একদিনের ভ্রমণ: মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর মাজারে

in Incredible India14 days ago

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় বন্ধুরা,
আশা করি সবাই ভালো এবং সুস্থ আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আপনাদের মতো আমারও ঘুরতে খুব ভালো লাগে। নতুন কোনো জায়গা এক্সপ্লোর করতে পারলেই আমি ভীষণ আনন্দ পাই। আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব আমার সাম্প্রতিক ভ্রমণের একটি স্মরণীয় অভিজ্ঞতা—মজলুম জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর মাজার ভ্রমণ।

[ফোনে ধারণ করা আলোকচিত্র]


🚗 ভ্রমণের শুরু


আমি নরসিংদী থেকে টাঙ্গাইলে আমার এক বোনের বাসায় গিয়েছিলাম। সেখানে কয়েকদিন কাটানোর পর মনে হলো আশেপাশের কিছু ঐতিহাসিক জায়গা ঘুরে আসা যায়। তখনই ঠিক করলাম যে আমি ভাসানী সাহেবের মাজার জিয়ারত করতে যাব। ছোটবেলা থেকেই নাম শুনেছি—কিন্তু কখনো কাছ থেকে দেখা হয়নি।

মাজারে পৌঁছে আমার মনে হলো যেন আমি এক ভিন্ন আবহে প্রবেশ করেছি। চারপাশ শান্ত, নিরিবিলি পরিবেশ। মাজারটি ফুল, গাছপালা ও সবুজের মাঝে ঘেরা। সেখানে অনেক মানুষ এসেছিলেন—কেউ দোয়া করছেন, কেউ নিঃশব্দে দাঁড়িয়ে আছেন, আবার কেউবা ইতিহাসের মহান নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে দূর-দূরান্ত থেকে এসেছেন।

মাজারের সামনে দাঁড়িয়ে আমি এক ধরনের ভিন্ন অনুভূতি পেয়েছিলাম। মনে হলো সত্যিই একজন সাধারণ মানুষের নেতা, কৃষক-শ্রমিকের প্রকৃত বন্ধু এখানে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন।

[মাওলানা ভাসানীর বাসগৃহ]


[মাওলানা ভাসানীর চেয়ার]


[মাওলানা ভাসানীর বুকশেলফ]


📖 মাজার সম্পর্কে কিছু তথ্য

মাওলানা ভাসানীর মাজারটি টাঙ্গাইল জেলার সন্তোষে অবস্থিত। ১৯৭৬ সালের নভেম্বর মাসে মৃত্যুর পর তাঁর নিজের ইচ্ছা ও পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাঁকে এখানেই সমাহিত করা হয়।
তিনি জীবনের বড় একটা সময় সন্তোষেই কাটিয়েছিলেন এবং এখান থেকেই কৃষক-শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন পরিচালনা করেছিলেন।

আজও তাঁর স্মৃতি ধরে রাখতে মাজার প্রাঙ্গণে প্রতিবছর নানা কর্মসূচি পালন করা হয়। বিশেষ করে মৃত্যুবার্ষিকীতে হাজার হাজার মানুষ সমবেত হয়ে তাঁকে শ্রদ্ধা জানায়। মজলুম জননেতার নামে এখানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। ফলে এই স্থানটি কেবল একটি মাজার নয়, বরং ইতিহাস ও শিক্ষার মিলনস্থল।

মাজারে দাঁড়িয়ে আমার মনে হলো—মাওলানা ভাসানী সত্যিই ছিলেন এক সাধারণ মানুষের নেতা। ক্ষমতার কেন্দ্র থেকে দূরে, গ্রামীণ পরিবেশেই তিনি থাকতে পছন্দ করেছিলেন। আর তাই তাঁর সমাধিও রাখা হয়েছে সেই গ্রামীণ জনপদে, যাতে সাধারণ মানুষ সহজেই এসে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে পারে।

[মাওলানা ভাসানীর মাজার]


🙏 উপসংহার

এটি ছিল আমার মাওলানা ভাসানীর মাজার ভ্রমণের অভিজ্ঞতা। ইতিহাস, ধর্মীয় অনুভূতি আর শান্ত পরিবেশ—সব মিলিয়ে এই ভ্রমণ আমার মনে এক বিশেষ জায়গা দখল করে নিয়েছে।

এত বড় লেখাটি ধৈর্য ধরে পড়ার জন্য আমি আপনাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞ।
আশা করি আমার অভিজ্ঞতা আপনাদের ভালো লেগেছে। ইনশাআল্লাহ সামনে আরও নতুন ভ্রমণের অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করব।

সকলের প্রতি ভালোবাসা এবং সময় নিয়ে পড়ার জন্য কৃতজ্ঞতা। আমার ভালোবাসা নিবেন এবং ভুলক্রটি ক্ষমা করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিবেন।
আল্লাহ হাফেজ

আপনাদের সকলের প্রিয়,
@iam.riyan

Posted using SteemX

Sort:  
Loading...