ছোট গল্প হাবিবের জীবন (পর্ব-০৪)।

হ্যালো বন্ধুরা।
আসসালামু আলাইকুম।
কেমন আছেন সবাই? হাবিবের জীবন কাহিনী নিয়ে তৃতীয় পর্বে যতোটুকু শেয়ার করেছিলাম তার আঙ্গিকে আজকের পর্বে পরবর্তী ঘটনাটা তুলে ধরব।

হাবিবের বড় ভাইয়ের মৃত্যুর পর হাবিব বেশ বড় মানসিক ধাক্কা পায়। ধীরে ধীরে হাবিবের বাবার সাহায্যে হাবিব বাইরের মানুষ গুলোর সাথে মিশতে থাকে এবং এক পর্যায়ে অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে যায়। হাবিব প্রতিদিন সকালবেলা বাজারে আসতে বাজারের সব মানুষের সাথে খোলামেলা চলাফেরা করতো সবাই তাকে অনেক ভালবাসত কেননা হাবিব ছিল মানসিক ভারসাম্যহীন। সবাই সব সময় হাবিবকে আদর করতে বলে হাবিব ও সকাল হলেই বাড়ি থেকে বাজারের মানুষের কাছে ছুটে আসতো। ঠিক একই ভাবে বিকল হলেই হাবিব জানো তার আপন ঠিকানায় বাজারের দিকে চলে আসতো। বাজারে আসলেই বাজারের মানুষের থেকে সব ধরনের খাবার খেতে পারতো সবার সাথে আড্ডা দিতে পারতো আর হাবিব ধীরে ধীরে সেটা বেশ উপভোগ করতে শুরু করল।

সময়ের সাথে সাথে হাবিবের বয়স বাড়তে শুরু করল হাবিব আগের থেকে অনেকটা সবকিছু বুঝতে শুরু করল ভালো-মন্দ সবকিছুই যেন হাবিব বুঝতে শুরু করেছে একজন ভারসাম্যহীন মানুষ কিছুটা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছে। হাবিব পরিষ্কারভাবে কোন কিছু বলতে পারত না তবে অন্যকে তার মনের ভাব প্রকাশ করতে পারতো। আবার কেউ তাকে কোন কিছু বললে সেটা অনুধাবন করতে পারে। এক পর্যায়ে হাবিব বেশ চঞ্চল হয়ে উঠলো। একা একাই সব জায়গায় ঘুরে বেড়াতো কোন কিছুই তার কাছে অস্বাভাবিক মনে হতো না। হাবিবের চলাফেরা দেখে একজন স্বাভাবিক মানুষের মতোই মনে হতো তাই হাবিবের পরিবার ও হাবিবকে নিয়ে আর খুব বেশি টেনশন থাকত না।

হাবিব মাঝে মাঝেই শহরে তার বোনের বাড়িতে তার মায়ের সঙ্গে ঘুরতে যেত। হাবিবের বোনের জামাই পেশায় একজন রিকশাচালক শহরে রিকশা চালিয়ে তার জীবিকা নির্বাহ করে । হাবিব তার মায়ের সঙ্গে ট্রেনে তার বোনের বাড়িতে যায়। বেশ কয়েকবার ট্রেনে তার বোনের বাড়িতে যাওয়ার পরে অনেকটাই এলাকাটা হাবিবের কাছে পরিচিত হয়ে যায়। হঠাৎ করে একদিন হাবিব চিন্তা করল সে তার বোনের বাড়িতে যাবে। হাবিব তার মায়ের সাথে যেভাবে স্টেশনে গিয়ে ট্রেনে চড়ে তার বোনের বাড়িতে যায় ঠিক একই ভাবেই স্টেশনে গিয়ে ট্রেনে উঠলো। ট্রেনে উঠে জানালার পাশে সিট পেয়ে সেখানেই বসে পড়ল। গরমের মৌসুমে জানালার পাশে যখন ট্রেনে উঠে বসলো তখন বাতাসে হাবিবের প্রচণ্ড ঘুম পাচ্ছিল তাই জানালার পাশের সিটে বসেই হাবিব ঘুমিয়ে গেল। ঘুম ভেঙে হাবিব ট্রেন থেকে একটা স্টেশনে নেমে পরল তবে সেটা কোন স্টেশন সেটা নিয়ে হাবিবের কোন ধারনা নেই।

হাবিব ট্রেন থেকে নেমে পরল তবে তার বোনের বাড়ির স্টেশন যে রকম ছিল হাবিব যে স্টেশনে নেমেছিল সেটা ভিন্ন ছিল তখন হাবিব বুঝতে পারছিল সে ভুল স্টেশনে নেমে পড়েছে। হাবিব তখন পুরোপুরি অসহায় হয়ে গেল সে বিভিন্ন মানুষের কাছে কিছু একটা বলার চেষ্টা করছিল তবে সে সমস্ত মানুষ হাবিবের কথা বুঝতে পারছিল না। তাছাড়া শহর কেন্দ্রিক মানুষ সবসময় ব্যস্ত থাকে যার কারণে কেউ হাবিবের কথা বোঝার চেষ্টাও করলো না আবার হাবিব ও পরিষ্কারভাবে কাউকে তার নিজের ঠিকানা বলতে পারছিল না। হাবিব যে স্টেশনে নেমেছিল স্টেশনটা বেশ বড়। সে বুঝতে পারছিল না কোন ট্রেনে উঠলে আবার নিজের এলাকায় যেতে পারবে। মানসিক ভারসাম্যহীন হাবিব শুধু চারিপাশে চেয়ে চেয়ে দেখছিল আর ভাবছিল সে কোথায় চলে আসলো আর কিভাবে বাড়ি যাবে??

হাবিব সকালবেলা তার এলাকার শহর থেকে বেরিয়েছে এদিকে দুপুর গিয়ে বিকেল হয়ে গিয়েছে তবুও সে এদিক-সেদিক ঘুরছে খাওয়া-দাওয়ার তেমন কোন উপায় নেই আবার তার কাছে খুব একটা টাকা-পয়সা আছে তাও নয়। কার কাছে গিয়ে খাবার চাইবে আর কার কাছে মনের দুঃখ প্রকাশ করবে হাবিব সেটা কিছুতেই বুঝতে পারছিল না। হাবিব হুটহাট করে আবার একটি ট্রেনে উঠে পড়ল হাবিব ভেবেছিল এই ট্রেনে হয়তোবা সে তার এলাকায় ফিরে যেতে পারবে কিন্তু সেটা আর সম্ভব হয়নি বরং ফ্রেন্ড উল্টা আরো অনেক দূরে চলে যায় পরবর্তীতে সে ট্রেন থেকে নেমে আরো ভেঙে পড়ল কারণ সে ট্রেন থেকে নেমে বুঝতে পারল আবার নতুন কোন এলাকায় চলে এসেছে।

---

---

VOTE @bangla.witness as witness

OR

SET @rme as your proxy

---

JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

Follow @amarbanglablog for last updates

---

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP	500 SP	1000 SP	2000 SP	5000 SP

---

|| Join the Discord Server for more Details ||