স্বাস্থ্যসচেতনতার আলোচনায়: সকালের ব্যায়াম ও সময়মতো ডিনারের উপকারিতা।।
বাংলা ভাষার কমিউনিটি
হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো এবং সুস্থ আছেন।
আধুনিক ব্যস্ত জীবনে আমরা সবাই কোনো না কোনোভাবে শরীরের যত্ন নিতে চাই। কিন্তু সময়ের অভাবে ঠিক মতো পারি না। অফিস, পড়াশোনা, পরিবার, সব মিলিয়ে নিজেদের স্বাস্থ্যই যেন সবচেয়ে বেশি অবহেলিত থাকে। অথচ জীবন উপভোগ করার জন্য সবচেয়ে বড় সম্পদ হলো সুস্থ শরীর। তাই জীবনযাত্রার ছোটখাটো পরিবর্তনের মাধ্যমে অনেক বড় ইতিবাচক ফল পাওয়া সম্ভব। এর মধ্যে অন্যতম হলো নিয়মিত সকালের ব্যায়াম এবং সন্ধ্যার মধ্যে ডিনার সেরে ফেলা।
সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে ব্যায়াম করা শরীরের জন্য যেমন ভালো, মনের জন্যও তেমন উপকারী। সারা রাত বিশ্রাম নেওয়ার পর শরীরের মেটাবলিজম নতুনভাবে কাজ শুরু করে, আর সেই সময় ব্যায়াম করলে ফ্যাট বার্নিং আরও দ্রুত হয়। বিশেষ করে brisk walking, হালকা দৌড়, সাইক্লিং, স্কিপিং, পুশআপ, যোগব্যায়াম বা হাই ইন্টেনসিটি ইন্টারভ্যাল ট্রেনিং। শরীরের বাড়তি চর্বি কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
শুধু ফ্যাট কমানো নয়, সকালে ব্যায়াম করার মাধ্যমে সারাদিনের এনার্জি লেভেল বাড়ে। যারা নিয়মিত ব্যায়াম করেন, তারা লক্ষ্য করেন যে অফিস বা কাজের মধ্যে ক্লান্তি, বিরক্তি বা মনমরা ভাব তুলনামূলক কম থাকে। ব্যায়ামের সময় শরীর থেকে এন্ডরফিন নামক হরমোন নিঃসৃত হয়, যা মুড ভালো করে, মানসিক চাপ কমায় এবং দিনটিকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে। বলা যায়, সকালের ব্যায়াম শুধু শরীর নয়, মনকেও সুস্থ রাখে।
স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অভ্যাস হলো সময়মতো রাতের খাবার খাওয়া। আমাদের দেশে রাতের খাবার অনেক সময় দেরিতে হয়, কেউ কাজের চাপে, কেউ অভ্যাসবশত রাত ১০টার পরেও খেয়ে থাকেন। কিন্তু চিকিৎসকরা বলেন, দেরি করে ডিনার করলে হজমের সমস্যা, অ্যাসিডিটি, ঘুমের ব্যাঘাত ও ওজন বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।
সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৯টার মধ্যে হালকা কিন্তু পরিমাণে সঠিক খাবার খাওয়াই উত্তম। এতে খাবার সহজে হজম হয়, শরীরের বিপাকক্রিয়া সঠিকভাবে কাজ করে, ঘুম ভালো হয় এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। তাড়াতাড়ি ডিনার করলে রাতের বাকি সময় শরীরের হজম প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যায়, ফলে ঘুমের সময় পেটে অতিরিক্ত চাপ পড়ে না।
হজম ও ঘুমের মধ্যে একটি অদৃশ্য সম্পর্ক রয়েছে। যারা দেরি করে খেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘুমাতে যান, তারা বেশি সময় অস্থির ঘুম ও অস্বস্তি অনুভব করেন। অন্যদিকে, যারা সময়মতো হালকা ডিনার করেন, তাদের ঘুম গভীর হয় এবং পরের দিন সকালে উঠে শরীর বেশি চাঙ্গা থাকে। ফলে পরদিন ব্যায়াম করতেও শরীর স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে।
সকালের ব্যায়াম ও সময়মতো ডিনার এই দুই অভ্যাস আসলে একে অপরের পরিপূরক। ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীর ক্যালোরি খরচ করে, মাংসপেশি ও হরমোনের ভারসাম্য ঠিক রাখে। অন্যদিকে, সময়মতো ও সঠিক পরিমাণে রাতের খাবার শরীরকে হালকা রাখে, হজম প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করে এবং ঘুমের মান উন্নত করে। এই দুটি অভ্যাস একসঙ্গে মেনে চললে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং মানসিক সুস্থতাও উন্নত হয়।
ছোট পরিবর্তন দিয়েই শুরু করা যায়, প্রতিদিন সকালে অন্তত ১৫ মিনিট হাঁটা, আর রাতের খাবারের সময় ১৫–২০ মিনিট এগিয়ে আনা। ধীরে ধীরে সময় ও অভ্যাস তৈরি হলে শরীর ও মন দুটোই তার ইতিবাচক প্রভাব অনুভব করবে।
স্বাস্থ্য সচেতনতা কোনো বিলাসিতা নয়, এটি জীবনযাপনের প্রয়োজনীয় অংশ। আমরা যদি প্রতিদিনের ব্যস্ততার মাঝে সামান্য সময় বের করে সকালের ব্যায়াম করি এবং রাতের খাবার সময়মতো খেতে শিখি, তাহলে শরীর-মন দুটোই ভালো থাকবে। সুস্থ শরীরের জন্য কোনো শর্টকাট নেই, আছে শুধু সচেতন সিদ্ধান্ত আর ধৈর্য। আজ থেকেই চেষ্টা শুরু হোক, নিজের শরীরের প্রতি দায়িত্বশীল হওয়ার।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server