রংপুরের পদাগঞ্জে বিখ্যাত হাঁড়িভাঙ্গা আমের বেশ কিছু এলোমেলো ফটোগ্ৰাফি ।।

🥰.. আসসালামুয়ালাইকুম ...🥰

প্রিয় হিন্দু ভাই-বোনদের জন্য আদাব ও ভালোবাসা 💗🙏। আমার প্রিয় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল বন্ধুদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও স্নেহ। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি, মহান আল্লাহর রহমতে এবং একে অপরের ভালোবাসায় আপনারা সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও বেশ ভালো আছি।আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির একজন সদস্য,এই প্ল্যাটফর্মের সাথে আমার যাত্রা প্রায় এক বছর ধরে। সত্যি বলতে, এখানে আসতে পেরে আমার মনে হচ্ছে ! যেন নিজের আর একটি নতুন পরিবার খুঁজে পেয়েছি। প্রতিটি লেখা, প্রতিটি মন্তব্য, প্রতিটি বন্ধুত্ব আমাকে দিয়েছে আনন্দ, ভালোবাসা এক নতুন অধ্যায়ের স্বাদ।আজকে আমি আপনাদের সাথে রংপুরের পদাগঞ্জের বিখ্যাত হাঁড়িভাঙ্গা আমের বেশ কিছু এলোমেলো ফটোগ্ৰাফি শেয়ার করবো ।আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক অনেক ভালো লাগবে। চলুন এবার শুরু করা যাক।

বাংলাদেশে গ্রীষ্ম এলেই চারপাশ যেন আমের ঘ্রাণে ম ম করে।দেশের নানা প্রান্তে নানা জাতের আম যেমন চাষ হয়, তেমনি প্রতিটি অঞ্চলের সাথে জড়িয়ে থাকে একেকটা নাম, একেকটা স্বাদ, আর একেকটা ভালোবাসা। সেই তুলনায় রংপুরের গর্ব হিসেবে যেটি মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে, তা হলো হাঁড়িভাঙ্গা আম। আর আমার নানাবাড়ির ঠিক পাশেই, মিঠাপুকুর উপজেলার পদাগঞ্জ গ্রামে এই হাঁড়িভাঙ্গা আমের অসংখ্য বাগান যেন প্রতি বছর গ্রীষ্মকালে এক নতুন উৎসবের জন্ম দেয়।এই আমের সবচেয়ে চমৎকার দিকটি হলো এটি আশবিহীন, বা আরও স্পষ্ট করে বললে, এতে প্রায় কোনো আঁশ থাকে না। এক কামড়ে মুখে ছড়িয়ে পড়ে রস আর মিষ্টি, কিন্তু আঁশের কোনো ঝামেলা নেই। তাই খেতে যেমন আরামদায়ক, তেমনি রসালো এই আমটি খাওয়ার পর একটুও মুখে তিক্ততা বা খসখসে ভাব থাকে না। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের জন্য এটা একটা উপহার স্বরূপ।

বছরের এই সময়টাতে হাঁড়িভাঙ্গা আমের চাষ, সংগ্রহ, বিক্রি আর পরিবহণ নিয়ে পুরো গ্রামে চলে এক উৎসবমুখর ব্যস্ততা। বাজারে ওঠার আগেই অনেক আম অগ্রিম বুকিং হয়ে যায় দেশের নানা প্রান্তে। কেউ কেউ আবার বিদেশে প্রিয়জনকে পাঠানোর জন্য সংগ্রহ করে রাখেন পদাগঞ্জের এই বিখ্যাত আম।এই আমের একটি বৈশিষ্ট্য হলো খোসা খুব পাতলা, আঁটি ছোট এবং ভেতরের অংশ অত্যন্ত রসালো। খাওয়ার সময় যেন মুখের ভেতরেই গলে যায়। হালকা সুগন্ধে ভরা প্রতিটি কামড় হয় উপভোগ্য, স্মরণীয়।পদাগঞ্জের এই হাঁড়িভাঙ্গা আম কেবল একটি ফল নয়, এটি উত্তরবঙ্গের গর্ব, আর বাংলাদেশের আমের রাজত্বে এক অনন্য রাজা। এই রকম একটি ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য প্রয়োজন চাষিদের যথাযথ সম্মান, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও আন্তর্জাতিক বাজারে পরিচিতি।যাতে করে পদাগঞ্জের হাঁড়িভাঙ্গা হয়ে উঠতে পারে বিশ্বজোড়া সুপরিচিত এক নাম।

আমার নিজস্ব অনুভূতি একটু অন্যরকম। কারণ আমার নানাবাড়ির আশেপাশেই রয়েছে অসংখ্য হাঁড়িভাঙ্গা আমের বাগান। প্রতি বছর গ্রীষ্ম এলেই এই বাগান গুলো যেন আমার দ্বিতীয় বাড়ি হয়ে ওঠে। নানাবাড়িতে ঈদের ছুটি বা গ্রীষ্মকালীন ছুটি কাটাতে এসে বাগানে বাগানে ঘুরে বেড়ানো, পাকা-কাঁচা আম হাতে নিয়ে দেখার আনন্দ, আর গাছের নিচে দাঁড়িয়ে ছবি তোলার মজা ,এসব একসাথে মিশে তৈরি হয় চিরস্মরণীয় কিছু মুহূর্ত।প্রতিটি ফটোগ্রাফি গুলো ক্যামেরার ফ্রেমে ধরা পড়ে আমার এই ভালোবাসা। আমি যেন আমের শুধু বাহ্যিক সৌন্দর্য নয়, বরং তার ভেতরের ঐতিহ্য, মমতা আর স্বাদের গল্প বলার চেষ্টা করলাম। হাঁড়িভাঙ্গা আম শুধু একটি ফল নয়।এটি আমাদের সংস্কৃতির অংশ, আমাদের এই রংপুর বিভাগ এর গর্ভ নিয়ে এসেছে।

পদাগঞ্জ এলাকার মাটি, পানি আর আবহাওয়াই এই জাতের আমের জন্য সবচেয়ে উপযোগী।যার ফলে হাঁড়িভাঙ্গা আমের স্বাদ হয় অত্যন্ত মিষ্টি, রসালো এবং নির্ভেজাল। এই আম দেশজুড়েই সমাদৃত, এমনকি আন্তর্জাতিক বাজারেও জনপ্রিয়তা পাচ্ছে দিনে দিনে।এই আশবিহীন হাঁড়িভাঙ্গা আম, আমার কাছে কেবল একটি স্বাদের গল্প নয়।এটি শৈশবের গ্রীষ্মের বিকেল, এটি নানাবাড়ির উঠোনে দোল খাওয়া ছায়া, আর এটি ভালোবাসার আরেকটি নাম। এবারকার গ্রীষ্মটা আমার কাছে যেন অন্যরকম। কেবল আম খাওয়াই নয়, বরং সেই আমের আশেপাশে কাটানো সময়, ছোট ছোট আনন্দ, ছবির পেছনে জমে থাকা অনুভূতি।সবকিছু মিলিয়ে হৃদয়ে গেঁথে যাচ্ছে একেকটি রঙিন স্মৃতি।

এই ছিল আজকের ব্লগ । আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।কার কাছে কেমন লেগেছে তা অবশ্যই কমেন্টের মন্তব্য করে জানাবেন। কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আজকের মত বিদায় নিচ্ছি, আবার নতুন কিছু নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে।সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং সবার জন্য অনেক শুভকামনা রইল ।

আমার নাম মোছাঃ সামছুন্ নাহার সুইটি । আমি একজন বাংলাদেশী মুসলিম নাগরিক । আমি আমার মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। আমি অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ালেখা করি । আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করার জন্য যুক্ত হয়েছি । আমি গত ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই । এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি ।আমি ভ্রমণ করতে অনেক বেশি পছন্দ করি।সেই সাথে নতুন নতুন ফটোগ্রাফি করতে ও ইউনিক রেসিপি এবং নতুন নতুন ইউনিক ডাই তৈরি করতে বেশ পছন্দ করি । আর স্টিমিট প্ল্যাটফর্মকে আঁকড়ে ধরে ভবিষ্যতে আরো এগিয়ে যেতে চাই, এটাই আমার লক্ষ্য।