাজে প্রকাশ করা। আর সেটাও হতে পারে খুব সাধারণ কিছু দিয়ে যেমন এই একুরিয়ামের মতো। খালামণির সেই হাসি, সেই চোখের আনন্দ আমার এই সেমিস্টার ব্রেকের সবচেয়ে সুন্দর উপহার হয়ে থাকবে।ধন্যবাদ সবাইকে এতক্ষণ সময় নিয়ে পড়ার জন্য। যদি ভালো লেগে থাকে, তাহলে অবশ্যই মন্তব্যে জানাবেন। আর আপনারাও চেষ্টা করুন, প্রিয় মানুষদের এমন ছোট ছোট উপহারের মাধ্যমে খুশি করতে। কারণ, ভালোবাসা ছড়িয়ে দিতে কোনো বড় আয়োজনের দরকার হয় না দরকার শুধু একটা ভালো মন। খালামুনিকে খুশি করতে পেরে আমারও অনেক ভালো লাগছিল।

এতক্ষণ আমার পোষ্ট মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আজ এখানেই শেষ করছি, অন্য কোনদিন নতুন কিছু নিয়ে আপনাদের সামনে উন্মোচিত হব। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।

ধন্যবাদ সকলকে✨💖

ফোনের বিবরণ

ক্যামেরা	Redmi note 9
ক্যামেরা.মডেল	note9
অবস্থান	সিরাজগঞ্জ- বাংলাদেশ।

আমার পরিচয়

আমি শেলি। আমি বর্তমানে সিরাজগঞ্জ জেলার এনায়েতপুরে খাজা ইউনুস আলী বিশ্ববিদ্যালয়ে সি এস ই তে অধ্যায়নরত আছি। ছোটবেলা থেকেই ছবি আঁকতে ভালোবাসি। নতুন কিছু শিখতে এবং জানতে ভালোলাগে।ঘুরতে আর খেতে খুব ভালোবাসি।অবসর সময় পেলেই ছবি আঁকি। এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে। 🌼💖🌼

👉সবার প্রতি শুভেচ্ছা এবং পোস্টটি সমর্থনকারী সকল বন্ধুদের বিশেষ ধন্যবাদ।