দেখতে দেখতে আমাদের হাঁড়িভাঙ্গা আম বাগানের আম বড় হয়ে গেল, আর অল্প কিছু সময়ের অপেক্ষা

in আমার বাংলা ব্লগ3 months ago

আমি @riyadx2 বাংলাদেশ থেকে
রবিবার, ১১ ই মে ২০২৫ ইং

আসসালামুয়ালাইকুম, এবং হিন্দু ভাইদের কে আদাব।আমার বাংলা ব্লগ এর সবাই কেমন আছেন, আশা করি প্রত্যেকে অনেক বেশি ভালো আছেন। আমি ও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। প্রতিদিনের ন্যায় আজকে আপনাদের সাথে আমাদের হাঁড়িভাঙ্গা আম বাগানের আপডেট শেয়ার করবো । আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক বেশি ভালো লাগবে।তো চলুন এবার শুরু করা যাক।


IMG-20250511-WA0002.jpg

দেখতে দেখতে আমাদের হাঁড়িভাঙ্গা আম বাগানের আমগুলো বড় হয়ে উঠেছে। বছরের পর বছর ধরে গাছগুলোকে আমরা যত্ন করে লালন-পালন করি, যেন তারা আমাদের পরিবারের সদস্য। প্রতিদিন ভোরবেলা যখন বাগানে যাই, তখন দেখা যায় প্রতিটি গাছে ঝুলে আছে সবুজ থেকে হালকা হলুদ রঙে রাঙা আমগুলো। যেন গ্রীষ্মের মাঝেও প্রকৃতির এক আশীর্বাদ। এখন শুধু অল্প কিছুদিনের অপেক্ষা, তারপরই শুরু হবে সেই কাঙ্ক্ষিত সংগ্রহ রসালো হাঁড়িভাঙ্গার স্বাদ উপভোগের সময়। দীর্ঘ দিন ধরে আমরা আমাদের আম বাগানের পরিচর্যা করে আসছি শুধু মাত্র আমের ভালো ফলনের জন্য।

IMG-20250511-WA0005.jpg

আমার ছোটবেলায় এই সময়টা ছিল স্বপ্নময়। দাদার সঙ্গে আম বাগানে ঘুরে ঘুরে পাকা আম খুঁজতাম, গাছের নিচে দাঁড়িয়ে থাকতাম কখন যেন একটা আম পড়ে যায়! সেই স্মৃতিগুলো এখনও চোখে ভাসে। হাঁড়িভাঙ্গা শুধু একটি আম নয়, এটি একটি ঐতিহ্য, আমাদের শেকড়ের অংশ। এর স্বাদ যেমন অতুলনীয়, তেমনি এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে পরিবার, গ্রাম, আর আবেগের গল্প।আমি ছোট বেলায় আমার দাদার সাথে আমি আমাদের আম বাগান গুলোর মধ্যে ঘোরাঘুরি করেছিলাম এবং আম খেয়েছিলাম।দাদা দুই বছর আগে পরলোকগমন করেছেন, তাই এখন প্রতি বছর আমের সিজনে দাদা কে অনেক মিস করি আমি।

IMG-20250511-WA0004.jpg

প্রতিটি হাঁড়িভাঙ্গা আমই যেন নিজের মতো করে বড় হয়, ধীরে ধীরে রসে টইটম্বুর হয়ে ওঠে। গাছের ছায়ায় দাঁড়িয়ে থাকা, হালকা বাতাসে আমপাতার দোলা, আর মাঝেমধ্যে হঠাৎ পড়ে যাওয়া পাকা আম সব মিলে এক অপূর্ব অনুভূতি। বাগানের পরিবেশটা এমন যে সেখানে একবার গেলেই মন চায় না ফিরে আসতে। পাখির ডাক, পাতা ঝরার শব্দ, আর পাকা আমের গন্ধ মিলে সেখানে একধরনের শান্তি খুঁজে পাই।আমি এখন প্রায় প্রতিনিয়ত আমাদের আম বাগান পরিদর্শন করার চেষ্টা করছি। কেননা এই সময় টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি সময়। এই সময়ে আম বাগানের পরিচর্যা করতে হয় অনেক বেশি।

IMG-20250511-WA0008.jpg

এই হাঁড়িভাঙ্গা আম কেবল আমাদের পরিবারের নয়, এটি আমাদের এলাকার গর্ব। প্রতিবছর যখন আম বাজারে যায়, তখন গর্ব করে বলি এই আম আমাদের বাগানের। দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ হাঁড়িভাঙ্গার স্বাদ নিতে আসে। এটি শুধু ফল নয়, আমাদের পরিশ্রমের প্রতীক, মাটির সঙ্গে ভালোবাসার বন্ধন। আমাদের এলাকার বেশিরভাগ মানুষ এই হাঁড়িভাঙ্গা আমের মাধ্যমে অনেক দুরে এগিয়ে গিয়েছে।এক সময় আমাদের এলাকার মধ্যে অনেক দরিদ্র মানুষ ছিল, কিন্তু বর্তমান সময়ে আর নেই। এখন সকলেই তাদের ভিটা বাড়ি এবং আবাদি জমির মধ্যে হাঁড়িভাঙ্গা আম চাষ করে স্বাবলম্বী হয়ে গিয়েছে।

IMG-20250511-WA0009.jpg

আর কিছুদিন পরেই শুরু হবে আম সংগ্রহ। সেই প্রস্তুতি এখন তুঙ্গে। আম কুড়ানো, ঝাড়াই-বাছাই, প্যাকিং সব মিলিয়ে একধরনের উৎসবের আবহ। বাগানের প্রতিটি গাছে যেন নতুন প্রাণ ফিরে পায়। আমের রঙ, ঘ্রাণ, আর স্বাদের মাধ্যমে আমরা প্রকৃতির সঙ্গে এক গভীর সংযোগ অনুভব করি। হাঁড়িভাঙ্গা শুধু মুখে রস দেয় না, মনে ভালোবাসা জাগায়। যখন বাজারে নতুন হাঁড়িভাঙ্গা আম উঠবে তখন আমাদের এলাকার মধ্যে এক অন্যরকম আনন্দ কাজ করে আমাদের মাঝে।আর এটি প্রায় প্রতি বছরই হয়ে থাকে। আশা করছি আর অল্প কিছু সময়ের মধ্যে বাজারে নতুন হাঁড়িভাঙ্গা আম উঠবে।

IMG-20250511-WA0001.jpg

IMG-20250511-WA0003.jpg

IMG-20250511-WA0006.jpg

IMG-20250511-WA0007.jpg

সবাই কে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

ক্যামেরা পরিচিতি
DeviceiPhone 11
Camera11+11 MP
CountyBangladesh
LocationRangpur, Bangladesh

2FFvzA2zeqoVJ2SVhDmmumdPfnVEcahMce9nMwwksSDdRvZ6f4GKSwLn3BBFmPFifbbr21AhPTJ7XiTPJGbzxXNzpL3AeDnWebvp5DxFE241B8HGEVAqqCDY5m5Sn.png

Vote@bangla.witness as witness

54TLbcUcnRm3sWQK3HKkuAMedF1JSX7yKgEqYjnyTKPwrcNLMcZnLnFrW5PDaQKxbWWqwrRezSAe39S7RTiEk7NCzgzD1reVavwZGUMbjasjujy1CQqSedvtuVGKXod3vcdSqiXp2.png

Or

Set@rme as your proxy

2r8F9rTBenJQfQgENfxADE6EVYabczqmSF5KeWefV5WL9WEX4nZPQpSChVhr5YUqUeT6qhYr1L6PMHKqtRnepY2a8e1tqsDtWfr4V8KDGvJtydqvz4V68PMUyu9EWpez2.png


আমার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

1728830339945~3.jpg

আমি একজন বাংলাদেশের নাগরিক। আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি এবং আমার মাতৃভাষা বাংলা। আমি একজন ছাত্র, আমি আসন্ন এইচএসসি সমমান পরীক্ষা শেষ করে দিনাজপুর সরকারি কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছি। আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করি। আমি গত ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই। এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার খোড়াগাছ ইউনিয়নের তিন নং ওয়ার্ড।আমি ফটোগ্রাফী ও ভ্রমণ করতে অনেক ভালোবাসি।