স্বাস্থ্য খাতকে পঙ্গু করে, নেতারা চিকিৎসার জন্য চলে যায় বিদেশে।।
বাংলা ভাষার কমিউনিটি
হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো এবং সুস্থ আছেন।
স্বাস্থ্য খাত যেকোনো দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি খাত। মানুষের জীবন, সুস্থতা ও নিরাপত্তার সঙ্গে এই খাত সরাসরি সম্পর্কিত। কিন্তু দুঃখজনকভাবে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাত বহু বছর ধরে দুর্নীতি, অনিয়ম এবং অদক্ষ ব্যবস্থাপনার কারণে সমালোচনার মুখে রয়েছে। সম্প্রতি আলোচিত স্বাস্থ্য খাতের ঠিকাদারকে গ্রেপ্তারের ঘটনা আবারও এই বিষয়টিকে সামনে নিয়ে এসেছে। এই গ্রেপ্তারের মাধ্যমে মানুষের মনে এক ধরনের আশার আলো জাগলেও প্রশ্ন রয়ে গেছে, এতে কি সত্যিই স্বাস্থ্য খাত দুর্নীতিমুক্ত হবে?
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতির শিকড় অনেক গভীরে প্রোথিত। হাসপাতাল নির্মাণ থেকে শুরু করে ওষুধ সরবরাহ, যন্ত্রপাতি কেনা, এমনকি ছোটখাটো টেন্ডার পর্যন্ত, প্রায় প্রতিটি ধাপেই অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। ঠিকাদার মিঠুর মতো প্রভাবশালী ব্যক্তিরা দীর্ঘদিন ধরে সিন্ডিকেট তৈরি করে কোটি কোটি টাকা লুট করেছেন বলে অভিযোগ আছে। এক সময় তিনি এতটাই প্রভাবশালী হয়ে উঠেছিলেন যে অনেক ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তেও তার প্রভাব পড়ত।
করোনা মহামারির সময় স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি যেন নতুন মাত্রা পায়। নকল মাস্ক, নিম্নমানের পিপিই, ভুয়া টেস্ট সনদ সবকিছুই তখন আলোচনায় আসে। সাধারণ মানুষ যখন জীবন বাঁচাতে দিশেহারা, তখন কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ও প্রভাবশালী ঠিকাদার কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। এ সময় জনগণের আস্থা মারাত্মকভাবে কমে যায় এবং স্বাস্থ্য খাতের দুর্বলতা প্রকটভাবে প্রকাশ পায়।
সাম্প্রতিক সময়ে দুর্নীতি দমন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যখন দুর্নীতিবাজ কে গ্রেপ্তার করে, তখন সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। অনেকে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন যে অবশেষে বড় এক দুর্নীতিবাজ আইনের আওতায় এসেছে। আবার কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, এই গ্রেপ্তার কি শুধুই একটি ‘দেখানো’ পদক্ষেপ, নাকি সত্যিই এর মাধ্যমে দুর্নীতির শেকড় উপড়ে ফেলা হবে?
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি শুধু অর্থনৈতিক ক্ষতি করছে না, এর ভয়াবহ সামাজিক প্রভাবও রয়েছে। নিম্নমানের চিকিৎসা সেবা পেয়ে রোগীরা জীবন ঝুঁকিতে পড়ছে। ওষুধ ও যন্ত্রপাতির মানহীনতার কারণে চিকিৎসার কার্যকারিতা নষ্ট হচ্ছে।
জনগণের করের টাকা অপচয় হচ্ছে। সাধারণ মানুষের আস্থা ভেঙে যাচ্ছে, ফলে অনেকে বিদেশমুখী হচ্ছেন চিকিৎসার জন্য।
দুর্নীতি দমন শুধু একজনকে গ্রেপ্তার করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকলে এর কোনো স্থায়ী ফল আসবে না। এজন্য প্রয়োজন
স্বচ্ছ টেন্ডার প্রক্রিয়া: হাসপাতাল নির্মাণ ও যন্ত্রপাতি কেনার ক্ষেত্রে ডিজিটাল পদ্ধতিতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।
দুর্নীতিবাজদের কঠোর শাস্তি: প্রভাবশালী হোক বা সাধারণ কর্মচারী, দুর্নীতির প্রমাণ মিললে শাস্তি দিতে হবে।
সিভিল সোসাইটি ও মিডিয়ার ভূমিকা: দুর্নীতি চিহ্নিত ও প্রকাশ করার ক্ষেত্রে গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজকে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে।
জনগণের অংশগ্রহণ: স্বাস্থ্য বাজেটের ব্যবহার নিয়ে সাধারণ মানুষ ও পেশাজীবীদের মতামত গ্রহণ করা উচিত।
স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি শুধু অর্থ নয়, মানুষের জীবন নিয়েও খেলা করে। মিঠুর মতো কিছু লোককে গ্রেপ্তার করলেই এই সমস্যা সমাধান হবে না। প্রয়োজন একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা, রাজনৈতিক সদিচ্ছা, এবং কার্যকর বাস্তবায়ন। যদি সরকার সত্যিই দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়, তবে হয়তো একদিন বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাত মানুষের আস্থার জায়গা হয়ে উঠবে। অন্যথায়, এ খাত বারবার দুর্নীতির কষাঘাতে জর্জরিত হবে, আর সাধারণ মানুষ বঞ্চিত হবে তাদের প্রাপ্য সেবা থেকে।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server