বন্ধুর সাথে একটি ঐতিহাসিক স্থান ভ্রমণ||বর্ধণকুঠি রাজবাড়ি
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগবাসী।আশা করি সবাই ভালো আছেন।আমিও অনেক ভাল আছি।আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব আমাদের শহরের অতীত ইতিহাস।
আমার বন্ধু বান্ধব প্রায় সবাই ঢাকামুখী।আমি একাই শহড়ের মাটি আকড়ে পড়ে আছি।জুনিয়র দের সাথেও মিশতে মন চায় না। তাই সারাদিন বাড়ি থেকে খুব একটা বেড়োই না।বেড়োলেও টিউশন সেরেই বাড়িতে ঢুকে পড়ি।
আজ হঠাৎ শিমুল ফোন দিয়ে বলল,"বের হ।আমি তোর বাড়ির সামনে।"আমি তো ভীষণ অবাক।কারন ওর থাকার কথা ময়মনসিংহ তে।আমি ওকে বললাম"আসার আগে তো বলে আসবি।"তখন ও বলল,"ভাবলাম তোকে সারপ্রাইজ দেই তাই বলি নাই।"আমি বললাম, "ভালই হল চল ঘুরে আসি।"
তখন ও বলল, "চল কলেজের দিকে যাই অনেক দিন যাওয়া হয়না।"আমিও রাজি হয়ে গেলাম।এখন আপনাদের সুবিধার জন্য বলে নেই আমাদের কলেজ টি একটু বাইরের দিকে।
গোবিন্দগঞ্জ সরকারি কলেজ আমাদের এলাকার একমাত্র সরকারি কলেজ।এটি গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার বর্ধণকুঠি তে অবস্থিত।কলেজের সামনে রয়েছে একটি বিরাট মাঠ। হাইস্কুল জীবনে এই মাঠ ছিল আমাদের একমাত্র খেলার জায়গা।কলেজের পাশেই বিখ্যাত সরোবরপুকুর।পুকুরটি প্রায় ৪বিঘা জমির উপর খনন করা।অপূর্ব সুন্দর পুকুড়ের চার পাশ।বিকেল বেলা বেশ হাওয়া দেয়।তাই অনেক লোকের ভীড় জমে এই সরোবরের পাড়ে।আমরাও কিছুক্ষণ সরোবরের পাড়ে বসে থাকলাম।এবং এর প্রাকৃতিক শোভা উপভোগ করলাম।এরপর রওনা দিলাম কলেজের দিকে।
কারন আমাদের কলেজের পেছনেই অযত্নে অবহেলায় পড়ে রয়েছে একসময়ের ক্ষমতাধর রাজবংশের বর্ধণ কুঠি রাজ প্রাসাদ।কালের বিবর্তনে প্রাসাদটির অবস্থা একদম করুন।ঘর-দুয়ার আলাদা করে চেনার কোন উপায় নেই।শুধু কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে এই একাকী একটি প্রাচীর।আজ আপনাদের সাথে এই রাজবাড়ির ইতিহাস শেয়ার করব।
বর্ধণকুঠি নামকরণঃ
বর্ধণকুঠি রাজবাড়ির ইতিহাস অনেক প্রাচীণ।এই জায়গার নামকরণ নিয়ে দুটি মতবাদ আছে।কোন কোন ঐতিহাসিক মনে করেন বর্ধণ নামের কোন রাজা এই রাজবাড়ির পত্তন ঘটান তাই এই জায়গার নাম বর্ধণকুঠি আবার কেউ মনে করেন বর্ধণ একটি রাজবংশের নাম।যেহেতু বর্ধণ রাজবংশ শাসন করত তাই এই এলাকার নাম হয় বর্ধণকুঠি।
রাজবাড়ির ইতিহাসঃ
বর্ধণকুঠি রাজবাড়ির ইতিহাস প্রায় চতুর্দশ শতক থেকে জানা যায়।চতুর্দশ শতকের শেষদিকে রাজা **রাজেন্দ্র নারায়ণ এখানকার শাসন কর্তা ছিলেন।রাজা **রাজেন্দ্র নারায়ণ এর পর ১৪৪ জন রাজা বর্ধণকুঠি শাসন করেন।বর্ধণকুঠির সর্বশেষ রাজা ছিলেন শৈলেন চন্দ্র। তিনি ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় ভারতে চলে যান।
বর্তমান অবস্থাঃ
বর্তমানে রাজবাড়ির অবস্থা অত্যন্ত করুন।এটি সংরক্ষণে প্রশাসনের কোন আগ্রহই নেই। আমারা বন্ধুরা মিলে কয়েকবার প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষনের চেষ্টা করেছিলাম।কিন্তু প্রশাসনের কোন আগ্রহই যেন নেই।এখনো সেই অযত্ন অবহেলায় পড়ে আছে।আসলে আমাদের নিজস্ব ঐতিহ্যের প্রতি আমাদের উৎসাহের অনেক ঘাটতি রয়েছে।নতুন প্রজন্মের অনেকে জানে না বর্ধণ কুঠি রাজবাড়ির ইতিহাস।আশা করি প্রশাসন গোবিন্দগঞ্জ এর এই ঐতিহাসিক নিদর্শন এর প্রতি দৃষ্টি দেবে এবং সংরক্ষণের ব্যবস্থা করবে।
ফটোগ্রাফার | বৃত্ত |
---|---|
ডিভাইস | পোকো এক্স২ |
লোকেশন | বর্ধণকুঠি |
অসাধারণ একটা জায়গা দেখালেন দাদা। যেকোনো পুরনো রাজবাড়ী আমার ভীষণ ভালো লাগে, যে কোন প্রাচীন স্থাপত্য আমার পছন্দের । অনেক ধন্যবাদ আপনাকে এমন একটি তাৎপর্যপূর্ণ পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
অনেক সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।একদিন সময় করে চলে আসেন।মহাস্থান ঘুরে আসা যাবে।
সত্যি খুব ভালো লেগেছে জায়গাটা আমার । সুযোগ হলে নিশ্চয়ই যাবো।
যায়গা টা বেশ সুন্দর তো। আশা করি প্রশাসনের লোকেরা শিগ্রই এটি খেয়াল নিবেন। ভালো একটি দিন কাটিয়েছেন।
হ্যা ভাইয়া।ধন্যবাদ আপনাকে।
জায়গাটা খুবই সুন্দর দেখাচ্ছে ।একদম প্রাকৃতিক পরিবেশে ভরপুর।। সবুজ প্রকৃতির মাঝে সময় কাটাতে এমনিতে ভালো লাগে ।।আর যদি ঐতিহাসিক স্থান হয় তাহলে তো কোন কথাই নেই।।
ধন্যবাদ ভাই সুন্দর মতামত এর জন্য।
এগুলো আমাদের দেশের ঐতিহ্য। এগুলোকে সংরক্ষণ করা জরুরি। না হলে কালের বিবর্তনে বর্ধনকুঠি রাজবাড়ীর মতো স্থাপত্য গুলো হারিয়ে যাবে। এবং পুকুর টা সত্যি অনেক বড়। আর বন্ধুদের থেকে এমন সারপ্রাইজ পেলে মন্দ হয় না কী বলেন ভাই।।
একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া।সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
পুরাতন স্থাপত্য বা তার ধ্বংসাবশেষ যা রয়েছে আমাদের বাংলাদেশ আমি মনে করি এগুলাকে সংরক্ষণ করা উচিত।। কেননা এগুলো আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্য ধারণ করে রয়েছে।। আপনি খুব সুন্দর বর্ণনা সহ খুব সুন্দর ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন খুবই ভালো লাগলো
সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ
বন্ধুদের সাথে আপনি ভালো সময় পার করেছেন এসব জায়গায় ঘুরতে আসলে খুবই ভালো লাগে। আর বন্ধুরা থাকলে তো কথাই নেই। দারুণ কিছু ফটোগ্রাফি করেছেন অনেক ধন্যবাদ আপনাকে এই পোস্ট টি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
অনেক ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য
এমন পুরাতন স্থাপনা দেখতে আমার অনেক ভালো লাগে আপনার পোস্টটি দেখে খুব ভালো লাগলো এবং ছবিতে খুব ভালোভাবে বুঝা যাচ্ছে এটা অনেক আগের স্থাপনা
হ্যা ভাইয়া অনেক পুরাতন ভবন।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্যের জন্য।