জেনারেল রাইটিংঃনারী দিবস ও বাস্তবতা।
আন্তর্জাতিক নারী দিবসের শুভেচ্ছা সবাইকে।
কেমন আছেন সবাই? আশাকরি ভালো আছেন। প্রত্যাশা করি সবসময় যেনো ভালো থাকেন। আজ ২৩শে ফাল্গুন, বসন্তকাল, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ। ৮ মার্চ,২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ। নারী দিবস ও বাস্তবতা শিরোনামে আজ একটি জেনারেল রাইটিং শেয়ার করবো আপনাদের সাথে।
আজ নারী দিবস। নারীদের মুক্তি খুঁজে পাওয়ার দিন। নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা,নারীর প্রতি সকল বৈষম্য প্রতিরোধ ও নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে সারা বিশ্বেই দিনটি পালিত হচ্ছে, নানা অনুষ্ঠান-আয়োজনে। সরকারি ও বেসরকারি ভাবে অনুষ্ঠানের কমতি নেই। নারীর জয়গানে মুখরিত আজকের দিন। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। সাম্প্রতিক সময়ে যদি আমরা আমাদের দেশের দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাবো নারী নির্যাতন ব্যাপক ভাবে বেড়েছে। আগেও ছিল এখনও আছে। বিষয়টা এমন দাঁড়িয়েছে, নারীর প্রতি সহিংসতা যেন নিয়মে পরিনত হয়েছে। সম্প্রতি সিগারেট ও ওড়না কান্ড। শিশু ধর্যণ, নারী হত্যা তার প্রমাণ। সেই একই আলাপ। নারীরা এটা করতে পারবেনা, ওটা করতে পারবেনা। নারী কি পড়বে, কিভাবে চলবে সেটা কোন পুরুষ নির্ধারন করে দিবে!! এই সময়ে দাঁড়িয়েও নারীদের পুরুষতান্ত্রিকতার বিরুদ্ধে লড়তে হচ্ছে। আর এটা সত্য বর্তমান যা পরিস্থিতি নারীদের লড়াই ছাড়া মুক্তি নেই। তবে আশার কথা পুরুষতান্ত্রিক ধ্যান ধারণা নারীর উপর চাপিয়ে দেওয়া পুরুষের সংখ্যা অল্প। কিন্তু তাদের থামাতেই আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। রাষ্ট্রের উচিত এইসব নারী বিদ্ধেষীদের প্রতি আরো কঠোর হওয়া।
ধর্মের নামে, শাসনের নামে, পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে ও বিকৃতি মানসিকতার কারণে সর্বত্রই নারীরা নিগৃত-নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন।এক রিপোর্টে গত ২৫ সালের জানুয়ারি মাসেই মোট ৮৫ জন শিশু-কিশোরী এবং ১২০ জন নারী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ফ্রেরুয়ারিতে এই চিত্র আরো বেশি। এই মাসে মোট ১৮৯টি নারী নির্যাতনের ঘটনা সংগঠিত হয়েছে। এসব নির্যাতনের মধ্যে শারীরিক নির্যাতন, হত্যা, ধর্যণ,সংঘবদ্ধ ধর্যণের ঘটনা আছে। সব ধর্ম-বর্ণের নারীরাই এই নির্যাতনের শিকার। এই রিপোর্ট প্রকাশিত রিপোর্টের ভিত্তিতে। বাস্তব চিত্র হয়ত আরো বেশি। কি ভয়ংকর চিত্র। অথচ আমরা স্বপ্ন দেখি নারী পুরুষ সমতা পৃর্থিবী! সেই স্বপ্নের পৃথিবী কিভাবে সম্ভন। পৃথিবীর সবদেশেই নারীরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। সেটা একেক দেশের ক্ষেত্রে ধরণ একেক রকম।
এত কিছুর পরেও নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন বাঁধা প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে। এবারে আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রতিপাদ্য-‘অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন নারী ও কন্যার উন্নয়ন’। আমাদের দেশে- সমাজে-পরিবারে এর বাস্তবায়নের জন্য পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন খুব জরুরি। একটি দেশের বা পৃথিবীর অধের্ক জনগোষ্ঠী নারী। তাদের বাদ দিয়ে পরিবারে, সমাজে ও দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়।নারী-পুরুষের চার হাতকে এক করে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে গেলেই কাঙ্খিত সাফল্য আসবে। এর জন্য পশ্চাৎপদ ধ্যান ধারনা থেকে বের হয়ে নারী-পুরুষকে সমান ভাবে এগিয়ে আসতে হবে। এর জন্য অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে নারীদেরই। একটি কথা মনে রাখতে হবে , নারীদের সময়ের উপযোগি করে তৈরি হতে হবে। কারো দয়া বা করুণার অপেক্ষায় না থেকে যোগ্যতা দিয়ে তার অধিকার মর্যদা ছিনিয়ে আনতে হবে। তাহলেই নারীর কাঙ্খিত বিজয় হবে।
পোস্ট বিবরণ
শ্রেনী | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
পোস্ট তৈরি | @selina 75 |
তারিখ | ৮ই মার্চ, ২০২৫ ইং |
লোকেশন | ঢাকা,বাংলাদেশ |
আমার পরিচয়
আমি সেলিনা আখতার শেলী। জন্মসূত্রে বাংলাদেশী। জন্ম,বেড়ে ওঠা চট্টগ্রাম শহরে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনশাস্ত্রে অনার্স-মাস্টার্স। দীর্ঘ দিন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অধিকার রক্ষায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করেছি। স্বামীর বাড়ী দিনাজপুরে,বর্তমানে ঢাকায় থাকি।ঘুরে বেড়ানো,বই পড়া,অজানাকে জানা,নিত্য নতুন রান্না ও বিভিন্ন ধরণের হাতের কাজ করা আমার শখ।দেশাত্ববোধ,দেশীয় শিল্প,সাহিত্য ও সংস্কৃতি আমার অন্যতম ভালো লাগা। এদেশে জন্মগ্রহণ করে আমি গর্বিত।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
https://x.com/selina_akh/status/1898425267951137176
Daily task
Hello selina75, thank you for your contribution to our account.
আজ আন্তর্জাতিক নারী দিবস, সেই উপলক্ষে আপনার মত আমিও কিছু লিখব ভেবেছিলাম তবে লেখা হয়ে ওঠেনি প্রথমত নিজস্ব কিছু ব্যস্ত ছিল আর কোথাও কি আমার মনে হয় নারীদের জন্য আলাদা খরো দিনের প্রয়োজন নেই। সংসার বা সমাজ শিখিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি পুরুষের যতখানি অবদান থাকে ততখানি একটি নারীরও অবদান তাই উদযাপন হলে আলাদাভাবে করার দরকার আছে বলে আমার মনে হয়না তার থেকে রোজই আমরা সুন্দর মানসিকতা নিয়ে একে অপরের পাশে দাঁড়ালে নারীদের প্রতি সম্মান এবং তাদের এগিয়ে যেতে সাহায্য করা দুটোই হবে।
আপনি খুব সুন্দর একটি পোস্ট লিখেছেন। যার প্রতিটা অক্ষরের সাথে এবং শব্দের সাথে ও সহমত পোষণ করছি। আমি নিজে যেহেতু লিখিনি তাই আপনার কমেন্টে দু-একটা কথা না বলে থাকতে পারছি না। যদিও তা আপনার উদ্দেশ্যে নয় জনসাধারণের জন্য।
নারী দিবসে আমি একজন নারী হিসেবে চাইবো প্রতিটা নারীরই প্রথমত নিজেদের পাশে নিজেদের দাঁড়ানো দরকার। বাড়িতে শিক্ষক হিসেবে প্রধান আমরা যাকে দেখতে পাই তিনি হলেন মা, তাই প্রতিটি মায়ের উচিত নিজেদের কন্যা সন্তানের প্রতি দায়-দায়িত্ব বাধা বিপত্তি সমাজের নানার নিয়ম কানুন শেখানোর পাশাপাশি তাদের পুত্র সন্তানকেও সামাজিক করে তোলা যেন ভবিষ্যতে তার পুত্র সন্তানের জন্য অন্য কোন মেয়ে বাড়ি থেকে বাইরে বেরোতে ভয় না পায়। সংসদে সমান সমান কেউ নয় তাই যার যতটা জায়গা তাকে ততখানি দেওয়া দরকার এবং তা সম্মানের সহিত।
ধন্যবাদ আপু আপনি খুব সুন্দর করে আপনার কথাগুলো লিখেছেন। আমার কথাগুলো যদি আপনার খারাপ লেগে থাকে তাহলে আমি দুঃখিত। তাও জানিনা কেন আপনার পোস্ট করে কথাগুলো লিখেই ফেললাম।
নারী-পুরুষের জন্য যদি সমসুযোগ নিশ্চিত হত, তাহলে আমাদের আলাদা করে নারী দিবসের দরকার ছিলনা। কিন্তু আমাদের সমাজ বাস্তবতায় পদে পদে জেন্ডার বৈষম্য আছে। সব পরিবার বা অবিভাবকের দৃষ্টিভঙ্গিও নারী বান্ধব না! আমরা যদি নারী পুরুষের সম সুযোগ নিশ্চিত করতে পারতাম, তাহলে ঘটা করে আলাদা দিবসের আর দরকার হতো না। জেন্ডার সমতাভিত্তিক একটি সমাজ ব্যবস্থা আমাদের জরুরি। তবে আপনার দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি শ্রদ্ধা। সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু।
আসলে সত্যিই কিছু কিছু পুরুষ মানুষ ভুলে যায় যে তারা নারী ছাড়া অক্ষম। নারী অস্তিত্ব না থাকলে তাদের অস্তিত্ব এ পৃথিবীতে তৈরি হতো না। তবে সব পুরুষ মানুষ খারাপ হয় না, কারণ ভালো খারাপ মিলেই পৃথিবী চলছে। নারী-পুরুষ উভয় ভালো আছে আবার খারাপও আছে। আমরা চারপাশে এমন অনেক খবর শুনতে পাই যেখানে পুরুষেরাও নির্যাতিত হচ্ছে। আর সব পুরুষ মানুষ যদি খারাপ হতো তাহলে পৃথিবীতে একটি মেয়েও শান্তিতে জীবন যাপন করতে পারত না। আসলে সবার আগে মানুষের চিন্তাভাবনায় পরিবর্তন করার দরকার এবং প্রত্যেকটি মেয়েকে সম্মান করা উচিত। আর তার সাথে তার নিজের জীবনযাপনের জন্য পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া উচিত। আমার মনে হয় প্রত্যেকটি মেয়েকে যথাযথ সম্মান করলে এবং তাদের প্রতি ভালো চিন্তা ধারা রাখলে আর ভালো আচরণ করলেই মেয়েদের জীবন অনেকটাই সুন্দর করা সম্ভব।
ঠিক দাদা মেয়েদেরকে মানুষ হিসাবে দেখতে হবে তাতেই নারীর কল্যান।
আপনি নারী দিবস ও বাস্তবতা নিয়ে অনেক সুন্দর একটি পোস্ট লিখেছেন। বাস্তব জীবনে নারীরা এখনো পর্যন্ত স্বাধীন হয়ে উঠতে পারেনি। সব কিছু আপনি অনেক সুন্দর করে এটার মধ্যে ফুটিয়ে তুলেছেন। আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে আপনার লেখা আজকের পুরো পোস্টটা পড়তে।
জি আপু নারীরা এখনও স্বাধীন নয়। অন্যের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।
নারী দিবস নিয়ে আপনি খুবই সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন৷ আসলে নারীরা এখন যেরকম কোন জায়গায় পিছিয়ে নেই এবং কোনভাবেই তারা কোন জায়গা থেকে পিছিয়ে রাখা যাচ্ছে না, তারা সব জায়গায় কাজ করে যাচ্ছে৷ সব জায়গায় তারা সম্মানিত। তবে বাস্তবতা একটু বেশিই কঠিন৷ তাদের এই কাজকর্মগুলো অনেকের পছন্দ হয় না এবং অনেকভাবে তারা বিভিন্ন জায়গায় অনেক অপমানের এবং অনেক খারাপ পরিস্থিতির শিকার হয়ে থাকে৷ যা আপনার এই পোস্টের মাধ্যমে খুব সুন্দরভাবে শেয়ার করেছেন৷ অনেক ভালো লাগলো আপনার কাছ থেকে এত সুন্দর পোস্ট পড়ে৷
নারীকে সম্মান দেয়ার মানসিকতা তৈরি হলেই সমাজের জন্য মঙ্গল।