গ্রামীণফোনের প্রতারণামূলক অফার সিস্টেম: এক ভুক্তভোগীর বাস্তব অভিজ্ঞতা।
বাংলা ভাষার কমিউনিটি
হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো এবং সুস্থ আছেন।
আমরা যারা চাকরিজীবী, তারা জানি মাসের শেষ কেমন হয়, হাত-পকেট সব ফাঁকা, খরচের হিসাব মেলাতে হিমশিম খাওয়া, আর প্রতীক্ষা থাকে স্যালারির দিনের। আমি একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করি। আমাদের বেতন সাধারণত মাসের ৭ বা ৮ তারিখে আসে। সেই পর্যন্ত চলতে হয় হিসেব করে, মাস শেষে অনেক দরকারি জিনিসও বাদ দিতে হয় শুধু টাকার অভাবে।
এবার মূল ঘটনার কথা বলি। গতকাল রাতে আমার মোবাইলের ডাটা শেষ হয়ে গেছে, কিন্তু আমি বুঝতে পারিনি কারণ বাসায় WiFi ব্যবহার করি। সকালে অফিসে যাওয়ার পথে হঠাৎ দেখি মোবাইলে নেট নেই। রকেট, বিকাশ, নগদও সব একাউন্ট ফাঁকা। ভাবলাম, রাতে বেতন আসবে তখন রিচার্জ করে নেব।
অফিসে গিয়ে কলিগের মোবাইল থেকে হটস্পট ব্যবহার করে কিছুক্ষণ ইন্টারনেট ব্রাউজিং করলাম। অবশেষে বিকেলের দিকে বেতন চলে আসে। সাথে সাথে আমি "মাই জিপি" অ্যাপে ঢুকে ইন্টারনেট অফার দেখতে থাকি। ২৪৮ টাকার এক মাস মেয়াদের একটি বান্ডেল অফার আমার ভালো লাগে। সাথে সাথেই রকেট থেকে ২৪৮ টাকা রিচার্জ করি।
কিন্তু তারপর যা হলো, তা শুধু হতাশাজনক না, চরম রকমের প্রতারণাও। মোবাইলে এসএমএস এল না। মাই জিপি অ্যাপে গিয়ে দেখি, আমাকে এক মাস মেয়াদ নয়, মাত্র ৭ দিনের জন্য ২৫ জিবি ডাটা দিয়েছে! আমি পুরো হতভম্ব হয়ে গেলাম। আমার মাসে ১০ জিবি হলেই যথেষ্ট সেখানে ২৫ জিবি দিলো কোন মিনিট ও দেয় নি। তখন কেমন লাগবে চিন্তা করেন। মেজাজ কতটা খারাপ হবে...।
পরে ৪০ টাকা রিচার্জ করে গ্রামীণফোন কাস্টমার কেয়ারে কল করি। তারা জানালো, এখন থেকে যদি আপনি লাস্টে শূণ্য বাদে অর্থাৎ ২১, ৩৫, ৪৪, ৬৭, ৮৯, ৯৯ এভাবে রিচার্জ করেন, তাহলে তারা অটোমেটিক "সেট করা" অফার দিয়ে দেবে। আর লাস্টে শূণ্য সহ যেমন ২০, ৫০, ১০০, ২০০, ৩০০ টাকা রিচার্জ করলে আপনি কিছু পাবেন না শুধু ব্যালেন্সে টাকা আসবে।
মানে কি..... এটা তো সরাসরি প্রতারণা, আমরা নিজের টাকায় রিচার্জ করি, অথচ তারা আমাদের না জানিয়ে এমন ফাঁদ পেতে রেখেছে। আপনি অফার নির্বাচন করেছেন এক মাসের, অথচ দিয়ে দিলো সাত দিনের! এটা কি ন্যায্য? একজন গ্রাহক যদি নিজের মতো রিচার্জ করে কোনো প্যাক নিতে চায়, তবে তা সে কাস্টমাইজ করতে পারবে না কেন?
সবচেয়ে বড় প্রশ্ন: গ্রাহকের সম্মতি ছাড়া কোনো অফার কেন অটো একটিভেট হবে?
তারা বলছে, এটা তাদের ‘সিস্টেম’। আমি বলি এই ‘সিস্টেম’-এর আড়ালে তারা জনগণকে ঠকাচ্ছে।
এখানে সরকারের কি কোনো ভূমিকা নেই? এই অপারেটর দীর্ঘদিন ধরে দেশের সবচেয়ে বড় টেলিকম ব্র্যান্ড হিসেবে ব্যবসা করছে, অথচ তাদের নিয়মনীতি এমনভাবে সাজানো যেন গ্রাহক প্রতারিত না হয়ে পারে না। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (BTRC) কি এসব দেখছে না?
আজকের পর থেকে আমি গ্রামীণফোন বর্জন করলাম। আমি আর কোনোদিন এই অপারেটর ব্যবহার করবো না। আমি অন্য অপারেটরের দিকে ঝুঁকছি, যেটি অন্তত স্বচ্ছতা বজায় রাখে।
বন্ধুরা, আপনারাও সতর্ক থাকুন। রিচার্জ করার আগে ভালোভাবে যাচাই করে নিন। আর যদি সম্ভব হয়, গ্রামীণফোনের এই প্রতারণার বিরুদ্ধে সচেতনতা ছড়িয়ে দিন। একজন ভুক্তভোগী হিসেবে আমি চাই, আর কেউ যেন এমন প্রতারণার শিকার না হয়।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | রিয়েলমি সি-৫৩ |
ফটোগ্রাফার | @joniprins |
স্থান | ব্রাহ্মনবাড়িয়া,ঢাকা, বাংলাদেশ |
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server